বাংলাদেশ প্রেস কাউন্সিলের চেয়ারম্যান বিচারপতি মো. নিজামুল হক নাসিম বলেছেন, সাংবাদিকগণ যদি কোন অন্যায় করেন তার বিচারের ভার প্রেস কাউন্সিলের উপরে দেওয়া হয়েছে। চেয়ারম্যান এবং ২ জন সদস্য যারা সাংবাদিক তাদের নিয়ে ট্রাইব্যুনাল গঠন করা হয়। এটি এমন একটি ট্রাইব্যুনাল যেখানে সাংবাদিকের বিচার সাংবাদিকেরা করেন। যার অর্থ ন্যয় বিচার পাওয়ার অর্থে সাংবাদিকদের প্রতি সবচেয়ে আস্থাশীল এবং তারা দীর্ঘদিন ন্যয় বিচার দিয়ে আসছেন। তিনি ২০ আগষ্ট রবিবার সকালে ঠাকুরগাঁও সার্কিট হাউজ কনফারেন্স রুমে প্রেস কাউন্সিল আয়োজিত “প্রেস কাউন্সিল আইন, আচরণবিধি ও সাংবাদিকতার নীতিমালা” শীর্ষক সেমিনার ও মতবিনিময় সভায় প্রধান অতিথির বক্তব্যে উপরোক্ত কথা বলেন। তিনি বলেন, বাংলাদেশ প্রেস কাউন্সিলে একজন চেয়ারম্যান, ১৪ জন সদস্য। এদের মধ্যে ৯ জন সাংবাদিক, ৩ জন মালিকদের প্রতিনিধি, ৩ জন সম্পাদকের প্রতিনিধি, ৩ জন সাংবাদিক প্রতিনিধি। আর যে ৫ জন ২ জন পার্লামেন্ট মেম্বার, একজন ইউনিভার্সিটি গ্রান্ড কমিশনের একজন, বাংলা একাডেমীর একজন এবং বাংলাদেশ বার কাউন্সিলের একজন। এ নিয়ে প্রেস কাউন্সিল। আমার মতে শুধু নয়, সবাই এক বাক্যে স্বীকার করেন বাংলাদেশে যত অফিস আছে তার মধ্যে সবচেয়ে ক্ষমতাপ্রাপ্ত অফিস হলো বাংলাদেশ প্রেস কাউন্সিল। কত সম্মানিত লোকেরা জন্ম থেকে এখানে কাজ করে গেছেন এবং কাজ করে চলেছেন। এর বোর্ড দেখলেই বোঝা যায়। আইন সম্পর্কে বলতে গেলে আপনাদের জানাতে চাই আইন বদল হচ্ছে। যে আইন বঙ্গবন্ধু তৈরী করেছেন ৭৩ সালে, সে আইন আজ বদল করার কি প্রয়োজন হলো তার জবাব দিতে আমরা বাধ্য। তিনি আরও বলেন, এই আইনে বলা আছে যদি কোন সাংবাদিক তার লেখনী বা প্রকাশের মাধ্যমে কোন ভুল করেন, ভুল তথ্য প্রকাশ করেন, কেউ যদি তাতে কষ্ট পান তাহলে তিনি প্রেস কাউন্সিলে মামলা করতে পারেন, এবং তিনি করবেন। পরে ২ পক্ষের সাক্ষী প্রমান নেওয়া হবে তারপর রায় দেওয়া হয়। যদি দেখা যায় সাংবাদিক কোন ভুল করেননি তাহলে তিনি খালাস পেয়ে যাবেন। আর যদি দেখা যায় সাংবাদিক দোষী, নীতিমালা ভঙ্গ করেছেন তাহলে সাংবাদিকের শাস্তি হবে, শাস্তি কি, সর্বোচ্চ তিরস্কার। যিনি মামলা করেছেন তিনি মনে করতে পারেন ৩ বছর মামলা চালিয়ে সাংবাদিক তিরস্কার পেলেন। এতে করে কেউ মামলা করতে আগ্রহী হবে না। মামলা কমতে কমতে এমন অবস্থায় আসলো বছরে ১টি বা ২টি মামলা হচ্ছে। পরে প্রেস কাউন্সিলের নেতৃবৃন্দ মনে করলেন এটি পরিবর্তন করা দরকার। প্রেস কাউন্সিলকে ক্ষমতাবান করতে হবে। পরে ২০১৫ সালে সরকারের কাছে একটি প্রস্তাবনা পাঠানো হয়। সেখানে বলা হয় শুধু তিরস্কার নয়, জরিমানার বিধান চালু করতে হবে। সর্বোচ্চ ১০ লাখ টাকা জরিমানা বিধান করে আইন চালু করা হোক। আগে যে কোন সাংবাদিক বা মিডিয়া হাউজের উপরে কোন নির্দেশ দিলে সেটা তারা না মানলে কিছু করার ছিল না। পরে এ কারনে সুয়োমটো পাওয়ার চালু করার কথা জানানো হয়। পরে পক্ষ বিপক্ষে কথা চলতে থাকে। বাংলাদেশ প্রেস কাউন্সিলের আয়োজনে ও ঠাকুরগাঁও জেলা প্রশাসনের সহযোগিতায় মতবিনিময় সভায় অতিরিক্ত জেলা ম্যাজিস্ট্রেট রামকৃষ্ণ বর্মনের সভাপতিত্বে বক্তব্য দেন প্রধান অতিথি বাংলাদেশ প্রেস কাউন্সিলের চেয়ারম্যান বিচারপতি মো. নিজামুল হক নাসিম, আলোচক বাংলাদেশ প্রেস কাউন্সিলের সচিব শ্যামল চন্দ্র কর্মকার, বিশেষ অতিথি অতিরিক্ত পুলিশ সুপার (প্রশাসন ও অর্থ) লিজা বেগম, সুপারিনটেনডেন্ট মো: সাখাওয়াত হোসেন প্রমুখ। মত বিনিময় সভায় জেলার বিভিন্ন প্রিন্ট ও ইলেকট্রনিক মিডিয়ার সাংবাদিকবৃন্দ অংশ নেন। সেখানে বাংলাদেশ প্রেস কাউন্সিল আইন-১৯৭৪, আচরণবিধি এবং সাংবাদিকতার নীতিমালা সম্পর্কিত বিভিন্ন বিষয়ে আলোচনা করা হয়।