ফরিদপুরের মধুখালী উপজেলায় মধুমতি নদীর ভাঙনে পাল্টে যাচ্ছে সালামতপুর বীরশ্রেষ্ঠ যাদুঘর এলাকা সহ বীরমুক্তিযোদ্ধা জমির উদ্দিন শেখ, মরহুম বীরমুক্তিযোদ্ধা ইয়াসিন শেখ এর বাড়ীর সামনে সালামতপুর ও দয়ারামপুর খেওয়াঘাটসহ আশ্রয়ন প্রকল্পের আশে পাশে, নাওড়াপাড়া, গন্ধখালী, ফুলবাড়ী কয়েকটি গ্রাম নদী গর্ভে বিলিন হতে চলেছে। এ বছরও নদী ভাঙ্গন অব্যাহত রয়েছে এবং প্রচুর আকারে ভাঙ্গন শুরু হয়েছে আবার নদীর পানি বৃদ্ধি ও টানের কারনে তবে সালামতপুর গ্রামবাসীর ধারনা বালি উত্তোলনের জন্য আরও ভাঙ্গন বেশী আকার ধারনা করছে। মধুমতি নদীর তীরবর্তী কামারখালী ইউনিয়নের গয়েশপুর, চরগয়েশপুর, চরপুখুরিয়া, বকসিপুর, চরকসুন্দি, দয়ারামপুর, সালামতপুর, নাওড়াপাড়া, কোমরপুর, গন্ধখালী, ফুলবাড়ী, রাজধরপুর, কামারখালী এলাকায় বসতবাড়ি, ফসলি জমি ও রাস্তা গড়াই ও মধুমতি নদীতে ভেঙে যাচ্ছে। ভাঙ্গন কবলিত গ্রামের বসবাসকারী লোকজন নদী ভাঙ্গনের ভয়ে তাদের বাড়ীঘর ভেঙ্গে অন্যত্র সরিয়ে নেওয়ার পরিকল্পনা করছে কোথায় নিবে অর্থ পাবে কয়, কে করবে জমি দান। পূর্ব সালামতপুর বীরশ্রেষ্ঠ মুন্সী আঃ রউফ বেসরকারী প্রাথমিক বিদ্যালয়ের একাংশ ইতিমধ্যে নদীতে ভেঙ্গে গেছে। বীরশ্রেষ্ঠের যাদুঘর সহ,বাড়ী এবং মসজিদ রক্ষার জন্য নদীতে বালুর বস্তা (জিও ব্যাগ) ফেলে ভাঙ্গন প্রতিরোধে ব্যবস্থা নেয়া হলেও সম্প্রতি নদী ভাঙ্গন তীব্র আকার ধারণ করায় ঝুকির মধ্যে রয়েছে ঐতিহ্যবাহী স্মৃতি যাদুঘরটি এমনটি দাবী করেন যাদুঘরের লাইব্রেরীয়ান মুন্সী সাঈদুর রহমান সহ এলাকাবাসী। একই রকম ঝুঁকির মধ্যে রয়েছে দয়ারামপুর হিন্দুপাড়ার ঘরবাড়ী সহ আশেপাশে বাড়ীঘর ও ফসলি জমি। নদী ভাঙ্গনের শিকার সালামতপুর গ্রামের মরহুম সফিউর রহমান বাশী মৃধার স্ত্রী নাজমুন্নাহার বলেন, গত বছর মধুমতি নদী ভেঙ্গে আমার বসতবাড়ী গাছগাছালী সহ আরো অনেকের ঘরবাড়ী ও ফসলি জমি নদীতে বিলিন হয়ে গেছে এবার আমার ঘরবাড়ী সহ অনেকের ঘরবাড়ী কোন সময় চলে যাবে। সালামতপুর গ্রামের মুন্সী সাঈদুর রহমান ও মিরাজ খাঁনসহ স্থায়ী বাসিন্দরা বলেন এই মুহুর্তে কামারখালী ইউনিয়নের ভাঙ্গন কবলিত গ্রামগুলো রক্ষার প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহন না করলে এবং সরকারী অনুমোদন বিহীন বালি উত্তোলন করলে এলাকার মানুষ নিঃস্ব হয়ে যাবে। কয়েক বছর যাবৎ মধুমতি নদী ভাঙ্গনের ফলে ইউনিয়নের বকসিপুর, আড়পাড়া, সরবরাজ, শ্রীমতকান্তি, গয়েশপুর গ্রামের বেশির ভাগ মানুষের জমিজমা নদীর মধ্যে চলে যাওয়ায় তারা অন্য গ্রাম ও অন্য জেলাধীন ঘরবাড়ি বানিয়ে বসবাস করছে। অন্য ইউনিয়নে বসবাস করায় তারা সেখানকার ভোটার হয়ে গেছে। এভাবে ইউনিয়নের কয়েকটি গ্রাম নদী ভাঙ্গনের ফলে ইউনিয়নের পুরানো মানচিত্র পাল্টে গেছে। এ বিষয়ে ফরিদপুর জেলার বোয়ালমারী পানি উন্নয়ন বোর্ডের উপ-বিভাগীয় প্রকৌশলী সন্তোষ কর্মকার জানান, জন-গুরুত্বপুর্ন স্থাপনা ঝুকির মধ্যে সেগুলো জরুরি ভিত্তিতে ব্যবস্থা নেওয়া হয়েছে আর বর্তমান পরিস্থিতি দেখার জন্য অফিসিয়াল লোক যাবে। তারপর নদী ভাঙ্গন রোধে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহন করা হবে।