বগুড়ার ভাই পাগলা পীরের উসিয়ত পূরণ করতে জীবিত থাকতেই নিজের জন্য কবর খোঁড়ায় আবারও ব্যাপক আলোচনা সমালোচনার সৃষ্টি করেছেন মমতাজ উদ্দিন সর্দার (৭৫) নামে এক বৃদ্ধ। তিনি শাজাহানপুর উপজেলার আশেকপুর ইউনিয়নের পারতেখুর সরদারপাড়া গ্রামের মৃত কছিম উদ্দিন সরদারের পুত্র। এর আগেও তিনি পবিত্র ঈদের নামাজ একা একাই আদায় করেও এলাকায় তুমুল সমালোচিত হয়েছেন। শুক্রবার আশেকপুর ইউনিয়নের পারতেখুর সরদারপাড়া গ্রামে এ ঘটনা ঘটে। মমতাজ উদ্দিন নিজের বাড়ির সামনে তার আপন ভাতিজা চাঁন মিয়া ও একই গ্রামের শাফিকুল ইসলাম নামে দুইজন ব্যক্তিকে নিয়ে কবর খুড়ার কাজ শুরু করেন। স্থানীয়রা জানান, মমতাজ উদ্দিন পীর ভক্ত লোক। বিভিন্ন সময়ে একা একা নামাজ আদায় করেন। গ্রামের সব ধরনের সামাজিক কর্মকাণ্ড থেকে নিজেকে বিরত রাখেন। নিজের সংসার চালাতে যতটুকু সাংসারিক কাজ করতে হয় ততটুকু কাজ করেন। সব সময় একাকিত্ব সময় কাটান। এমনকি বছরে দুটি ঈদের নামাজ পর্যন্ত তিনি একা একাই আদায় করেন। এছাড়াও তাকে নিয়ে এলাকায় বিভিন্ন সময়ে অনেক আলোচিত ঘটনা ঘটেছে। আরও জানা যায়, আজ তিনি যে কবর খনন করলেন তা বালু দিয়ে ভরাট করে রাখবেন। তার মৃত্যু হলে বালু তুলে নিয়ে সেখানে তাকে দাফন করে রাখা হবে। এমনকি ওই কবরের চারপাশে প্রাচীর তৈরি করে রাখবেন বলে জানান এলাকাবাসী। জীবিত থাকতে মমতাজ উদ্দিনের এসব কর্মকাণ্ড করায় এলাকায় ব্যাপক আলোচনা সমালোচনার তৈরি হয়েছে। মমতাজ উদ্দিন সাংবাদিকদের জানান, অনেক বছর আগে ভাই পাগলা নামে এক পীর আমার বাড়িতে এসেছিলেন। সেই সময় বিভিন্ন বিষয়ে উনার সাথে আমার কথোপকথন হয়। এক পর্যায়ে উনার সাথে কথা হয় নিজের কবর বেঁচে থাকতে নিজেই খুঁড়ে রাখতে হবে। সেই উছিয়ত পূরণ করতে গিয়ে আমি বেঁচে থাকতেই আমার কবর খনন করে রাখছি। বতর্মানে তিনি (পীর ভাই পাগলা) বগুড়া ঠনঠনিয়ায় অবস্থিত ভাই পাগলা মাজার শরীফে শায়িত আছেন। জীবিত অবস্থায় কেউ নিজের কবর নিজে খুঁড়ে রাখতে পারবে কি না এই বিষয়ে মহিমাগঞ্জ আলিয়া কামিল মাদ্রাসার ভারপ্রাপ্ত অধ্যক্ষ ড.মুহাম্মদ মোখলেসুর রহমানের সঙ্গে কথা বললে তিনি জানান, ইসলাম এমন বিষয় কোনভাবেই সমর্থন করে না। পবিত্র কোরআন এর সূরা লোকমানের শেষ আয়াতে আল্লাহ ঘোষণা করেছেন ‘কে কোথায় কিভাবে মৃত্যুবরণ করবে, কোথায় কবর হবে তা কেবলমাত্র আল্লাহই ভালো জানেন’। সুতরাং কারো মৃত্যুর সময়, কবর নির্দিষ্ট করা কবীরা গুনাহ। তিনি আরো বলেন অগ্রীম কবর খুড়ার নজির আল্লাহর রাসূলের সময় ছিলোনা, সাহাবাদের সময়েও ছিলোনা।