গাজীপুরে বাল্যবিবাহের প্রস্তুতিকালে কনেসহ তিন সন্তানের জনক এক বরকে সাজা দিয়েছে ভ্রাম্যমাণ আদালত। রোববার দুপুরে বরকে গাজীপুর কারাগারে এবং কনেকে কোনাবাড়ি দুঃস্থ ও কিশোরী উন্নয়ন কেন্দ্রে পাঠিয়েছে বলে জানিয়েছে পুলিশ। সাজাপ্রাপ্তরা হলেন-কালিয়াকৈর উপজেলার ফুলবাড়িয়া উত্তরপাড়া গ্রামের মোজাম্মেল হকের ছেলে তারেক মিয়া (২৪) এবং এ বছর এসএসসি পাশ করা কাঁচিঘাটা গ্রামের এক কিশোরী (১৬)। কালিয়াকৈর থানার ওসি মনোয়ার হোসেন জানান, আদালত দুই বছরের সাজা দিয়ে তারেক মিয়াকে কারাগারে এবং কনেকে কিশোরী উন্নয়ন কেন্দ্রে পাঠানোর নির্দেশ দেয়। উপজেলা সহকারী কমিশনার (ভূমি) আদনান চৌধুরী সাংবাদিকদের জানান, তারেক এর আগের তিনটি বিয়ে করেন। বিয়ের সময় ওই তিন কনেও অপ্রাপ্ত বয়স্ক ছিল। “আবারও এ রকম বাল্য বিবাহ ঘটানোর চেষ্টা করেছিল অভিযোগ পেয়ে ভ্রাম্যমাণ আদালত পরিচালনা করে তারেককে দুই বছর সশ্রম কারাদণ্ড প্রদান করা হয়েছে।” এছাড়া একাধিকবার আত্মহত্যার হুমকি দেওয়ায় কনের বাবা-মা মেয়েকে তাদের জিম্মায় নিতে চাননি। তাই তাকে কোনাবাড়ি দুঃস্থ ও কিশোরী উন্নয়ন কেন্দ্রে পাঠানো হয় বলে জানান তিনি। ফুলবাড়িয়া ইউপি চেয়ারম্যান আব্দুল হাকিম মিয়া জানান, তারেক মিয়া পেশায় ট্রাক চালক। বিভিন্ন সময়ে আরো তিনটি বাল্য বিবাহ করেছেন তারেক। তার তিন ছেলে-মেয়েও রয়েছে। “এদের মধ্যে এক স্ত্রী বিদেশে এবং আরেক স্ত্রী বাবার বাড়ি চলে গেছেন। “তারেক মিয়া মোবাইল ফোনে ফুসলিয়ে পাশের কাঁচিঘাটা গ্রামের এসএসসি পরীক্ষায় উত্তীর্ণ হওয়া এক মেয়ের সঙ্গে প্রেমের সম্পর্ক গড়ে তোলেন। এ নিয়ে একাধিকবার গ্রাম্য সালিশও হয়েছে। তারপরও তারা তাদের সম্পর্ক বজায় রেখেছে।” “গত বৃহস্পতিবার বিকালে মেয়েটি বিয়ের দাবিতে তারেকের বাড়িতে ওঠে। শুক্রবার স্থানীয় ইউপি সদস্য ছিদ্দিকুর রহমানসহ স্থানীয় মাতাব্বররা ওই বাড়িতে যান এবং তাদের বুঝিয়ে কিশোরীকে তার বাবার কাছে তুলে দেন। কিন্তু শনিবার সকালে ফের তারেকের বাড়িতে চলে যায় মেয়েটি।” এ সময় স্থানীয় কিছু লোক তাদের বিয়ের আয়োজন করছে খবর পেয়ে কালিয়াকৈর থানাধীন ফুলবাড়িয়া পুলিশ ক্যাম্পের পুলিশ বর-কনেকে প্রথমে আটক করে।