অভিবাসনকারী বিভিন্ন নৃ-গোষ্ঠীর মধ্যে গারো উল্লেখযোগ্য। এই অঞ্চলের গভীর অরণ্য সংলগ্ন জনপদে পাহাড়ের টিলায় ঐতিহাসিক কাল থেকেই বসবাস করে আসছে গারোরা।গারো উপজাতিরা মনোভাবের দিক থেকে সহজ সরলও হয়। কার্তিক-অগ্রাহায়ণ গারোদের সর্বাপেক্ষা বৃহৎ যে উৎসব হয় তার নাম ‘ওয়ানগালা’।ওয়ানগালাকে একটি ধন্যবাদের উৎসব বলা হয়।পাহাড়ে অরণ্যে অতি কষ্টে যে সকল ফসল ফলায় গারো পাহাড়ি,তার জন্য সৃষ্টিকর্তাকে ধন্যবাদ জানানো জরুরি বলে মনে করেন তারা। আজ রোববার শ্রীমঙ্গল উপজেলার কালাপুর গারো লাইনে ব্যাপক উৎসাহ ও উদ্দীপনার মধ্যে দিয়ে গারোদের ওয়ানগালা উৎসব উদযাপন করা হয়।ওয়ানগালা উদযাপন কমিটির আহবায়ক পার্থ হাজং এর সঞ্চালনায় ও প্রধান পুরোহিত ক্যাথলিক মিশন শ্রীমঙ্গল ফাদার ড জেমস শ্যামল গমেজ এর সভাপতিত্বে এই অনুষ্ঠানটি পরিচালনা করা হয়।অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন শ্রীমঙ্গল উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা মো.ইসলাম উদ্দিন। অনুষ্ঠানে নৃত্য ও তাদের নিজস্ব ভাষায় সংগীত পরিবেশন করা হয়।তাছাড়া এই উৎসবের এদের জীবনধারা,সংস্কৃতি ও আচার-আচরণ বিভিন্ন কর্মকাণ্ড তুলে ধরা হয়। প্রধান অতিথির বক্তব্যে উপজেলা নিবাহী কর্মকর্তা মো. ইসলাম উদ্দিন বলেন,গারোদের ওয়ানগালা উৎসব উপভোগ করে আমি খুবই আনন্দিত।সরকারি দৃষ্টিভঙ্গি ও অনুভব ছিল যে,জাতীয় সংস্কৃতি ও ঐতিহ্যের উন্নয়ন করতে হলে দেশের বিভিন্ন স্থানে ছড়িয়ে ছিটিয়ে থাকা,ক্ষুদ্র ক্ষুদ্র সাংস্কৃতিক ঐতিহ্যগুলোরও পৃষ্ঠপোষকতা চর্চা ও উন্নয়ন প্রয়োজন। এদেশের প্রতিটি আদিবাসী নৃ-গোষ্ঠীর রয়েছে নিজস্ব ভাষা, সামাজিক কাঠামো, ধর্মীয় বিশ্বাস, পোষাক-পরিচ্ছদ, অলঙ্কার-গহনা, রীতিনীতি তথা সাংস্কৃতিক ঐতিহ্য। বিভিন্ন কারণে আদিবাসীদের এই মূল্যবান ও বর্ণিল সংস্কৃতি হারিয়ে যাচ্ছে।আদিবাসী সংস্কৃতি রক্ষার প্রয়াস সরকারিভাবে শুরু হয়েছে বেশ আগে থেকেই।সরকারি উদ্যোগে দেশের বিভিন্ন অঞ্চলে উপজাতিদের সাহিত্য সংস্কৃতি এবং বিভিন্ন ব্যবহার্য সামগ্রী সংরক্ষণে ভূমিকা পালন করে আসছে। এছাড়াও ওয়ানগালা উৎসবে উপস্থিত ছিলেন, জাতীয় নাগরিক কমিটির কেন্দ্রীয় সদস্য প্রীতম দাশ,ডিনস্টন ডিভিশন উপ-মহাব্যবস্থাপক হুমায়ুন কবির মজুমদার,চাতাল ডিভিশন মাজদিহি চা বাগান ব্যবস্থাপক মো.শাহরিয়ার পারভেজ,হরিণ ছড়া চা বাগানের ব্যবস্থাপক বিকাশ সিনহা সহ আগত অতিথিবৃন্দ।