প্রধানমন্ত্রীর নির্দেশনা ‘এক ইঞ্চি জমিও যেন অনাবাদি না থাকে’ এই আলোকে প্রকল্প থেকে ক্ষুদ্র ও প্রান্তিক কৃষকদের উপকরণ সহায়তা দিয়ে পুষ্টি বাগানের মাধ্যমে পুষ্টি নিশ্চিত করা হচ্ছে। বসত বাড়ির আঙিনায় এ পারিবারিক পুষ্টি বাগান করে সহজেই পরিবারের সদস্যদের পুষ্টি পূরণ হওয়ায় এ বাগান করার দিকে ঝুঁকছে সিরাজগঞ্জে কামারখন্দের কৃষকরা। উপজেলা কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তরের তথ্যমতে, অনাবাদি পতিত জমি ও বসতবাড়ির আঙিনায় পারিবারিক পুষ্টি বাগান স্থাপন প্রকল্পের মাধ্যমে চলতি ২০২২-২৩ অর্থ বছরে কামারখন্দে ৮৪ প্রদর্শনী বাস্তবায়িত হয়েছে। এই প্রকল্পের আওতায় ক্ষুদ্র ও প্রান্তিক কৃষকদের এক থেকে দেড় শতক জমিতে চাষাবাদের জন্য বিনামূল্যে বীজ, সার, বেড়া ও অন্যান্য উপরকণ সহায়তা দেওয়া হচ্ছে। উপজেলার রসুলপুর গ্রামের কৃষক রইচ উদ্দিন জানান, জমিতে ফসল আবাদের পাশাপাশি বসত বাড়ির আঙিনায় পারিবারিক পুষ্টি বাগান করে খুব সহজেই পরিবারের সদস্যদের পুষ্টির যোগান দিতে পারছি। পরিবারের চাহিদা মিটিয়ে শাক-সবজি বিক্রিও করছি। তিনি আরো জানান, পারিবারিক পুষ্টি বাগান করার ফলে একদিকে নিজের পরিবারের পুষ্টির চাহিদা পূরণ হচ্ছে। অন্যদিকে এখানকার শাক ও সবজি বিক্রি করে বাড়তি আয় করতে পারছি। উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা কৃষিবিদ জেরিন আহমেদ বলেন, অনাবাদি জমি ও বসতবাড়ির আঙিনায় পারিবারিক পুষ্টি বাগান স্থাপন প্রকল্পের আওতায় আমরা কৃষকদের বিনামূল্যে সার, বীজ, ও অন্যান্য উপকরণ সহায়তা দিচ্ছি। মাঠপর্যায়ে উপ সহকারী কৃষি কর্মকর্তারা সার্বক্ষণিকভাবে কৃষকদের এ বিষয়ে কারিগরি সহায়তা করছেন। প্রকল্পের পরিচালক ড. আকরাম হোসেন চৌধুরী জানান, প্রধানমন্ত্রীর নির্দেশে ‘এক ইঞ্চি জমিও যেন অনাবাদি না থাকে’ এই আলোকে প্রকল্প থেকে ক্ষুদ্র ও প্রান্তিক কৃষকদের উপকরণ সহায়তা দেওয়া হচ্ছে। তাছাড়া এ প্রকল্পের মাধ্যমে পুষ্টি বাগান করে ক্রমবর্ধমান জনসংখ্যার পুষ্টি নিরাপত্তা নিশ্চিত করা এবং সেই সঙ্গে প্রান্তিক ও অস্বচ্ছল নারীদের স্বাবলম্বী করে নারীর ক্ষমতায়ন বেগবান হচ্ছে। তিনি জানান, বাংলাদেশে প্রায় পাঁচ দশমিক ৪০ লাখ হেক্টর জমিতে প্রায় ২৫৩ দশমিক ৬০ লাখ বসতবাড়ি রয়েছে। সেই অর্থে বসতবাড়ির আয়তন খুব ছোট। বসতবাড়ির গড় আয়তন শূন্য দশমিক দুই হেক্টর। এসব বসতবাড়িতে তাই শাকসবজি বাগান করার মাধ্যমে আমাদের পুষ্টি চাহিদা তথা নারীর আর্থিক ক্ষমতায়ন বৃদ্ধি অনেকাংশেই সম্ভব। এছাড়াও গবেষণায় দেখা গেছে, এই পারিবারিক বাগান করার মাধ্যমে মোট জনসংখ্যার ক্যালরি চাহিদা তিন শতাংশ থেকে ৪৪ শতাংশ এবং প্রোটিন চাহিদা চার শতাংশ থেকে ৩২ শতাংশ পর্যন্ত মেটানো সম্ভব। এই প্রকল্পের মাধ্যমে সারাদেশে চার লাখ ৮৮ হাজার পুষ্টি বাগান তৈরি করা হবে। সেই সঙ্গে নিরাপদ ফসলের উৎপাদনে ১০০ কমিউনিটি বেইজড ভার্মি কম্পোষ্ট পিট স্থাপন কাজ চলমান রয়েছে।