সিলেটের দক্ষিণ সুরমার শিববাড়ি এলাকার আতিয়া মহলে জঙ্গিবিরোধী অভিযানের ঘটনায় সন্ত্রাসবিরোধী আইনে হওয়া মামলা থেকে ৩ আসামিকে বেকসুর খালাস দিয়েছেন আদালত। এর আগে গত ১৪ মার্চ আদালতে যুক্তিতর্ক উপস্থাপন শেষ হয়। বুধবার (৫ মার্চ) দুপুরে সিলেটের সন্ত্রাসবিরোধী বিশেষ ট্রাইব্যুনালের বিচারক মুহাম্মদ নূরুল আমীন বিপ্লবের আদালতে এই রায় ঘোষণার কথা রয়েছে। আলোচিত এই মামলাটি ৫ বছর পর ১১ মাস পর এ মামলার রায় প্রদান করা হলো। আদালত রায়ের পর্যবেক্ষণে বলেছেন, রাষ্ট্রপক্ষ আসামীদের বিরুদ্ধে সন্ত্রাস বিরোধী আইনের ধারায় অভিযোগ পর্যাপ্ত ও বিশ্বাসযোগ্য সাক্ষ্য দ্বারা সন্দেহাতীতভাবে প্রমাণে ব্যর্থ হওয়ায় আসামীরা খালাস পাওয়ার যোগ্য। খালাসপ্রাপ্তরা হচ্ছেন, বান্দরবান জেলার নাইক্ষ্যংছড়ি থানার বাইশারীর জহুরুল হক ওরফে জসিম (২৯), মো. হাসান (২৮) ও জহরুল হক ওরফে জসিমের স্ত্রী আর্জিনা ওরফে রাজিয়া সুলতানা (২১) ৩ জনকে খালাস প্রদান করা হয়েছে। বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন সিলেটের সন্ত্রাসবিরোধী আদালতের বিশেষ সরকারি কৌঁসুলি মুমিনুর রহমান। তিনি বলেন, গত ২৭ ফেব্রুয়ারি সাফাই সাক্ষ্যের সময় শেষ হয়। পরে ১৪ মার্চ যুক্তিতর্ক উপস্থাপন শেষে রায়ের তারিখ নির্ধারণ করেন বিচারক। মামলায় ৩৩ সাক্ষীর মধ্যে ২১ জন সাক্ষী সাক্ষ্য দিয়েছেন। আলোচিত এ মামলা থেকে তিনজনকে খালাস দিয়েছেন আদালত। মামলা সূত্রে জানা গেছে, ২০১৭ সালের ২৩ মার্চ দিবাগত রাত থেকে আতিয়া মহলে জঙ্গিবিরোধী অভিযান শুরু হয়। অভিযানে র্যাব, পুলিশ, পুলিশের বিশেষ ক্রাইম রেসপন্স টিম (সিআরটি), সেনাবাহিনীর কমান্ডো দল অংশ নিয়েছিল। সেনাবাহিনীর পরিচালিত ‘অপারেশন টোয়াইলাইট’ শেষে ভবনের ভেতর থেকে এক নারীসহ চারজনের মরদেহ উদ্ধার করা হয়। অপারেশন শেষ হওয়ার আগে অভিযান চলাকালে আতিয়া মহল থেকে কিছু দূরে বোমা বিস্ফোরণের ঘটনা ঘটে। এতে র্যাবের গোয়েন্দা বিভাগের তৎকালীন প্রধান লেফটেন্যান্ট কর্নেল আবুল কালাম আজাদ, দুই পুলিশ সদস্যসহ সাতজন নিহত হয়েছিলেন। আতিয়া মহলে জঙ্গিবিরোধী অভিযান শেষে তিনটি মামলা হয়ছিল। মামলার প্রথম দিকে পুলিশ তদন্ত করলেও পরে পুলিশ ব্যুরো অব ইনভেস্টিগেশন (পিবিআই) তদন্তভার নেয়। ২০১৯ সালের ৭ সেপ্টেম্বর সন্ত্রাসবিরোধী আইনে দায়েরকৃত মামলার অভিযোগপত্র আদালতে দাখিল করে পিবিআই। অভিযোগপত্রে তিনজনকে অভিযুক্ত করা হয়। পরে ওই বছরই চট্টগ্রামের সীতাকুণ্ডে পৃথক জঙ্গিবিরোধী অভিযানে জহুরুল ও তার স্ত্রী আর্জিনা এবং কুমিল্লার চান্দিনা থেকে মো. হাসানকে গ্রেফতার করা হয়। পরে ২০১৯ সালের জানুয়ারিতে তাদেরকে আতিয়া মহলের মামলায় গ্রেফতার দেখানো হয়। অন্যদিকে বোমা বিস্ফোরণ ও হত্যার ঘটনায় হওয়া দুটি মামলায় ২০১৯ সালের ১৪ জুলাই আদালতে চূড়ান্ত প্রতিবেদন দাখিল করে পিবিআই। প্রতিবেদনে মামলা নিষ্পত্তির আবেদন করা হয়েছিল।