পটুয়াখালীর গলাচিপা রামনাবাদ নদীর ভাঙনে বিলীন হতে বসেছে প্রখ্যাত সাংবাদিক ও মুক্তিযোদ্ধা আলতাফ মাহমুদের কবর। ভাঙন রোধে সাত বছরেও নেওয়া হয়নি সরকারি পদক্ষেপ। নদী থেকে কবরের দূরত্ব এখন মাত্র ১০ ফুট। এখনই ভাঙন নিয়ন্ত্রণ বা কবরটি স্থানান্তর করা না গেলে আলতাফ মাহমুদের শেষ চিহ্নটুকুও হারিয়ে যাওয়ার শঙ্কায় এলাকাবাসী ও স্থানীয় সাংবাদিকেরা।
ইতিমধ্যে বেশ কয়েকবার বন্যা নিয়ন্ত্রণ বেড়ি বাঁধ ভেঙে গেছে। ঝুঁকিতে রয়েছে উপজেলার ডাকুয়া ইউনিয়নের প্রখ্যাত সাংবাদিক আলতাফ মাহমুদের কবর, ফসলি জমি, সরকারি-বেসরকারি প্রতিষ্ঠান, মসজিদ, মন্দির, বাজারের শতাধিক দোকান ও বাড়ি ঘর। এর মাঝেও নদী শাসনের কোন পদক্ষেপ না নেওয়ায় ঘূর্ণিঝড় বা নিম্ন চাপের পূর্বাভাস এলেই নির্ঘুম রাত কাটায় এলাকাবাসী।
এরই মধ্যে নদীর ভাঙনে বাস্তুহারা হয়েছে শতাধিক পরিবার। এলাকাবাসী জানায়, গলাচিপা নদীর তীরে উপজেলার একটি জনগুরুত্বপূর্ণ ইউনিয়ন ডাকুয়ার তিনটি গ্রাম আটখালী, ডাকুয়া ও হোগলবুনিয়ায় রয়েছে ইউনিয়ন পরিষদ ভবনসহ প্রায় দুই শত কোটি টাকার সরকারি বেসরকারি স্থাপনা।
নদী শাসনের কোন ব্যবস্থা করা না হলে যেকোন সময় নদী গর্ভে চলে যাবে বাংলাদেশ ফেডারেল সাংবাদিক ইউনিয়নের সাবেক মহাসচিব প্রখ্যাত সাংবাদিক আলতাফ মাহমুদের কবরস্থান, ডাকুয়া ইউনিয়ন পরিষদ ভবন, জৈনপূরী পীর সাহেবের খানকা, আটখালী মাধ্যমিক বিদ্যালয়, আটখালী প্রাথমিক বিদ্যালয়, আটখালী কমিউনিটি ক্লিনিক, গলাচিপা-কলাগাছিয়া সংযোগ সড়কের একাংশ, গলাচিপা-চরচন্দ্রাইল সংযোগ সড়কের একাংশ। ৫টি মসজিদ, ২টি মন্দির, তেঁতুলতলা বাজার ছাড়াও ২০০ বছরের পূরনো জমিদার বাড়িসহ অসংখ্য বাড়ি ও ফসলি জমি।
প্রয়াত সাংবাদিক আলতাফ মাহমুদের ভাতিজা মো. নূর হোসেন খান (৬০) বলেন, ‘নদী যে ভাঙা ভাঙে, এহনই যদি সরকার ব্যবস্থা না নেয় চাচার (আলতাফ মাহমুদের) কবরের চিহ্নও খুঁইজা পামুনা। প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার কাছে আমরা এলাকাবাসী ভাঙন কবলিত এলাকায় গাইড ওয়াল করার জোর দাবি জানাই।’
গলাচিপা প্রেস ক্লাবের সাবেক সভাপতি প্রবীণ সাংবাদিক ও উপজেলা আওয়ামী লীগ সাধারণ সম্পাদক বীর মুক্তিযোদ্ধা গোলাম মোস্তফা টিটো বলেন, ‘সাংবাদিক আলতাফ মাহমুদ একজন গুণী সাংবাদিক ছিলেন। তিনি শুধু অত্র এলাকার নয় বাংলাদেশের গর্ব। আমাদের চোখের সামনে এভাবে অবহেলার কারণে তাঁর কবরস্থান নদীগর্ভে বিলীন হবে এটা দেশের জন্য লজ্জাজনক।’
গলাচিপা উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা মো. মহিউদ্দিন আল হেলাল বলেন, প্রয়াত সাংবাদিক আলতাফ মাহমুদের কবরস্থানকে রক্ষা করার জন্য সংশ্লিষ্টদের সঙ্গে আলাপ করে অতি দ্রæত প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।