দেখতে দেখতে মিনিটের মধ্যে সব চলে গেল নদীতে। বসতভিটা, ঘরবাড়ি ও গাছপালা সবকিছু নিয়ে একবারে ডুবে গেল। আমাগো আর জায়গা জমি কিছু নেই। বাড়িটুকুই ছিল। পরে গিয়ে একজনের বাড়িতে আশ্রয় নিয়েছি। কথাগুলো বলছিলেন নদী ভাঙনে নিঃস্ব হওয়া হাসিনা বেগম। তার বাড়ি নড়াইলের কালিয়া উপজেলার বিষ্ণুপুর গ্রামে। সম্প্রতি বিষ্ণপুর এলাকায় নবগঙ্গা নদী ভাঙনে বিলীন হয়েছে হাসিনা বেগম ঘরবাড়ি। শুধু হাসিনা বেগমই নয়, গত ২০ দিনে এই নদীগর্ভে বিলীন হয়েছে রিলু ফকির, জনি শেখ, মাহাবুর ফকির, মাকসুদ ফকির, সেলিনা আহমেদ, রুকি বেগম, জহুর সর্দার, শহিদুল্লা মোল্যা ও মাহদাদ শেখসহ অন্তত ১৫টি পরিবারের বসতভিটা ও ঘরবাড়ি। ভাঙন আতঙ্কে রয়েছে অন্তত আরও শতাধিক পরিবার। দ্রুত কোনো ব্যবস্থা না নিলে নদীগর্ভে চলে যাবে তাদের ঘরবাড়ি, কবরস্থান, মসজিদ ও পাকা রাস্তাসহ বিভিন্ন গুরুত্বপূর্ণ স্থাপনা। সমস্যার স্থায়ী সমাধানে বাঁধ নির্মাণের দাবি জানিয়েছেন তারা। রিলু ফকির বলেন, নবগঙ্গা নদী আমার সবকিছু নিয়ে গেছে। আমার জায়গা-জমি যা ছিল, সব চলে গেছে। নতুন করে ঘর উঠানোর মতো জায়গা নেই। আমার আর কিছু নেই। এখন রাস্তায় রাস্তায় আছি। মানুষ যা দিচ্ছে, তাই খাচ্ছি। কাজল খাতুন বলেন, আমার বাড়ির পাশে যারা বাস করত, সবার ঘর নদীতে চলে গেছে। আমাদের বাকি যেটুকু আছে, তাও চলে যাবে। আমাদের জায়গা-জমি কিছুই নেই। সরকার সাহায্য না করলে আমাদের আর থাকার জায়গা নেই। সেলিনা আহমেদ বলেন, আমাদের ঘরও নদীতে চলে গেছে। নিজেরা দৌড়ে পালিয়ে জীবন বাঁচিয়েছি। আমাদের মাথা গোজার ঠাঁই নেই। কেউ আমাদের খোঁজ নেয়নি। নড়াইল পানি উন্নয়ন বোর্ডের নির্বাহী প্রকৌশলী উজ্জ্বল কুমার সেন বলেন, সাগরে নিম্নচাপ ও উজানে বন্যার পানির তীব্র স্রোতের কারণে মধুমতি ও নবগঙ্গা নদীর বিভিন্ন স্থানে নদী ভাঙন দেখা দিয়েছে। জিও ব্যাগ ডাম্পিংয়ের মাধ্যমে কাজ চলছে।