পঞ্চগড় জেলার দেবীগঞ্জ উপজেলার বিভিন্ন হাঁট বাজারগুলোতে লাইসেন্সবিহীন অরক্ষিতভাবে অবাধে চলছে গ্যাস সিলিন্ডার বিক্রি। মাননির্ণয় ছাড়াই এসব সিলিন্ডার গ্রামীণ জনপদের মানুষ ব্যবহার করছে। কোনো প্রকার অনুমোদন ছাড়াই এ উপজেলার ১০টি ইউনিয়নের বিভিন্ন হাটবাজারে বিক্রি হচ্ছে এসব গ্যাস সিলিন্ডার। এসব গ্যাস সিলিন্ডার থেকে যে কোনো সময় বড় ধরনের দুর্ঘটনা ঘটার আশঙ্কা করছেন এলাকাবাসী। ফায়ার সার্ভিস কর্তৃক উপজেলার এসব গ্যাস সিলিন্ডার বিক্রয় প্রতিষ্ঠান মনিটরিং করার কথা থাকলেও তা করা হচ্ছে না। বিধি মোতাবেক ১০টির বেশি সিলেন্ডার মজুদ রেখে বিক্রির ক্ষেত্রে বিস্ফোরক অধিদফতরের সনদ নেয়া বাধ্যতামূলক। বিস্ফোরক আইন ১৮৮৪-এর অধীনে গ্যাস সিলিন্ডার বিধিমালা ২০০৪-এর ৬৯ ধারা অনুযায়ী লাইসেন্স ছাড়া অনধিক ১০টি গ্যাসপূর্ণ সিলেন্ডার মজুদ করা যাবে। তবে বিধির ৭০ ধারা অনুযায়ী এসব সিলেন্ডার মজুদ করার ক্ষেত্রে যথেষ্ট পরিমাণে অগ্নিনির্বাপক যন্ত্রপাতি এবং আগুন নিয়ন্ত্রক সরঞ্জাম মজুদ রাখতে হবে। সিলিন্ডার গ্যাস স্থাপনা প্রাঙ্গণে দিয়াশলাই বা আগুন লাগতে পারে এমন কোনো বস্তু বা সরঞ্জাম রাখা যাবে না। মজুদ করা স্থানের কাছাকাছি আলো বা তাপের উৎস থাকা যাবে না। এসব আইনের তোয়াক্কা না করে চা-দোকান থেকে আরম্ভ করে ভ্যারাইটিজ স্টোরেও পাওয়া যায় এ সিলিন্ডার গ্যাসের বোতল। সরেজমিনে গিয়ে দেখা যায়, সরকারি নীতিমালাকে তোয়াক্কা না করে গ্যাস সিলিন্ডার দেদার বিক্রি করা হচ্ছে। দোকানের সামনে এমনকি ফুটপাথে সিলিন্ডার ফেলে রেখে এ ব্যবসা নির্বিগ্নে পরিচালনা করছেন ব্যবসায়ীরা। মুদি দোকান, হার্ডওয়ারের দোকান, ফ্লেক্সিলোডের দোকান, মেশিনারি দোকান, সারের ডিলার এবং চা-দোকানেও পাওয়া যাচ্ছে এ সিলেন্ডার গ্যাস। অরক্ষিত অবস্থায় যত্রতত্র সিলিন্ডার ফেলে রেখে বিক্রির ফলে যে কোন মুহূর্তে ঘটতে পারে বড় ধরনের দুর্ঘটনা। এসব দোকানে ফায়ার সার্ভিসের অগ্নিনির্বাপক যন্ত্র রাখার কথা থাকলেও তা নেই অধিকাংশ দোকানে। আবার কোন কোন দোকানে অগ্নিনির্বাপক যন্ত্র থাকলেও তা অকেজো ও মেয়াদোত্তীর্ণ। বেশিরভাগ দোকানি ট্রেড লাইসেন্স দিয়ে ব্যবসা পরিচালনা করে আসছেন। উপজেলা মহিলা ভাইস চেয়ারম্যান রিতু আক্তার বলেন, গ্যাস সিলিন্ডার বিক্রয় করা কিছু নিয়ম রয়েছে। যে কোন দোকানদার ইচ্ছা করলেই গ্যাস সিলিন্ডার বিক্রয় করতে পারবে না। নিয়ম না মেনে যে সকল দোকান গ্যাস সিলিন্ডার বিক্রয় করছে তাদের বিরুদ্ধে প্রয়োজনীয় ব্যাবস্থা গ্রহন করা হবে। এ বিষয়ে দেবীগঞ্জ উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা প্রত্যয় হাসান বললে, যত্রতত্র দোকানে সনদ ছাড়া অবৈধভাবে যেসকল দোকান গ্যাস বিক্রি করছে সেগুলোকে আইনের আওতায় আনা হবে। শিগগিরই মোবাইল কোর্টের মাধ্যমে এসব দোকানির বিরুদ্ধে অভিযান পরিচালনা করে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেয়া হবে।