মুক্তিযোদ্ধা হিসাবে নিজেদের নাম অন্তর্ভুক্তির দাবি জানিয়ে কুষ্টিয়ার দৌলতপুরে বাদপাড়া মুক্তিযোদ্ধারা মানববন্ধন ও সমাবেশ করেছেন। বাদপড়া মুক্তিযোদ্ধা বাস্তবায়ন কমিটির ব্যানারে বুধবার বেলা ১১ টায় দৌলতপুর উপজেলা পরিষদের সামনের সড়কে ঘন্টা ব্যাপী অনুষ্ঠিত এ মানববন্ধন ও সমাবেশে প্রায় দেড় শতাধিক বাদপাড়া মুক্তিযোদ্ধাগণ অংশগ্রহণ করেন। বাদপড়া মুক্তিযোদ্ধা বাস্তবায়ন কমিটির সভাপতি মতিউল আলম বাচ্চুর সভাপতিত্বে মানববন্ধন পরবর্তী সমাবেশে অন্যান্যের মধ্যে বাদপাড়া মুক্তিযোদ্ধা বাস্তবায়ন কমিটির সাধারণ সম্পাদক রেজাউল হক, শাজাহান আলী, আলী হোসেন প্রমুখ বক্তব্য রাখেন। সভায় বক্তারা বলেন, আমরা ১৯৭১ সালে বঙ্গবন্ধুর ডাকে সাড়া দিয়ে স্বাধীনতা যুদ্ধে অংশগ্রহণ করার জন্য ভারতের নদীয়া জেলার শিকারপুর রিসিপশন ক্যাম্পে ভর্তি হই। বেশ কয়েকদিন সেখানে কাটানোর পর রিক্রুটিং করে জমশেরপুর ইয়ুথ ক্যাম্পে নিয়ে যাওয়া হয় এবং সেখানে আমরা তিন মাস কয়েক দিন ট্রেনিং করি। আমাদের বেসিক ট্রেনিং শেষ হওয়ার শেষ দিকে দেশ স্বাধীন হয়। ক্যাম্প প্রশাসন নিজ মাতৃভূমি বাংলাদেশে ফিরে আসার জন্য আমাদের প্রত্যেককে একটি করে সনদপত্র প্রদান করেন। যারা উচ্চতর প্রশিক্ষণের জন্য বিহার বীরভূম ও অন্যান্য ক্যাম্পে ছিল তারা ও আমরা একই সঙ্গে দেশে ফিরে আসি। তৎকালীন থানা সার্কেল অফিসার পরপর দুই মাস আমাদের সম্মানী ভাতাও প্রদান করেন। পরবর্তীতে যারা উচ্চতর প্রশিক্ষণরত অবস্থা থেকে ফিরে আসে তাদের মুক্তিযোদ্ধা হিসাবে গেজেটভুক্ত করা হলেও আমাদের তা করা হয়নি। আমাদের মুক্তিযোদ্ধা হিসেবে স্বীকৃতি প্রদানের জন্য ২০১৪ সালে অনলাইনে আবেদন করার জন্য প্রজ্ঞাপন জারি করা হয়। কিন্তু জামুকার সিদ্ধান্ত উপেক্ষা করে ২০১৭ সালে যাচাই-বাছাই কমিটি গঠন করে এক প্রহসনের যাচাই-বাছাই হয় এবং আমরা মুক্তিযুদ্ধে কোন অবদান রাখেনি এই মর্মে তথ্য প্রেরণ করা হয়। সমাবেশে থেকে বাদপড়া মুক্তিযোদ্ধাগণ তৎকালীন ইয়ুথ ক্যাম্পের তালিকা এবং মিলিশিয়া ক্যাম্পের তালিকা অনুযায়ী মুক্তিযোদ্ধা হিসেবে তাদের তালিকাভুক্ত করার জন্য বর্তমান প্রধানমন্ত্রী বঙ্গবন্ধু কন্যা শেখ হাসিনার সুদৃষ্টি কামনা করেন। মানববন্ধন ও সমাবেশের আগে উপজেলা পরিষদ বাজার এলাকায় দাবি আদায়ে বাদপাড়া মুক্তিযোদ্ধা বাস্তবায়ন কমিটির পক্ষ থেকে এক সংবাদ সম্মেলনের আয়োজন করা হয়। সংবাদ সম্মেলনে মতিউল আলম বাচ্চু বলেন, মিলিশিয়া ক্যাম্পে উপস্থিত হওয়ার পর অস্ত্র জমা হয়, সেখানে একটা সনদ দেয়া হয়, আতাউল গনী ওসমানী সাক্ষরিত সনদ, সেটা আমাদের কাছে আছে। আমাদের দাবি আমাদের তালিকা আছে মিলিশিয়া ক্যাম্পে, সেটা অনুযায়ী স্বীকৃতি দেয়া হোক। রেজাউল হক বলেন, মুক্তিযুদ্ধে অংশগ্রহণকারী অন্তত ৪শ’ মানুষ স্বীকৃতির আশায় আজও প্রহর গুনছে। ওমর আলী খান বলেন, বঙ্গবন্ধুর ডাকে সাড়া দিয়ে আমরা দেশের স্বাধীনতা সংগ্রামে অংশগ্রহণের জন্য পার্শ্ববর্তী দেশ ভারতের শিকারপুরে যায়, সেখানে রিসিপশন ক্যাম্পে নিবন্ধন করা হয়, বেসিক ট্রেনিং শেষে জমশেদপুর ক্যাম্পে পুনরায় ট্রেনিংয়ে পাঠানো হয়, আমি ছিলাম প্লাটুন কমান্ডার। অথচ, আজ স্বীকৃতির জন্য দ্বারে দ্বারে ঘুরছি।