সিরাজগঞ্জে যমুনা নদীতে জেগে ওঠা পলিমাটিযুক্ত চরে বিভিন্ন ফসলের ব্যাপক আবাদ হচ্ছে। স্বল্প খরচ ও কম পরিশ্রমে ফসলের আশাতীত ফলন হচ্ছে বলে জানায় স্থানীয় কৃষি বিভাগ ও কৃষকরা। গম, কাউন, ভুট্টা, বাদাম, মিষ্টি আলু, তিল, তিসি, লাউ, মরিচ, হলুদ, শসা, শিম, কুমড়া, বেগুন, ধান এবং শাক-সবজিসহ আবাদ করা হচ্ছে নানাবিধ ফসল। এতে স্বাবলম্বী হচ্ছেন চরের মানুষ। গত কয়েক বছরেও এমন আবাদ হয়নি বলে জানান স্থানীয়রা। জেলা কৃষি বিভাগ সূত্রে জানা গেছে, জেলার চরাঞ্চলে আবাদযোগ্য জমি রয়েছে ৪২ হাজার ৭০০ হেক্টর। এর মধ্যে ৩৮ হাজার ২৫০ হেক্টর জমিতে বিভিন্ন প্রকার ফসলের আবাদ হচ্ছে। এ বছর সিরাজগঞ্জ জেলায় ৫ হাজার ১৬০ হেক্টর জমিতে বাদাম, ৪ হাজার ২৬০ হেক্টর জমিতে মসুর ডাল, ১ হাজার ৬৩৬ হেক্টর জমিতে মরিচ, ১২ হাজার ৩৩৫ হেক্টর জমিতে ভুট্টা ও ১৩ হাজার ৩০৫ হেক্টর জমিতে সবজির আবাদ হচ্ছে। যার অধিকাংশই আবাদ করা হচ্ছে এসব চরে। মেছড়া চরের কৃষক সফর আলী বলেন, চারবার নদী ভাঙনে বাড়িঘর হারিয়ে স্ত্রী-সন্তান নিয়ে এখানে বসবাস করছি। তিন বিঘা জমিতে বিভিন্ন ফসলের আবাদ করে জীবিকা নির্বাহ করছি। এখন অনেকটা ভালো আছি। নাটুয়াপাড়া চরের কৃষক আয়নাল আলী বলেন, ২০ বছর আগেও চরে এই রকম আবাদ হয়নি। তখন আমরা চরবাসীরা অর্ধাহার-অনাহারে দিন কাটাতাম। এখন ভালো আছি। কৃষি বিভাগের সহায়তা ও পরামর্শে বাদাম, মরিচ, ধান, বিভিন্ন ধরনের সবজি চাষ করে অর্থনৈতিকভাবে স্বাবলম্বী হয়েছি। সিরাজগঞ্জ জেলা কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তরের উপ-পরিচালক বাবলু কুমার সূত্রধর বলেন, জেলার ৫টি উপজেলায় চরাঞ্চলে ৪০ হাজার হেক্টর জমিতে চাষাবাদ হয়। এরমধ্যে ৮০ ভাগ জমি নিম্নাঞ্চলে হওয়ায় সেখানে ভুট্টা, গম, বাদমসহ অন্যান্য ফসলের উৎপাদন আশাতীত। পলিমাটি জমায় জমিগুলো উর্বর।