দুইদিন বন্ধ থাকার পর আজ শুক্রবার সকাল থেকে লক্ষ্মীপুর-ভোলা নৌ-রুটে ফেরী চলাচল শুরু হয়েছে। বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন বিআইডাব্লিউটিসির ব্যবস্থাপক মো. কাউছার। তিনি বলেন, দুইদিন ফেরী চলাচল বন্ধ থাকায় দুপাড়ে আটকা পড়েছে কয়েকশ পণ্যবাহী পরিবহন। এতে করে দুর্ভোগ সৃষ্টি হয়।
লক্ষ্মীপুর-ভোলা নৌরুটে ৩টি ফেরী চলাচল শুরু হলেও মেঘনায় তীব্র স্রোতের কারনে বিগ্নিত হচ্ছে ফেরী চলাচল। এতে করে সঠিক সময়ে গন্তব্যস্থানে পৌঁছতে সময় লাগে দ্বিগুন। তবে এ সমস্যা আরো কয়েকদিন থাকবে বলেও জানান তিনি।
এদিকে লক্ষ্মীপুরে অস্বাভাবিক জোয়ারে মেঘনা নদীর তীরবর্তী প্রায় ৪০টি গ্রাম প্লাবিত হয়েছে। বুধবার বিকেল থেকে লোকালয়ে পানি বাড়তে শুরু করে। পানি ঢুকে পানিবন্দী হয়ে পড়ছে দুই লক্ষাধিক মানুষ। এতে ভেসে গেছে শত শত পুকুরের মাছ। ডুবে গেছে কৃষকের ফসল। বন্ধ হয়ে পড়েছে লক্ষ্মীপুর-ভোলা নৌ-রুটে ফেরি চলাচল। গতকাল বৃহস্পতিবার সকাল থেকে কিছু কিছু এলাকায় পানি কমতে শুরু করে।
প্রসঙ্গত মেঘনার অস্বাভাবিক জোয়ারে বুধবার মজুচৌধুরীরহাট ফেরীঘাটের সংযোগ সড়কের কিছু অংশ নদীগর্ভে বিলীন হয়। এরপর অনিদিষ্ঠকালের জন্য ফেরী চলাচল বন্ধ করে দেয় কর্তৃপক্ষ। পানি উন্নয়ন বোর্ড ও স্থানীয় প্রশাসনের উদ্যোগে ভাঙ্গন কবলিত সড়কে জিও ব্যাগ ফেলে সড়কটি চলাচলের উপযোগী করা হয়।
অপরদিকে জোয়ারে কমলনগর উপজেলার এক খামারের ৬ হাজার মুরগি পানিতে ডুবে মারা গেছে। এতে কয়েক লাখ টাকা ক্ষতি হয়েছে বলে দাবি মুরগি খামারির। এ ছাড়া ফসলের ব্যাপক ক্ষতির আশঙ্কা করা হচ্ছে। রায়পুর উপজেলায় কয়েকটি ঘেরের প্রায় অর্ধকোটি টাকার মাছ জোয়ারে ভেসে গেছে। উপজেলার চর আবাবিলসহ কয়েকটি গ্রামের অন্তত ৩ হাজার পানের বরজ পানিতে তলিয়ে গেছে। পান নষ্ট হয়ে যাওয়ার শঙ্কা করছেন চাষিরা।
লক্ষ্মীপুর সদর উপজেলার চর রমণি মোহণ ইউপি চেয়ারম্যান আবু ইউসুফ ছৈয়াল জানান, মেঘনায় সব সময় জোয়ার হয়। কিন্তু এবারের মতো অস্বাভাবিক জোয়ার আর দেখিনি। আগে জোয়ারের পানিতে চরাঞ্চল প্লাবিত হতো। কিন্তু এবার হঠাৎ পানিতে গ্রাম ডুবে যায়। জোয়ারের পানিতে রোপণকৃত ধানের বীজ সব নষ্ট হয়ে গেছে।
জেলা এাণ ও পুনর্বাসন কর্মকর্তার কার্যালয় সূত্র জানায়, রায়পুর থেকে সদর ও কমলনগর হয়ে রামগতি পর্যন্ত ৬০ কিলোমিটার নদী এলাকার প্রতিটি গ্রাম প্লাবিত হয়েছে। জেলা সদরের চর রশণি মোহন ইউনিয়নের করাতিরহাট, চররমনি, ভূঁইয়ার হাট, চরমেঘা, রায়পুরের চর আবাবিল, খাসেরহাট, চরলক্ষ্মী, চরবংশী, চরভৈরবী, হাজীমারা, চর কাচিয়া, জালিয়ার চর, কুচিয়ামোড়া, চর ঘাশিয়া, টুনুর চর, কমলনগরের চরফলকন, চরকালকিনি, চরলরেন্স, নবীগঞ্জ ও রামগতির আলেকজান্ডারসহ প্রায় ৪০টি গ্রাম প্লাবিত হয়। নদীর তীর থেকে এসব এলাকার প্রায় ৪ কিলোমিটার পর্যন্ত জোয়ারের পানি ঢুকেছে।