বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব মেডিক্যাল বিশ্ববিদ্যালয়ে (বিএসএমএমইউ) ‘ইন্ট্রি টিকেটস ফর সাইক্রায়াট্রি ওপিডি : রিস্ক অব মিসগাইড বহির্বিভাগে মানসিক স্বাস্থাসেবার মানোন্নয়ন) শীর্ষক বৈজ্ঞানিক সেমিনার অনুষ্ঠিত হয়েছে। সোমবার ( ৪ সেপ্টেম্বর ২০২৩) বিশ্ববিদ্যালয়ের শহীদ ডা. মিল্টন হলে এ সেমিনারটি মনোরোগ বিদ্যা বিভাগ আয়োজন করে। সেমিনারে বলা হয়, মানসিক রোগীদের চিকিৎসা গ্যাপ রয়েছে। যে সকল মানসিক রোগীর চিকিৎসা প্রয়োজন এবং যারা চিকিৎসা পাছে বা নিচ্ছে এর মধ্যেও ব্যবধান রয়েছে। মানসিক রোগীদের মধ্যে প্রাপ্ত বয়স্কদের চিকিৎসা গ্যাপ ৯২% এবং শিশু কিশোদের ক্ষেত্রে ৯৪.৩%। এরা চিকিৎসার আওতায় আসছে না। মানসিক রোগীরা প্রথমাবস্থায় মনোরোগের চিকিৎসকের শরণাপন্ন হয় না। বিভিন্ন কারণে মধ্যে মানসিক রোগ সম্পর্কে জ্ঞানের অভাব, সচেতনতার অভাব, ভ্রান্ত ধারণা, সঠিত রেফারেল সিস্টেমের অভাব অন্যতম। হাসপাতাল বহির্বিভাগে এ ধরনের রোগী এলে সঠিক নির্দেশিকা না থাকায় পর্যাপ্তভাবে এ রোগ চিহ্নিত হয় না। ফলে তারা এক বিভাগ থেকে অন্য বিভাগে ঘুরতে থাকে। এবং মানসিক রোগের ক্ষেত্রে চিকিৎসা শুরু হতে গড় বিলম্ব ২৪-৩৬ মাস। গড় বিলম্বজনিত কারণে মানসিক রোগ চরমমাত্রা ধারণ করতে পারে এবং রোগীরা ভোগান্তির শিকার হয়। এক কথায় রোগীরা প্রথমাবস্থায় মানসিক রোগ বিদ্যা আসতে পারছেন না। সেমিনারে কিছূ পদক্ষেপ গ্রহণ করা ও প্রস্তাবনা উত্থাপিত হয়। তার মধ্যে বর্হিবিভাগে মানসিক স্বাস্থ্যের প্রাথমিক লক্ষ্মণ সম্বলিত ব্যানার স্থাপন,টিকিট বন্টনকর্মীদের সাথে আলেচনা এবং প্রশিক্ষনের ব্যবস্থা করা সিদ্ধা নেয়া হয়। পরবর্তীতে চিকিৎসকদের মাধ্যমে Patient sorting room / screening corner চালু করার প্রস্তাব উত্থাপিত হয়। সেমিনারে প্রধান অতিথির বক্তব্যে বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব মেডিক্যাল বিশ্ববিদ্যালয়ের মাননীয় উপাচার্য অধ্যাপক ডা. মোঃ শারফুদ্দিন আহমেদ বলেন, সাধারণ মানুষ ও রোগীদের সচেতনতা ও জানানোর জন্য যারা টিকেট বিতরণের দায়িত্বে থাকেন তাদের আরও বেশী মনোযোগী হতে হবে। কিছু কিছু রোগ যেমন চোখের সমস্যা, লিভারের সমস্যা কথা বলতে পারেন। কিন্তু অধিকাংশ রোগের কথা, বিভাগের কথা বলতে পারে না। মনোরোগ বিদ্যা বিভাগের নামটি হয়তো তারা জানেন না। মাননীয় উপাচার্য অধ্যাপক ডা. মোঃ শারফুদ্দিন আহমেদ বলেন, সমস্যা আছে, তার সমাধান আছে। মনোরোগ বিদ্যা বিভাগের ফেজ এ ও ফেজ বি রেসিডেন্টদের প্রতিটি ওয়ার্ডে ওয়ার্ডে গিয়ে এ ধরনের রোগী সনাক্তকরণ করার জন্য যেতে হবে। এছাড়া যেসকল রোগীদের বিভিন্ন পরীক্ষা নিরীক্ষা কিছু না পাওয়া গেলে, তাদের মনোরোগ বিদ্যা বিভাগে রেফার্ড দিতে হবে। যারা টিকেট বিতরণ বা বিক্রির দায়িত্বে থাকেন তাদের প্রশিক্ষণের ব্যবস্থা করতে হবে। কমিউনিটি ক্লিনিকের প্রোভাইডার প্রশিক্ষণ নিয়ে ওষুধ বিতরণ করে। আমরাও সংশ্লিষ্টদের প্রশিক্ষণ দিয়ে দক্ষ করে তুলতে পারব। আমাদের রিসপশন থেকে রেসিডেন্টদের দিয়ে রোগী স্ক্রিনিং করে টোকেন দিয়ে রোগীদের মাঝে টিকিট বিতরণ করা হবে। বহির্বিভাগে মনোরোগ বিদ্যাসহ সকল বিভাগের টিকিট বন্টন আধুনিকায়ন করা হবে। অনুষ্ঠানে সভাপতিত্ব করেন মনোরোগ বিদ্যা বিভাগের চেয়ারম্যান অধ্যাপক ডা. নাহিদ মাহজাবিন মোরশেদ। সেমিনারে ইউজিসি অধ্যাপক ডা. সজলকৃষ্ণ ব্যানার্জী, বিএসএমএমইউর মেডিসিন অনুষদের ডিন অধ্যাপক ডা. মাসুদা বেগম, বিএসএমএমইউর মনোরোগ বিদ্যা বিভাগের অধ্যাপক ডা. এমএম এ সালাহ্উদ্দিন কাউসার, অধ্যাপক ডা. সুলতানা আলগিন প্রমুখ, পরিচালক ( হাসপাতাল) ব্রি. জে. ডা. রেজার রহমান প্রমুখ উপস্থিত ছিলেন। সেমিনারে প্রবন্ধ উপস্থাপন করেন মনোরোগ বিদ্যা বিভাগের ফেজ বি রেসিডেন্ট ডা. নাহিদ আফসানা জামান। সেমিনারটি সঞ্চালনা করেন মনোরোগ বিদ্যা বিভাগের সহকারী অধ্যাপক ( ক্লিনিক্যাল সাইকোলজি) সেলিনা ফাতেমা বিনতে শহীদ।