ফরিদপুরে অসময়ে চলছে কুমার নদে তীব্র ভাঙন। প্রায় ৫ কিলোমিটার এলাকা জুড়ে অর্ধশতাধিক স্থানে ভয়াবহ এই ভাঙনে আতঙ্কিত হয়ে পড়ছে নদীপাড়ের কয়েক হাজার বাসিন্দা। সদর উপজেলার মদনখালী রেগুলেটর হতে অম্বিকাপুরের সোজন বাদিয়ার ঘাট পর্যন্ত শুরু হয়েছে এ ভাঙনের। ইতোমধ্যেই বেশ কিছু বসতবাড়ি, ফসলি জমিসহ বিভিন্ন স্থাপনা চলে গেছে নদী গর্ভে। ফলে আতঙ্কিত হয়ে দিন কাটাচ্ছে হাজারো মানুষ। ভাঙন ঠেকাতে স্থানীয় বাসিন্দারা নিজ উদ্যোগে বাঁশের বাঁধ দিয়ে তা ঠেকানোর চেষ্টা চালাচ্ছেন। নদী ভাঙনরোধে কার্যকর ব্যবস্থা গ্রহণের দাবি জানিয়েছেন স্থানীয়রা। খোঁজ নিয়ে জানা গেছে, ফরিদপুর পৌর এলাকার কুমার নদের গুহ লক্ষীপুর, অম্বিকাপুর এলাকায় গত কয়েকদিন ধরে তীব্র ভাঙন শুরু হয়েছে। ভাঙনের কবলে পড়ে ১০/১২টি বসতঘরসহ কয়েকটি পাকা স্থাপনা ধসে পড়েছে নদীতে। বর্তমানে চুনাঘাটা এলাকার ৫০/৬০টি বাড়ি রয়েছে চরম হুমকির মুখে। স্থানীয়রা জানান, গত সেপ্টেম্বর মাসের প্রথম সপ্তাহে শুরু হয় নদী ভাঙনের। সেই সময় বেশ কয়েকটি বসতঘর নদীতে ভেঙে পড়ে। পানি উন্নয়ন বোর্ডের তরফ থেকে ভাঙনরোধে কাজ করা হয়। ফলে ভাঙন কিছুটা রোধ হয়। কিন্তু হঠাৎ করে গত এক সপ্তাহে ভাঙন তীব্র আকার ধারণ করে। চুনাঘাটা এলাকার স্থানীয় বাসিন্দা মো. আক্কাস আলী জানান, গত ৭২ ঘণ্টায় কুমার নদের ৮/৯ নং ওয়ার্ডের চুনাঘাটা এলজিইডির ব্রীজের পূর্ব এবং পশ্চিম পাশের নদীর উভয় পাড়ে তীব্র ভাঙন দেখা দিয়েছে। নদের পানি যতই কমছে ততই ভাঙনের ভয়াবহতা বাড়ছে। সাইফুল ইসলাম ও ফরিদ জমিদার জানান, যেভাবে নদী ভাঙছে তাতে করে বসতবাড়ি রক্ষা করা কঠিন হয়ে পড়েছে। জরুরি ভিক্তিতে ভাঙন ঠেকানো না গেলে কয়েকশ বসতবাড়ি আর জমি চলে যাবে নদীগর্ভে। স্থানীয়দের অভিযোগ, কুমার নদ খননের জন্য যেভাবে কাজ করার কথা ছিল সেভাবে ঠিকাদার কাজ করেনি। নদীর মাটি কেটে নিয়ে তারা তা বিক্রি করে দিয়েছে। অথচ নদীর মাটি কেটে তা তীর বাঁধানোর কাজ করার কথা ছিল। মাটি কেটে নেবার ফলে নদীর গভীরতা বেড়ে যায়। ফলে নদীপাড় হুমকির মধ্যে পড়ে। নদীতে পানি কমে যাবার সাথে সাথে শুরু হয়েছে তীব্র ভাঙন। অতি দ্রুত এ ভাঙন ঠেকানো না গেলে অনেক পরিবার একেবারেই সর্বশান্ত হয়ে যাবে। পানি উন্নয়ন বোর্ডের নির্বাহী প্রকৌশলী রাকিব হোসেন বলেন, ভাঙনের বিষয়টি আমরা জানতে পেরেছি। ভাঙনরোধে আমাদের তরফ থেকে যা করা দরকার তাই করা হবে।