‘চিংড়ি সম্পদ উন্নয়নে ক্লাস্টার চিংড়ি চাষ পদ্ধতির-একটি নতুন উদ্ভাবন’ শীর্ষক বিশেষ কর্মশালা বৃহস্পতিবার সকালে খুলনার গল্লামারী মৎস্য বীজ উৎপাদন খামার সম্মেলনকক্ষে অনুষ্ঠিত হয়। উক্ত কর্মশালায় প্রধান অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন মৎস্য ও প্রাণিসম্পদ মন্ত্রণালয়ের সচিব ড. নাহিদ রশীদ। এ সময়ে প্রধান অতিথির বক্তৃতায় সচিব বলেন, পুষ্টি, কর্মসংস্থান এবং বৈদেশিক মুদ্রা অর্জনে মৎস্য সেক্টর গুরুত্বপূর্ণ অবদান রেখে চলেছে। সরকার এই সেক্টরের প্রতি নজর দেওয়ার ফলে গত সাত বছরে মৎস্যচাষি ও মৎস্যজীবীদের আয় ৩০ ভাগ বৃদ্ধি পেয়েছে। পাশাপাশি ৬ লক্ষেরও বেশি মানুষের কর্মসংস্থানের সুযোগ সৃষ্টি হয়েছে যেটি একটি নজিরবিহীন দৃষ্টান্ত। তিনি আরও বলেন, মাছ অর্থকরী ফসল। চিংড়ি রপ্তানি করে দেশের অর্থনীতিকে আরও মজবুত করা প্রয়োজন । সেক্ষেত্রে মানসম্মত পোনা উৎপাদনের কোন বিকল্প নেই। ক্লাস্টার পদ্ধতিতে চিংড়ি চাষ করলে চাষিরা বেশি লাভবান হবে এবং চিংড়িসহ সকল মাছে পুশ করা থেকে বিরত থাকতে হবে, কারণ এর সাথে দেশের স্বার্থ জড়িত রয়েছে। উক্ত কর্মশালায় মৎস্য অধিদপ্তরের মহাপরিচালক খঃ মাহবুবুল হকের সভাপতিত্বে বিশেষ অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন মৎস্য ও প্রাণিসম্পদ মন্ত্রণালয়ের অতিরিক্ত সচিব (প্রশাসন) নৃপেন্দ্র চন্দ্র দেবনাথ এবং খুলনার অতিরিক্ত জেলা প্রশাসক (সার্বিক) পুলক কুমার মন্ডল। এ সময়ে স্বাগত বক্তব্য রাখেন খুলনা মৎস্য অধিদপ্তরের বিভাগীয় উপপরিচালক মোঃ জাহাঙ্গীর আলম। মূলপ্রবন্ধ উপস্থাপন করেন খুলনা সাসটেইনেবল কোস্টাল এ্যান্ড মেরিন ফিশারিজ প্রকল্পের উপপ্রকল্প পরিচালক সরোজ কুমার মিস্ত্রী। অনুষ্ঠানে চিংড়ি চাষি মোঃ আবুল হোসেন, ক্লাস্টার চাষি এম এম আবু জাফর ও রবীন্দ্রনাথ সরকারও উক্ত কর্মশালায় বক্তব্য রাখেন। সাসটেইনেবল কোস্টাল এ্যান্ড মেরিন ফিশারিজ প্রজেক্ট এই কর্মশালার আয়োজন করে। উক্ত কর্মশালায় কর্মশালায় জানানো হয়, ক্লাস্টার পদ্ধতিতে চিংড়ি চাষের সুবিধাসমূহ নিরাপদ চিংড়ি উৎপাদন বৃদ্ধি, চিংড়িচাষে পানির উৎস ও বর্জ্য ব্যবস্থাপনা নিশ্চিতকরণ সহজতর সাশ্রয়ী, কারিগরি সহায়তা প্রাপ্তি অনেক সহজ। জলবায়ু পরিবর্তন সহনশীল প্রযুক্তি উদ্ভাবন ও বাস্তবায়নের মাধ্যমে ঝুঁকি হ্রাস করা, জৈব নিরাপত্তা প্রতিপালনের মাধ্যমে রোগবালাই প্রতিরোধ করে উৎপাদন বৃদ্ধি করা, সম্মিলিতভাবে গুণগত, মানসম্পন্ন উৎপাদন সামগ্রী সংগ্রহ করা এবং উৎপাদন খরচ কমানো, উৎপাদিত পণ্যের গুণমান নিশ্চিতকরণ সহজতর, উৎপাদিত পণ্য বাজারজাতকরণে অধিক সুবিধার পাশাপাশি যথার্থ মূল্য প্রাপ্তি নিশ্চিত, ক্লাস্টার ফানির্ং এর আওতায় সংগঠিত চাষি দলের আর্থিক প্রতিষ্ঠান থেকে ঋণ পাওয়া সহজ, ক্লাস্টারভিক্তিক সার্টিফিকেশনের যোগ্যতা অর্জনের মাধ্যমে পণ্যের বর্ধিত মূল্য নিশ্চিত করণ, সফল চাষি হিসেবে নিজেদের দক্ষতা ও কর্মক্ষমতা অর্জন করা ও ই-ট্রেসিবিলিটি বাস্তবায়ন করা। উক্ত বিশেষ কর্মশালায় খুলনা বিভাগের ৪টি জেলার জেলা মৎস্য কর্মকর্তা, বিভিন্ন উপজেলার মৎস্য কর্মকর্তা, মৎস্য দপ্তরের সংশ্লিষ্ট কর্মকর্তা, চিংড়ি ক্লাস্টার চাষি, হ্যাচারি প্রতিনিধি এবং চিংড়িচাষের সাথে জড়িত সংশ্লিষ্টব্যক্তিরা এ সময়ে উপস্থিত ছিলেন।