বাংলাদেশের অন্তর্বর্তীকালীন সরকারের প্রধান উপদেষ্টা অধ্যাপক ড. মুহাম্মদ ইউনূসের ‘থ্রি জিরো’ ক্লাব নিয়ে নতুন উদ্যোগ নিলেন ক্যাথলিক চার্চের সর্বোচ্চ আধ্যাত্মিক নেতা পোপ ফ্রান্সিস।
তারা ইতালির রোমে যৌথভাবে ‘পোপ ফ্রান্সিস ৩ জিরোস ক্লাব’ নামে একটি ক্লাব করার উদ্যোগ নিয়েছেন।
মানবজাতির জন্য একটি রূপান্তরিত ও অন্তর্ভুক্তিমূলক ভবিষ্যৎ গড়ে তোলার প্রচেষ্টার অংশ হিসেবে এই উদ্যোগ নিয়েছেন তারা।
‘পোপ ফ্রান্সিস ৩ জিরোস ক্লাব’ রোমের প্রান্তিক জনগোষ্ঠীর যুব সমাজের জন্য একটি আশার প্রতীক হিসেবে দাঁড়িয়েছে। এটি উদ্ভাবনীর ধারণা, বিকাশ এবং বাস্তব ও টেকসই সমাধানের জন্য একটি প্ল্যাটফর্ম সরবরাহ করছে।
শনিবার প্রধান উপদেষ্টার প্রেস উইং এসব তথ্য জানিয়েছে।
রোমের ভিকার জেনারেল কার্ডিনাল বালদো রেইনাকে লেখা একটি চিঠিতে প্রধান উপদেষ্টা ড. মুহাম্মদ ইউনূস বলেছেন, তিনি এই উদ্যোগের জন্য সম্মানিত। একই সঙ্গে তিনি রেইনাকে অভিনন্দন জানিয়েছেন।
২০০৬ সালের নোবেল শান্তি পুরস্কার বিজয়ী ড. ইউনূস লিখেছেন, এই উদ্যোগ শুধু দারিদ্র্য, বেকারত্ব এবং নেট কার্বন নিঃসরণ শূন্য করার লক্ষ্যে নয়, এটি এমন একটি নতুন সভ্যতার আবির্ভাবের প্রচেষ্টা যা সহানুভূতি, সাম্য এবং স্থায়িত্বের ওপর ভিত্তি করে হবে। একটি সভ্যতা যেখানে কেবলমাত্র কেউ পিছিয়ে থাকবে না বরং প্রত্যেক ব্যক্তি তার নিজের ভাগ্যের নায়ক হতে পারবে এবং একইসঙ্গে একটি মানব পরিবারের সদস্য হিসেবে গর্বিত হতে পারবে।
ড. ইউনূস বলেন, চলুন স্বপ্ন দেখি, একটি একক মানব পরিবার হিসেবে, যেখানে আমরা সবাই একই মাটির সন্তান। প্রত্যেকে তার নিজস্ব বিশ্বাস ও দৃষ্টিভঙ্গির সমৃদ্ধি নিয়ে আসে এবং আমরা সবাই একে অপরের ভাই ও বোন। পোপ ফ্রান্সিসের সামাজিক ন্যায়বিচারের প্রতি অবিচল প্রতিশ্রুতি এবং সামাজিক ব্যবসায়িক দৃষ্টিভঙ্গি থেকে অনুপ্রাণিত হয়ে, ‘৩ জিরোস ক্লাব’ তরুণদের এমন প্রকল্প কল্পনা ও বাস্তবায়নের জন্য উৎসাহিত করে যা অর্থবহ পরিবর্তন আনে।
তিনি বলেন, তাদের সৃজনশীলতা এবং উদ্যোক্তা মনোভাবকে লালন করার মাধ্যমে আমরা তাদের আরও ন্যায়পরায়ণ এবং সামঞ্জস্যপূর্ণ সমাজের নির্মাতা হিসেবে তৈরি করতে সহায়তা করছি।
পোপ ফ্রান্সিস ও অধ্যাপক ইউনূস সবাইকে এই রূপান্তরমূলক যাত্রায় অংশ নেওয়ার এবং পরবর্তী প্রজন্মকে এমন একটি সভ্যতা গড়ে তোলার জন্য অনুপ্রাণিত করার আহ্বান জানান, যা প্রতিটি ব্যক্তির মর্যাদা রক্ষা করে।
বিশ্বজুড়ে অন্তত ৪ হাজার ৬০০টি ‘৩ জিরোস ক্লাব’ রয়েছে, যা অধ্যাপক ড. ইউনূসের নতুন সভ্যতার দৃষ্টিভঙ্গির ওপর ভিত্তি করে গড়ে তোলা হয়েছে। তথ্যসূত্র: বাসস