নারায়ণগঞ্জের সিদ্ধিরগঞ্জে হাসপাতালের বিল পরিশোধ করতে না পেরে এক মাসের শিশু সন্তান রেখে উধাও হয়ে যাওয়া মা-বাবার কাছে সন্তানকে ফিরিয়ে দিয়েছেন পুলিশ। মঙ্গলবার (২২ আগষ্ট) দুপুরে বিষয়টি জানতে পেরে সমস্ত বিল পরিশোধ করে সন্তানটিকে তার মা-বাবার কাছে ফিরিয়ে দিয়েছেন সিদ্ধিরগঞ্জ থানা পুলিশ। জানা গেছে, নরসিংদী জেলার মনোহরপুরের রজত চন্দ্রের স্ত্রী সুজাতার গর্ভ থেকে গত ১ মাস আগে গ্রামের বাড়িতেই শিশুটির জন্ম হয়। জন্মের পর থেকে শিশুটি হার্টের ছিদ্র নিয়ে অসু¯’তায় ভুগছিল। তার উন্নত চিকিৎসার জন্য মা-বাবা ঢাকা মেডিকেল কলেজ ও মাতুয়াইল মা ও শিশু ইনস্টিটিউটে এনআইসিইউ না পেয়ে, সিদ্ধিরগঞ্জের সাইনবোর্ড¯’ ‘বাংলাদেশ নবজাতক হাসপাতালে’ ভর্তি করান। হাসপাতালে এনআইসিইউতে থাকা অব¯’ায় শিশুটি সু¯’ হতে থাকে। তবে সব মিলিয়ে হাসপাতালের বিল হয় ২ লাখ টাকার অধিক। শিশুটির মা-বাবা টাকা ম্যানেজ করে সন্তানকে নিয়ে যাবেন বলে গত ১২ আগস্ট চলে গিয়ে আর আসেননি। শিশুটির মা-বাবা না আসায় হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ বিষয়টি থানা পুলিশকে জানায়। সিদ্ধিরগঞ্জ থানার ওসি গোলাম মোস্তফা বলেন,‘বিষয়টি জানার পর জেলা পুলিশ সুপার গোলাম মোস্তফা রাসেল মহোদয়ের নির্দেশে মানবিক বিবেচনায় হাসপাতালের বিল পরিশোধ করে শিশুটিকে তার মা-বাবার কাছে ফিরিয়ে দেওয়ার উদ্যোগ নেই। শিশুটিকে সম্পূর্ণ সু¯’ অব¯’ায় মা-বাবার কাছে ফিরিয়ে দেবার মত মানবিক কাজ করতে পেরে অত্যন্ত অনন্দিত ও পেশাগত কাজের পাশাপাশি ভবিষ্যতেও এমন মানবিক কাজ অব্যাহত রাখবো। শিশুটির মা-বাবা বলেন, ‘আমাদের আর্থিক অবস্থা খুব খারাপ। কিছুতেই বিল পরিশোধ করার টাকা জুগার করতে পারি নাই। তাছাড়া দুদিন আগে শিশুটির নানি মারা গেছে। নিরুপায় হয়ে আমরা এ কাজ করেছি। সিদ্ধিরগঞ্জ থানার ওসি আমাদেরকে মোবাইল ফোনে আশ্বস্থ করে আজ সন্তানকে আমাদের কাছে ফিরিয়ে দিয়েছেন। পুলিশ হাসপাতালের বিল পরিশোধের পাশাপাশি বাচ্চাটিকে লালন-পালন করার জন্য কিছু টাকা দিয়েছেন। আমাদের এ উপকার করায় সিদ্ধিরগঞ্জ থানা পুলিশের প্রতি আমরা চিরকৃতজ্ঞ।’ বাংলাদেশ নবজাতক হাসপাতালের ম্যানেজার মোশাররফ হোসেন বলেন, গত ২৯ জুলাই শিশুটিকে আমাদের হাসপাতালে ভর্তি হয়। একটানা ২৪ দিন ডা. মজিবুর রহমানের তত্ত্বাবধানে এনআইসিইউতে ছিল। আস্তে আস্তে বাচ্চাটি সুস্থ হয়ে উঠে। তখন বিল পরিশোধ করে বাচ্চাটিকে নিয়ে যেতে বলি। কিন্তু বাচ্চাটির মা-বাবা উধাও হয়ে যায়। তখন বিষয়টি পুলিশকে জানাই।’