কুষ্টিয়ায় জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের ভাস্কর্য ভাঙচুরের ঘটনায় গ্রেফতার দুই মাদরাসাছাত্র ও দুই শিক্ষককে কারাগারে পাঠানো হয়েছে।সোমবার (৭ ডিসেম্বর) দুপুর দেড়টায় কুষ্টিয়ার চিফ জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট আদালতের বিচারক রেজাউল করীমের এজলাসে চার আসামিকে হাজির করে পুলিশ। এ সময় পুলিশের পক্ষ থেকে রিমান্ড আবেদন করা হয়। আদালত শুনানির জন্য মঙ্গলবার (৮ ডিসেম্বর) দিন ধার্য করে আসামিদের কারাগারে পাঠানোর আদেশ দেন।মামলার তদন্তকারী কর্মকর্তা কুষ্টিয়া মডেল থানার পুলিশ পরিদর্শক (এসআই) নিশিকান্ত দাস জানান, ভাস্কর্য ভাঙচুরের ঘটনায় ১৯৭৪ সালের বিশেষ ক্ষমতা আইনের অধীন দায়ের করা মামলায় আসামিদের রিমান্ড আবেদন করা হয়েছে। এর মধ্যে দুই মাদরাসাছাত্রের ১০ দিন এবং শিক্ষকদের সাত দিন করে রিমান্ড আবেদন করা হয়।
গ্রেফতাররা হলেন- কুষ্টিয়া শহরের জুগিয়া পশ্চিমপাড়া ইবনে মাস্উদ (রা.) মাদরাসার হেফজ বিভাগের ছাত্র আবু বক্কর ওরফে মিঠুন (১৯) ও সবুজ ইসলাম ওরফে নাহিদ (২০) এবং শিক্ষক আল-আমিন (২৭) ও ইউসুফ আলী (২৬)।গত শুক্রবার (৪ ডিসেম্বর) কুষ্টিয়া শহরের পাঁচ রাস্তার মোড়ে রাতের আঁধারে জাতির জনক বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের নির্মাণাধীন ভাস্কর্য ভেঙে ফেলে দুর্বৃত্তরা। পরে ঘটনাস্থলে থাকা সিসিটিভির ফুটেজ সংগ্রহ করে পুলিশ। শনি ও রোববার পুলিশ অভিযান চালিয়ে কুষ্টিয়া শহরের জুগিয়া পশ্চিমপাড়া ইবনে মাস্উদ (রা.) মাদরাসার দুই ছাত্র ও দুই শিক্ষককে গ্রেফতার করে পুলিশ।বঙ্গবন্ধুর ভাস্কর্য নির্মাণ নিয়ে দেশব্যাপী ইসলামপন্থী বিভিন্ন সংগঠনের প্রতিবাদের মধ্যে এ ঘটনা নিয়ে কুষ্টিয়াসহ দেশব্যাপী তীব্র প্রতিক্রিয়া শুরু হয়েছে।
এদিকে গ্রেফতার দুই মাদরাসাছাত্র পুলিশকে জানিয়েছেন, ইসলামি বক্তা মাওলানা মুহাম্মদ মামুনুল হক ও ফয়জুল করিমের বয়ান শুনে উদ্বুদ্ধ হয়ে তারা বঙ্গবন্ধুর ভাস্কর্য ভাঙচুর করেন।অন্যদিকে ভাস্কর্যবিরোধী বক্তব্য দেয়ার অভিযোগে বাংলাদেশ খেলাফত মজলিসের নেতা মাওলানা মুহাম্মদ মামুনুল হক, হেফাজতে ইসলাম বাংলাদেশের আমির মোহাম্মদ জোনায়েদ ওরফে জুনায়েদ বাবুনগরী ও সৈয়দ ফয়জুল করীমের বিরুদ্ধে করা রাষ্ট্রদ্রোহের মামলাটি পুলিশ ব্যুরো অব ইনভেস্টিগেশনকে (পিবিআই) তদন্ত করে প্রতিবেদন দাখিলের নির্দেশ দিয়েছেন আদালত।সোমবার (৭ ডিসেম্বর) ঢাকার মুখ্য মহানগর হাকিম সত্যব্রত শিকদারের আদালতে এ মামলাটি করেন মুক্তিযুদ্ধ মঞ্চের কেন্দ্রীয় সভাপতি আমিনুল ইসলাম বুলবুল। আদালত বাদীর জবানবন্দি গ্রহণ করে পিবিআই ডিআইজিকে আগামী ৭ জানুয়ারির মধ্যে প্রতিবেদন দাখিলের নির্দেশ দেন।