কর্ণফুলী নদীর তলদেশ দিয়ে বঙ্গবন্ধু টানেলের মাধ্যমে কর্ণফুলীর দুইপাড় সংযুক্ত হয়েছে। আনোয়ারা পয়েন্টে টানেলের টিউবের মুখ এসেছে পারকি সিইউএফএল এলাকায়। টানেল থেকে মাত্র চার কিলোমিটার দূরে পারকি। এই টানেল ব্যবহার করে সহজে পর্যটকরা ১৫ মিনিটের মধ্যে পৌঁছে যেতে পারেন পারকি সমুদ্র সৈকতে। পর্যটন করপোরেশনের উদ্যোগে ১৩ দশমিক ৩৬ একর জমিতে ৭১ কোটি ২৫ লাখ টাকা ব্যয়ে বিশ্বমানের পর্যটন কমপ্লেক্স নির্মাণ করা হচ্ছে। ২০১৮ সালের নভেম্বরে শুরু হয় এ প্রকল্পের কাজ। প্রকল্পের ব্যয় ছিল ৬২ কোটি টাকা। প্রকল্প বাস্তবায়নের মেয়াদ ছিল দুই বছর। ২০২০ সালের নভেম্বরে মেয়াদ শেষ হলেও নির্দিষ্ট সময়ে কাজ শেষ করতে পারেনি ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠান। দ্বিতীয় দফায় এর মেয়াদ বাড়ানো হয় ২০২১ সালের ডিসেম্বর পর্যন্ত। বর্তমানে এ প্রকল্পের মূল কাজ ৬০ শতাংশ শেষ হয়েছে। প্রকল্পের মধ্যে রয়েছে- মোট ১৭টি স্থাপনা ও ১৪টি আধুনিক কটেজ নির্মাণ। এর মধ্যে চারটি ডাবল ডুপ্লেক্স কটেজ ও ১০টি সিঙ্গেল কটেজ। এছাড়া চতুর্থ তলাবিশিষ্ট একটি মাল্টিপারপাস ভবনের গ্রাউন্ড ফ্লোরে থাকবে পর্যটন অফিস, দ্বিতীয় তলায় থাকবে দুটি দোকান, একটি রেস্টুরেন্ট, তৃতীয় ও চতুর্থ তলায় থাকবে দুটি বার, একটি ২৫০ আসনের কনভেনশন হল। তৃতীয় তলাবিশিষ্ট একটি সার্ভিস ব্লক, যেখানে ছাত্র-ছাত্রীদের থাকার বিশেষ ব্যবস্থাসহ পর্যটকদের জন্য সিঙ্গেল ব্যাচেলর সার্ভিস রুম ৩৫টি, কমপ্লেক্স সার্ভিস স্টাফদের জন্য ৪৪টি রুম থাকছে। একটি ওয়াশরুম ব্লক, যেখানে নারী-পুরুষদের জন্য আলাদা ব্যবস্থা থাকবে। এছাড়া একটি লেক, একটি ঝুলন্ত ব্রিজ, দুটি পিকনিক শেড, কুকিং শেড, একটি খেলার মাঠ, যার মধ্যে ভলিবল, টেবিল টেনিস, ব্যাডমিন্টন খেলার ব্যবস্থা থাকবে এবং গাড়ি পার্কিংয়ের সুবিধাও রাখা হচ্ছে। প্রত্যেকটি ভবনের সামনে থাকবে বাগান। প্রকল্পের জায়গায় সীমানা দেয়াল নির্মাণ শেষ হয়েছে। কটেজ ভবন নির্মাণকাজ চলছে। ভবন নির্মাণকাজ ৬০ শংতাংশ শেষ হয়েছে। পারকি সৈকত ব্যবস্থাপনা কমিটির সদস্য ও বারশত ইউনিয়নের চেয়ারম্যান এম এ কাইয়ুম শাহ বলেন, টানেল ঘিরে শিল্পকারখানা ও আবাসনের পাশাপাশি খুলছে পর্যটন শিল্পের দুয়ার। পারকি পর্যটন কমপ্লেক্স এর কাজ শেষ হলে দেশি-বিদেশি পর্যটকদের পদচারণায় মুখরিত হবে এলাকা। পারকি সৈকত হবে দ্বিতীয় কক্সবাজার। এতে কর্মসংস্থান বাড়বে, হবে বৈদেশিক মুদ্রা অর্জন। পর্যটন খাত থেকে সরকারের আয়ও বাড়বে। পর্যটন করপোরেশনের পারকি সৈকত প্রকল্প পরিচালক প্রকৌশলী অসীম শীল বলেন, নানান জটিলতায় নির্দিষ্ট সময়ে প্রকল্পের কাজ শেষ হয়নি। টানেল চালু হওয়ায় সৈকতে পর্যটকের সংখ্যা বেড়েছে। কাজ শেষ করার প্রচেষ্টা রয়েছে।