শেরপুর জেলায় রাতে ও ভোরবেলায় শীত অনুভূত হওয়ায় চাহিদা বাড়ছে লেপ, তোশক ও জাযিমের। এদিকে শীতের শুরুতেই লেপ, তোশক ও জাযিম তৈরিতে ব্যস্ত সময় পার করছেন এখাকার কারিগররা।
এদিকে শীতের আগাম প্রস্ততি নিতে লেপ, তোশক বানাতে ক্রেতারাও ভিড় করছে দোকানগুলোতে। সরজমিনে দেখা গেছে, শেরপুর জেলা শহরের তেরাবাজার মোড়ের দোকানগুলোতে সুই সুতো নিয়ে কাজ করছে কারিগররা। এখানকার লেপ তোশক তৈরির ১০ টি ব্যবসা প্রতিষ্ঠানে কর্মযজ্ঞ চলছে সকাল আটটা থেকে রাত ১২টপর্যন্ত।
দোকান মালিকরা বলছেন, এবছর বাজারে প্রতিটি জিনিসের দাম বাড়ার সঙ্গে সঙ্গে লেপ-তোশক তৈরি উপকরণের খরচও বেড়েছে।
জানা গেছে, এবার প্রতি গজ লেপ তৈরির কাপড়ের দাম ৬০ টাকা, তোশক ৫০ টাকা এবং প্রতি গজ জাযিম তৈরি কাপড়ের দাম রাখা হচ্ছে ১২০ টাকা করে। এছাড়া প্রতি কেজি কার্পাস তুলার দাম ৪০০ টাকা, শিমুল তুলার দাম ৪৫০ টাকা, আঙ্গুরি তুলার দাম ১২০ টাকা ও প্রতি কেজি জুটের দাম রাখা হচ্ছে ৫০ টাকা করে।
ব্যবসায়ীরা বলছেন, এবছর রেডিমেট লেপ বিক্রি হচ্ছে ৪শ থেকে ১হাজার ৪শ টাকার মধ্যে, তোশক বিক্রি হচ্ছে ৫শ থেকে ১৫শ টাকার মধ্যে এবং জাযিম বিক্রি হচ্ছে ৩ হাজার ৫শ টাকা থেকে ৪ হাজার টাকার মধ্যে। এছাড়া বালিশ বিক্রি হচ্ছে ২৫০ থেকে ৫শ টাকার মধ্যে।
শাকিল বেডিং স্টোরের কারিগর আকাশ হাসান (৩২) বলেন, ৮ বছর থেকে শেরপুরে লেপ তোশক তৈরির কাজ করি। আমাদের প্রতিষ্ঠানে মোট
১০ জন কাজ করে। প্রতিদিন গড়ে ১৫ টি লেপ তোশক তৈরির অর্ডার শেষ করতে পারি।
জিহাদ বেডিং স্টোরের মোতালেব মিয়া (৩৫) বলেন, ১০ বছর থেকে কাজ করছি এ প্রতিষ্ঠানে। প্রতিবছরের মত এবারও শীতের আগে আমাদের ব্যস্ততা বেড়েছে। সকাল থেকে গভীর রাত পর্যন্ত চলে ক্রেতাদের লেপ, তোশক তৈরির কাজ। মোতালেব আরো জানান, একটি লেপ তৈরি করলে ১৫০ টাকা ও তোশক তৈরি করতে পারলে প্রতিজন ২শ টাকা মজুরী পাওয়া যায়।
শেরপুর সদর উপজেলার পাকুরিয়া ইউনিয়নের মর্জিনা বেগম (৪০) জানান, আমরা গরীব মানুষ। কম্বলের যে দাম সেটা কিনার সামর্থ নাই। একারনে অল্প টাকা দিয়ে লেপ বানিয়ে নিচ্ছি।
শেরপুর পৌরসভাধীন শীতলপুর মহল্লার আবুল হোসেন (৫০) বলেন, দিনের বেলায় শীত অনুভূত না হলেও রাতে শীতের তীব্রতা বাড়ে। তাই পাতলা কাঁথা দিয়ে শীত নিবারণ হয় না। এজন্য পরিবারের সদস্যদের জন্য দুটি লেপ বানিয়ে নিচ্ছি। যেখানে মোট খরচ পড়ছে ১ হাজার ৮শ টাকা।