কোন রকম জোড়াতালি দিয়ে, এদিক-ওদিক থেকে লোকবল নিয়ে চলছে কক্সবাজার রুটের ট্রেন। কক্সবাজারের আইকনিক স্টেশনসহ সব মিলিয়ে ৯টি স্টেশন নির্মাণ হয়েছে রেলপথটিতে। কিন্তু চালু হয়নি একটি স্টেশনও। নিরাপত্তার জন্য যে থানা ও পুলিশ ফাঁড়ি নির্মিত হওয়ার কথা, এখনো হয়নি সেগুলোও। যার কারণে নিরাপত্তার শঙ্কায় এ রুটের ট্রেন চলাচল। এদিকে, রেলওয়ে পুলিশের পক্ষ থেকে ছয়টি রেলওয়ে পুলিশ ফাঁড়ি, দুইটি থানা ও একটি সার্কেল করার প্রস্তাব দেওয়া হয়েছে। এসব থানা ফাঁড়ির জন্য ২২৭ জন জনবল চাওয়া হয়েছে। সংশ্লিষ্টরা বলছেন, মেগা প্রকল্প বাস্তবায়নের শেষ পর্যায়ে এসে আইন-শৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীকে স্থায়ীভাবে বৃহৎ অবকাঠামোর নিরাপত্তায় নিয়োজিত থাকতে হয়। তাছাড়া প্রকল্প বাস্তবায়নের পর্যায়েও পুলিশের কাছ থেকে ক্যাম্প স্থাপনের চাহিদাপত্র আসে। কিন্তু স্বল্প জনবল দিয়ে নিরাপত্তা দেওয়া সম্ভব হয় না। প্রকল্পের শুরুতে সমীক্ষা কিংবা ডিপিপিতে পুলিশসহ আইন-শৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর সম্পৃক্ততা নিশ্চিত করা হলে শেষ দিকে এসে জটিলতা এড়ানো সম্ভব হত। চট্টগ্রাম থেকে কক্সবাজার পর্যন্ত এ রেলপথের দূরত্ব ১৫০ কিলোমিটার। দোহাজারী থেকে সাতকানিয়া, লোহাগাড়া, চকরিয়া, রামু হয়ে পাহাড় ও নদীপথ দিয়ে পর্যটন নগর কক্সবাজার পর্যন্ত এই ট্রেন লাইন। এ মাসের শুরুতে ঢাকা থেকে কক্সবাজার রুটে রেল যোগাযোগ শুরু হয়েছে। প্রতিদিন এক জোড়া ট্রেন চলাচল করে এ রুটে। চট্টগ্রাম থেকে কক্সবাজার রুটেও এক জোড়া ট্রেন চলাচলের কথা থাকলেও লোকবল সংকটের কারণে সেটিও চালানো সম্ভব হয়নি। যাত্রী চাহিদার কথা বিবেচনায় নিয়ে আগামী ১ জানুয়ারি থেকে আরও এক জোড়া ট্রেন চালু করার সিদ্ধান্ত নিয়েছে রেলওয়ে কর্তৃপক্ষ। চট্টগ্রাম-কক্সবাজার ট্রেন চালুরও ভাবনা আছে রেলওয়ের। চট্টগ্রাম রেলওয়ে জেলা পুলিশ সুপার মোহাম্মদ হাছান চৌধুরী বাংলানিউজকে বলেন, নতুন ফাঁড়ি, থানার প্রস্তাব ও লোকবল চেয়ে পুলিশ সদর দপ্তরে প্রস্তাব পাঠানো হয়েছে। তবে এখনও আমরা কোনো উত্তর পাইনি। অনুমোদনের পর বোঝা যাবে কয়টি থানা ও ফাঁড়ি নির্মাণ করা হবে এ রুটে। প্রস্তাব অনুযায়ী, দুটি থানার একটি হবে দোহাজারীতে, অপরটি হবে কক্সবাজারে। আর ফাঁড়ি থাকবে পটিয়া, সাতকানিয়া, লোহাগাড়া, চকরিয়া, ডুলাহাজারা ও রামুতে। পটিয়া ও সাতকানিয়া ফাঁড়ি থাকবে দোহাজারী রেলওয়ে থানার অধীনে, বাকি চারটি ফাঁড়ি থাকবে কক্সবাজারের অধীনে। আর সার্কেল হবে কক্সবাজার রেলওয়ে পুলিশ সার্কেল। বর্তমানে চট্টগ্রাম রেলওয়ে জেলার অধীনে আছে চট্টগ্রাম, লাকসাম ও চাঁদপুর রেলওয়ে থানা। প্রস্তাবিত দুই থানার অনুমোদন হলে এ সংখ্যা দাঁড়াবে পাঁচটিতে। পুলিশ সুপার হাছান চৌধুরী বলেন, অনুমোদন পেলে এসব থানা ও ফাঁড়ির স্থাপনা নির্মাণ হবে রেলওয়ের জায়গায়। রেল কর্তৃপক্ষ এ বিষয়ে পুলিশকে সহায়তা করবে।