পাসপোর্ট নিয়ে মালয়েশিয়া প্রবাসীদের মাঝে বাড়ছে ক্ষোভ। এমআরপি পাসপোর্ট সেবা বন্ধ হওয়ায় হাজার হাজার প্রবাসী পড়েছেন বিপাকে। এমআরপির জন্য মালয়েশিয়া থেকে যারা রিনিউ আবেদন করছেন তারা পাচ্ছেন না পাসপোর্ট। এতে একদিকে গ্রেফতার হওয়া, সময়মতো ভিসা নবায়ন করতে না পারা, অন্যদিকে জরিমানা গোনার আশঙ্কায় রয়েছেন প্রবাসীরা।
কয়েকজন প্রবাসী অভিযোগ করেন, সময়মতো পাসপোর্টের আবেদন করেও তারা পাচ্ছেন না। অনেকের ভিসার মেয়াদ শেষ হয়ে গেছে। পাসপোর্ট না থাকায় অবৈধ হয়ে পড়েছেন অনেকে। পাসপোর্ট না পেলে তাদের সবকিছু গুটিয়ে দেশে চলে আসতে হবে।
বিদেশের মাটিতে পাসপোর্ট হচ্ছে একজন প্রবাসীর জীবন। পাসপোর্ট না থাকলে প্রবাসে পরিচয়হীন ফেরারি জীবন ভবঘুরের মত থাকতে হয়। আবেদন করার পাঁচ-ছয় মাস পরও মিলছে না কাঙ্ক্ষিত পাসপোর্ট। প্রতিদিন শতশত প্রবাসী ভিড় করছেন কুয়ালালামপুরে বাংলাদেশ হাইকমিশন ও সরকার অনুমোদিত আউটসোর্সিং কোম্পানি ইএসকেলে।
বাংলাদেশ ইমিগ্রেশন ও পাসপোর্ট অধিদপ্তর জানায়, এমআরপি আবেদন প্রিন্টিংয়ে অপেক্ষমাণ থাকা আবেদনকারীরা ফি জমা দিয়ে আবেদন করলে দ্রুত ই-পাসপোর্ট দেওয়া হবে।
অন্যদিকে কুয়ালালামপুরের বাংলাদেশ হাইকমিশন এক বিজ্ঞপ্তিতে জানায়, এমআরপির বুকলেট, লেমিনেশন ফয়েল পেপার ঘাটতি ও এমআরপির প্রিন্টিং মেশিনের যান্ত্রিক ত্রুটির কারণে বাংলাদেশ থেকে পাসপোর্ট প্রিন্ট হতে দেরি হচ্ছে। এতে চরম বিপাকে পড়েছেন হাজারো প্রবাসী।
বর্তমানে মালয়েশিয়ায় এমআরপি পাসপোর্ট নবায়নের জন্য ২৫ হাজারের বেশি প্রবাসী আবেদন করে রেখেছেন। পাসপোর্ট না থাকায় কেউ কেউ এরই মধ্যে অবৈধ হয়ে পড়েছেন, অনেকে রয়েছেন অবৈধ হওয়ার ঝুঁকিতে। এমন অবস্থায় নতুন করে ই-পাসপোর্ট নিতে আউটসোর্সিং প্রতিষ্ঠান ইএসকেএলে এসে প্রতিদিনই আবেদন করছেন অনেকে। তাতেও আবেদন করে সময়মতো পাসপোর্ট পাচ্ছেননা প্রবাসীরা।
এদিকে হাইকমিশন থেকে বলা হয়, এমআরপির জন্য যারা আগে আবেদন করেছেন তাদের সেই ব্যাংক স্লিপ কপির সঙ্গে অতিরিক্ত ৫১ রিঙ্গিত জমা দিলে ই-পাসপোর্ট আবেদনের সুযোগ থাকলেও নাম বয়স জটিলতায় সংশোধনী আবেদন করতে পারছে না অনেক প্রবাসী। এতে ভোগান্তির অভিযোগ অনেকের। এমন পরিস্থিতিতে পাসপোর্ট জটিলতার দ্রুত সমাধানের আহ্বান জানিয়েছেন পাসপোর্ট সেবা প্রত্যাশী মালয়েশিয়া প্রবাসীরা।
শুক্রবার নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক এক প্রবাসী ক্ষোভে বলেন, এসেছিলাম পাসপোর্ট আবেদন করতে। জোহর বারু থেকে রাতে এসে লাইনে দাঁড়িয়ে থেকে শেষমেষ সকালে বলা হয় সার্ভার ডাউন আবেদন জমা নেওয়া হবে না। পাসপোর্ট নিয়ে কেন এত সংকট? পাসপোর্ট অধিদপ্তরের মতো গুরুত্বপূর্ণ প্রতিষ্ঠানের সার্ভার ডাউন, ধারণ ক্ষমতা, যান্ত্রিক ত্রুটি কেন? কেন এইসব কারণে প্রবাসীদের সমস্যায় পড়তে হয়? প্রবাসীদের সেবা দিতে হাইকমিশনের পাশাপাশি আউটসোর্সিং কোম্পানীও নিয়োগ দিয়েছে সরকার। তার পরেও সমস্যা কেন? আমরা শুনেছি, আউটসোর্সিং কোম্পানী ও হাইকমিশনের সংশ্লিষ্টদের মাঝে পাসপোর্ট সেবা সংক্রান্ত বিষয় নিয়ে দ্বন্দ চরমে।