বয়স্কজনিত অসুস্থতায় দশ বছর ধরে বিছানায় পড়ে আছে শতবর্ষী এক বৃদ্ধা। পূর্ণিমার রাতে ঘরের চালের ছিদ্র দিয়ে দেখতে পাই পরিপূর্ণ চাদঁ। চাদেঁর এ যৌবন ভরা রুপ দেখে নিজের যৌবন বয়সের কথা স্মৃতিপটে ভেসে ওঠে তার। ক্ষণিকের জন্য হারিয়ে যায় সুদূর অতীতের সেই ষোড়শী বয়সে। যৌবন ছিল তার পূর্ণিমার চাদেঁর মতোই পরিপূর্ণটায় ভরা।

এতক্ষণ যার রূপ বর্ণনায় মর্ত ছিলাম সেই বৃদ্ধার নাম পুবনী ত্রিপুরা। তিনি খাগড়াছড়ি সদর উপজেলা ২নং কমলছড়ি ইউনিয়নের ২নং ওয়ার্ডে খ্যাংদং পাড়ার বাসিন্দা। বয়স তার শতাধিক। দশ বছরের বেশি সময় ধরে বিছানায় পড়ে আছে সে। তার বসতঘরের দরজা জানালা চিহ্নও নাই। পূর্ণিমার রাতে চাদঁ দেখে খুশি হলেও বৃষ্টির দিনে বৃদ্ধার দুঃখের সীমা থাকে না। কারণ আকাশের যত বৃষ্টি চালের ছিদ্র দিয়ে গড়িয়ে পড়ে বুড়ির গায়ে। তখন থরথর করে কাঁপতে থাকে বুড়ি। ভিজে যায় বুড়ির বিছানা। সব সুখস্মৃতি ভুলে মরণ কামনা করে বুড়ি বিধাতার কাছে।

বুড়ির সত্তর বছরের বিধবা কন্যা নিবাউচু ত্রিপুরা তার একমাত্র অবলম্বন। বুড়ির বৃদ্ধা ভাতা আর মেয়ের বিধবা ভাতা এবং কখনো কখনো অন্যের জমিতে নিবাউচু মজুরীর সামান্য অর্থ তাদের বাঁচিয়ে রেখেছে। মা মেয়ের আহারেই সবটুকুই রোজগার শেষ হয়। তাই সামর্থ্য হয়ে ওঠে না ভাঙ্গা ঘর মেরামতের। বছরের পর বছর এই ভাঙ্গা ঘরেই জীবন কাটছে তাদের। তাইতো বুড়ির আকুতি মরার আগে প্রধানমন্ত্রী আশ্রায়ন প্রকল্পের একটি ঘর পাওয়ার। কারণ এতে তার মৃত্যু পর বিধবা মেয়ে নিবাউচু যেন ঝড় বাদলের হাত থেকে রক্ষা পায়।

স্বামী পরিত্যাক্তা নিবাউচু ত্রিপুরা জানান, সাংবাদিক দেব প্রসাদ ত্রিপুরা গত দুবছর যাবৎ আমাদের একটি সরকারি ঘর পাইয়ে দেওয়ার জন্য ঘুরাঘুরি করলেও এখনো সক্ষম হয়নি। কিন্তু তিনি থেমে নেই। চেষ্টা চালিয়ে যাচ্ছেন, এটুকুই আমাদের ভরসা।