একটি স্থায়ী সড়কের অভাবে নারায়ণগঞ্জের রূপগঞ্জ সদর ইউনিয়নের ৫ নম্বর ওয়ার্ডের মধুখালী গ্রামের ২০টি পরিবার চরম ভোগান্তিতে রয়েছে। নিজ জমিতে ঘরবাড়ি করে বসবাস করে আসলেও রাস্তার অভাব থাকায় ব্যক্তিমালিকানাধীন রাস্তা ব্যবহার করতে বাধ্য হচ্ছে তারা। তবে স্থানীয় প্রভাবশালীর বাগান বাড়ির ওই রাস্তায় স্থায়ী ফটক তৈরি করে চলাচল নিয়ন্ত্রিত করা হয়েছে।ভুক্তভোগী পরিবারের সদস্যরা বলছেন, ওই রাস্তায় দিনের বেলায় অনুমতি নিয়ে ব্যবহার করলেও সন্ধ্যা হলেই গেটে তালা ঝোলে। তখন কেয়ারটেকারকে অনুরোধ করে ডাকাডাকি করে কোনোমতে চলে রাতের যাতায়াত। তবে জরুরি প্রয়োজনে তারা স্বাধীনভাবে রাতে যাতায়াত করতে পারেন না।এ সংকট সমাধানে স্থানীয় ইউপি চেয়ারম্যান ও ঊর্ধ্বতন মহলকে জানালেও কোনো প্রকার সুরাহা পাননি ভুক্তভোগী বাসিন্দারা।
স্থানীয় বাসিন্দা আল আমিন বলেন, ‘আমরা পূর্বাচল নতুন শহর এলাকা থেকে অধিগ্রহণ-পরবর্তী ঘরবাড়ি ছেড়ে মধুখালীতে বসবাস শুরু করি। এ গ্রামের মোগলাম মৌজা অংশে পূর্ব থেকে বসবাস করা আটটি পরিবারসহ আরও ১২টি পরিবার নতুন করে দীর্ঘ ১৫ বছর ধরে বসবাস করে আসছে।‘তিনি বলেন, ‘এতদিন আমাদের চলাচলে কোনো সমস্যা না হলেও বর্তমানে স্থানীয় প্রভাবশালী সরকারি কর্মকর্তা গাজী মোজাম্মেল তার ব্যক্তিমালিকানাধীন রাস্তায় বাগানবাড়িতে অবাধ প্রবেশে নিয়ন্ত্রণ আনতে নিরাপত্তার অজুহাতে স্থায়ীভাবে ফটক তৈরি করে দিয়েছেন। ফলে তাদের অনুমতি ছাড়া এ সড়কে যাতায়াত সম্ভব হচ্ছে না। এসব সমস্যা সমাধানের জন্য স্থানীয় ইউপি চেয়ারম্যানের কাছে একাধিকবার আবেদন করেও কোনো সমাধান মেলেনি।’
মধুখালী এলাকার আরেক বাসিন্দা আশাদ মিয়া বলেন, ‘২০টি পরিবারকে প্রভাবশালী মহলের জিম্মিদশা থেকে বের করতে একটি স্থায়ী রাস্তার প্রয়োজন। আর ওই রাস্তা বাস্তবায়নের জন্য বসবাসকারীদের পূর্ব পাশে যথেষ্ট সুযোগ রয়েছে। তবে রহস্যজনক কারণে জনপ্রতিনিধিরা এ বিষয়ে কোনো পদক্ষেপ নিচ্ছেন না। এতে আমরা বন্দীদশায় রয়েছি।’তিনি জানান, ভুক্তভোগীদের মধ্যে রয়েছেন লোকমান হোসেন, জাকির, বেলায়েত, ইউনুছ, শামসুল, হুমায়ুন, রেজাউল, ময়না বেগম, আসাদ মিয়া, সাইফুল ইসলাম, সাইদুল ইসলাম, উকিল মিয়াসহ ২০টি পরিবারের প্রায় শতাধিক লোক।তবে মধুখালীর বাগানবাড়ির ম্যানেজার আশরাফুল ইসলাম দাবি করেন, তাদের ক্রয় করা জমিতে ব্যক্তিগত রাস্তায় ফটক করা হয়েছে। অভ্যন্তরে থাকা লোকজন তাদের প্রয়োজনমতো চলাচল করতে পারেন। তবে রাতের বেলায় নিরাপত্তার জন্য ফটক আটকে দেয়া হয়।
এ বিষয়ে রূপগঞ্জ ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান সালাহউদ্দিন ভুঁইয়া বলেন, আটক পরিবারের লোকজনের যাতায়াতের ব্যবস্থা করতে একটি রাস্তার ব্যবস্থা করে দেয়া হবে। তবে সময় লাগবে।রূপগঞ্জ উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) শাহ নুসরাত জাহান বলেন, ‘কোনো ব্যক্তি বা পরিবারকে বন্দী রাখার অধিকার কারোর নেই। বিষয়টি জানলাম, ঘটনা তদন্ত করে ওই পরিবারগুলোর জন্য স্থায়ী যাতায়াত সুবিধা নিশ্চিত করা হবে।’