চট্টগ্রামে সকাল থেকেই থেমে থেমে চলছে বৃষ্টি। তবে এ বৃষ্টি উপেক্ষা করে মাঠে নেমেছেন শিক্ষার্থীরা। তাদের সঙ্গে যোগ দিয়েছেন অভিভাবকরাও। শুক্রবার (২ আগস্ট) নগরের কোতোয়ালি থানার ঐতিহাসিক আন্দরকিল্লা জামে মসজিদ থেকে মিছিল শুরু হয়।
শুরুতে বাধা দেওয়ার চেষ্টা করলে একপর্যায়ে পিছু হটে পুলিশ। বিক্ষুব্ধ শিক্ষার্থীরা মিছিল নিয়ে নিউমার্কেট মোড়ে পৌঁছে অবস্থান শুরু করেন। ততক্ষণে সমাবেশটি জনসমুদ্রে পরিণত হয়। শিক্ষার্থীদের স্লোগানে উত্তাল হয়ে ওঠে আশেপাশের এলাকা।
কোটা সংস্কারের দাবিকে কেন্দ্র করে গড়ে ওঠা আন্দোলনের সমন্বয়করা আগে থেকেই ঘোষণা দিয়েছিলেন আন্দরকিল্লা মসজিদ থেকে কর্মসূচি পালন করার। এ কারণে জুমার আগে থেকে মসজিদের আশেপাশে অবস্থান নেয় বিপুল পরিমাণ আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর সদস্য। সাদা পোশাকে গোয়েন্দা সদস্যদের সেখানে অবস্থান নিতে দেখা যায়। এ পরিস্থিতিতে জুমা শেষ হওয়ার পরপরই মসজিদ ফটকে শিক্ষার্থীরা অংশ নেয়। এরপরই একযোগে মিছিল নিয়ে বের হয়ে যায় যায়।
ঘটনাস্থলে দায়িত্ব পালনকারী কোতোয়ালি থানার উপ-পরিদর্শক (এসআই) পদমর্যাদার কর্মকর্তা জানান, কোনো ধরনের নাশকতা যাতে না হয় সেজন্য তারা সেখানে অবস্থান নিয়েছেন।
আশফাত হোসেন নামে এক শিক্ষার্থী ঢাকা পোস্টকে বলেন, সরকার আমাদের ওপর নিপীড়ন চালাচ্ছে। রাতে বাসায় বাসায় তল্লাশি চালিয়ে ছাত্র থাকলে গ্রেপ্তার করছে। কিন্তু তারা বলেছিল কোনো প্রকার হয়রানি করবে না। এইচএসসি পড়ুয়া শিক্ষার্থীদের পর্যন্ত গ্রেপ্তার করে হত্যা ও বিস্ফোরক মামলার আসামি করা হচ্ছে। আমরা এর প্রতিবাদ জানাচ্ছি।
গতকাল বৃহস্পতিবার বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলন চট্টগ্রামের সমন্বয়ক খান তালাত মাহমুদ রাফি ফেসবুক পোস্টে লেখেন, গণহত্যা ও গণগ্রেপ্তার, শিক্ষকদের ওপর হামলার প্রতিবাদে এবং শিক্ষার্থীদের ৯ দফা দাবি আদায়ের লক্ষ্যে সারাদেশে মসজিদে জুমার নামাজ শেষে দোয়া-কবর জিয়ারত, মন্দির, গির্জাসহ সব প্রার্থনালয়ে প্রার্থনার আয়োজন ও জুমার নামাজ শেষে ছাত্র জনতার গণমিছিল অনুষ্ঠিত হবে। শিক্ষার্থী, শিক্ষক, আইনজীবী, ডাক্তার, বুদ্ধিজীবী, সংস্কৃতিকর্মী, গণমাধ্যমকর্মী, মানবাধিকারকর্মী, আলেম-ওলামা, শ্রমিক, অভিভাবকসহ চট্টগ্রামের সর্বস্তরের নাগরিকদের প্রতি আহ্বান জানাচ্ছি যে, শুক্রবার বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের ‘প্রার্থনা ও ছাত্র জনতার গণমিছিল’ কর্মসূচিকে স্বতঃস্ফূর্তভাবে সফল করে তুলুন।