একথা সত্যি যে, বর্তমান ব্যস্ত সময়ে রাতে ঘুমাতে যেতে অনেকটাই দেরি হয়ে যায়। যার ফলস্বরূপ সকালে আর ঘুম ভাঙতে চায় না যেন। এদিকে দিনের শুরুটা অলসতা দিয়ে শুরু হলে পুরো দিনেই তার প্রভাব পড়ে। অবশ্য এর জন্য অগোছালো জীবনযাপন, কর্মজীবনের বিভিন্ন শিফট, রাত জেগে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমগুলোতে সক্রিয় থাকা- এসব কারণ অনেকটাই দায়ী।
দেরিতে ঘুমাতে যাওয়া এবং দেরিতে ওঠার অভ্যাস আমাদের জন্য বড় ক্ষতির কারণ হয়ে দাঁড়াচ্ছে। বিশেষজ্ঞরা জানাচ্ছেন, এই অভ্যাসের কারণে বাড়ে অকালে মৃত্যুর ঝুঁকি। ক্রোনোবায়োলজি ইন্টারন্যাশনাল এর জার্নালে প্রকাশিত একটি গবেষণাপত্র থেকে জানা যায়, যেসব ব্যক্তি নিয়মিত সকালে ঘুম থেকে ওঠেন তাদের গড় আয়ু দেরি করে ওঠা ব্যক্তিদের থেকে সাড়ে ছয় বছর বেশি।
গবেষণা বলছে, যারা দেরি করে ঘুম থেকে ওঠেন বা রাতে বেশি জেগে থাকেন তাদের ভেতরে ৯০ শতাংশ মানুষ মানসিক ব্যাধির শিকার হন। ৩০ শতাংশ মানুষ ডায়াবেটিস, বিভিন্ন স্নায়বিক সমস্যা ও অন্ত্রের রোগে আক্রান্ত হন। সুস্থ থাকতে হলে এই অভ্যাস বাদ দিতে হবে। বোল্ডস্কাই প্রকাশ করেছে সকালে দ্রুত ঘুম থেকে ওঠার কিছু উপায়।
* প্রথমেই একটি ‘ডেইলি রুটিন’ তৈরি করুন। কোন কাজে কতটা সময় প্রয়োজন, তাও নির্দিষ্ট করুন। রুটিন অনুযায়ী সারাদিন কাটান। রুটিনে অবশ্যই রাতে ঘুমের সময়টা ৭-৮ ঘণ্টা রাখবেন।
* সকালে ঘুম থেকে ওঠার সময় নির্দিষ্ট করুন। একেকদিন একেক সময়ে উঠবেন না। এমনকী ছুটির দিনেও একইসময়ে ঘুম থেকে উঠন। ছুটি বলে অলসতা করবেন না। ঘুমাতে যাওয়া এবং ঘুমের সময় নির্দিষ্ট থাকলে শরীরের ছন্দও ঠিক থাকবে।
* ঘর যেন স্যাঁতস্যাঁতে না থাকে। আলো-বাতাস চলাচলের পর্যাপ্ত ব্যবস্থা রাখুন। ঘর অন্ধকার করেও রাখবেন না। আলো থাকলে ঘুম ভাঙবে সহজেই।
* ঘুমানোর সময় মোবাইল ঘাঁটাঘাঁটির অভ্যাস থাকলে তা বাদ দিন। অন্যান্য গ্যাজেটও দূরে রাখুন। এগুলো আপনার ঘুম কেড়ে নিতে পারে।
* রাত্রে ঘুমোতে যাওয়ার অন্তত এক ঘণ্টা আগে রাতের খাবার খান। রাতের বেলা ভারী খাবার এড়িয়ে চলুন। খাবার পরপরই শুতে চলে যাবেন না। কিছুক্ষণ হাঁটাহাঁটি করুন। এতে হজমে সুবিধা হবে। হজম প্রক্রিয়া স্বাভাবিক থাকলে ঘুমে ব্যাঘ্যাত ঘটবে না।
* সকালে ঘুম ভাঙার পরপরই উঠে পড়ুন। দিনের শুরুটা সুন্দর করতে হালকা শরীরচর্চা করুন, স্বাস্থ্যকর নাস্তা খান। এতে শরীর ও মন ভালো থাকবে।