রাজবাড়ীর গোয়ালন্দ উপজেলার ছোট ভাকলা, দেবগ্রাম, উজানচর ও দৌলতদিয়া ইউনিয়নের ফসলের মাঠের সরিষা ফুলের নয়নাভিরাম দৃশ্য পাল্টে দিয়েছে দৃশ্যপট। চরাঞ্চলের বিভিন্ন এলাকা মৌ মৌ গন্ধে চারিদিক মাতোয়ারা। নজর কাঁরছে সরিষার হলুদ ফুলের সমারোহ। শীতের শিশিরভেজা সকালে ঘন কুয়াশার চাদরে মোড়ানো মাঠ দেখে মন জুড়িয়ে যায়। গোয়ালন্দ উপজেলার প্রত্যন্ত এলাকা ঘুরে দেখা যায় এ মৌসুমে ব্যাপক সরিষার আবাদ করা হয়েছে। সরিষার সবুজ গাছের হলুদ ফুলগুলো শীতের সোনাঝরা রোদে ঝলমল করছে। এ যেন এক অপরুপ সৌন্দর্য্যরে দৃশ্য। দেখে যেন মনে হচ্ছে প্রকৃতি কন্যা সেজেছে গায়ে হলুদ বরণ সেজে। মৌমাছির গুণগুণ শব্দে ফুলের রেণু থেকে মধু সংগ্রহ আর প্রজাপতির এক ফুল থেকে আরেক ফুলে পদার্পণ এ অপরুপ প্রাকৃতিক দৃশ্য সত্যিই যেন মনোমুগ্ধকর এক মূহুর্ত। বিভিন্ন এলাকায় ঘুরে এমনি চিত্র দেখা যায়। উজানচর ইউনিয়নের চরমাহিদাপুর এলাকার কৃষক ছিদ্দিক মাতুব্বর বলেন, ধানসহ অন্যান্য খাদ্যশস্য উৎপাদন করতে যেমন পরিশ্রম হয় তেমনি খরচও হয় অনেক। কিন্তু বাজারে ন্যায্যমূল্য পাই না। তাই অল্প সময়ে স্বল্প খরচে ও পরিশ্রম কম হওয়ায় এ অঞ্চলের কৃষকরা সরিষা চাষেই বেশী আগ্রহী হয়ে উঠছে। কাজেই সরিষাসহ বিভিন্ন কৃষিপণ্যের ক্ষেত্রে সরকারি সাহায্য সহযোগিতা আরো বাড়ালে এখানকার কৃষকরা উপকৃত হতো। দেবগ্রামের কৃষক আমিনুল ইসলাম বলেন, সরিষা চাষে খরচ কম কিন্তু লাভটা অনেক বেশী। ক্ষেতে সার তেমন দিতে হয় না, পরিশ্রমও অনেক কম। ফলন ও লাভ বেশী হওয়ায় এ এলাকার কৃষক এবার অনেক বেশী সরিষার চাষ করেছে। আশা করছি এবারও ভাল ফলন ও দাম ভাল পাওয়া যাবে। গোয়ালন্দ উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা মো. রকিবুল ইসলাম সাংবাদিকদের জানান, এ বছর সরিষা আবাদের লক্ষ্যমাত্রা নির্ধারণ করা হয় ১হাজার ২শ ৭০ হেক্টর জমিতে। কিন্তু গত বছর ভালো ফলন ও দাম বেশী পাওয়ায় এবার এ অঞ্চলে কৃষকরা বারি-১৪, ১৭, ১৮ ও বিনা সরিষা-৪ এবং মাঘি সরিষা টরি-৭সহ নানা জাতের ১হাজার ৪শ ৬৫ হেক্টর জমিতে সরিষার আবাদ করেছে। এ অঞ্চলে প্রতিবিঘা জমিতে ৫মণ পর্যন্ত সরিষার ফলন হয়। অনুকুল আবহাওয়া থাকলে এবারও সরিষার বাম্পার ফলন হওয়ার সম্ভাবনা রয়েছে। আগামীতে এই অঞ্চলের ভোজ্যতেলের চাহিদা পূরণের জন্য সরিষার পাশাপাশি তিল, তিসিসহ অন্যান্য তৈলবীজ আবাদের জন্য কৃষকদের আগ্রহী করতে উদ্দ্যোগ নেওয়া হয়েছে বলে তিনি জানান।