এলসি জটিলতার কারণে বাজারে এলপি গ্যাসের সংকটের শঙ্কা করা হচ্ছে। আমদানিনির্ভর এই পণ্যটি বর্তমানে পূর্বের মজুত থেকে অনেক কোম্পানি সরবরাহ করছেন। সরবরাহ অব্যাহত থাকলেও শিগগিরই নতুন পণ্য আমদানি করতে না পারলে বাজারে সংকট দেখা দিতে পারে বলে সংশ্লিষ্টরা মনে করছেন। জ্বালানি ও খনিজ সম্পদ বিভাগের সূত্রে জানা যায়, বাংলাদেশে এলপি গ্যাসের বাজারের ২২ শতাংশ নিয়ন্ত্রণ করছে বসুন্ধরা গ্রুপ। কোম্পানিটি গত জুলাই মাসে আমদানির লক্ষ্যমাত্রা ৭০ শতাংশ পূরণ করতে পেরেছে। এলসি জটিলতার কারণে আমদানির লক্ষ্যমাত্রা পূরণ করতে পারেনি। এলপি গ্যাসের বাজারের আরেক বড় প্রতিষ্ঠান বেক্সিমকো জুলাইয়ের শেষ দিকে গ্যাস সরবরাহ দিতে ব্যর্থ হয়েছে। অন্যান্য কোম্পানিও আমদানির লক্ষ্যমাত্রা পূরণ করতে পারেনি। মজুদ থেকে সরবরাহ করে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণ করা কঠিন। বাজারে এলপি গ্যাস সরবরাহ স্বাভাবিক থাকলেও বাংলাদেশ এনার্জি রেগুলেটরি কমিশনের নির্ধারিত দরে কোথাও বেচাকেনা হচ্ছে না। বিইআরসি নির্ধারিত সর্বোচ্চ খুচরা মূল্য ১১৪০ টাকার থেকেও কোম্পানিই বেশি দাম নিচ্ছে ক্ষেত্র বিশেষে। চলতি আগস্টে বিইআরসি সর্বোচ্চ খুচরা মূল্য ১১৪০ টাকা নির্ধারণ করেছে। এতে খুচরা বিক্রেতার ৩৮ টাকা এবং ডিস্ট্রিবিউটরের ৩৪ টাকা কমিশন রাখা হয়েছে। রংপুর সিও বাজারের খুচরা বিক্রেতা রহমত বলেন, গত সপ্তাহে ১২ কেজির সিলিন্ডার ওমেরা ১১৮০ টাকা, নাভানা ১১৭০ টাকা ও বিএম ১১৫০ টাকা দিয়ে কিনেছি। নীলফামারীর জলঢাকার আরিফ হোসেন বলেন, বিইআরসি নির্ধারিত দরে এলপি গ্যাস কিনতে পাওয়া যাচ্ছে না। তাই নির্ধারিত দরে বেচা সম্ভব নয়।
এলপিজি ডিস্ট্রিবিউটরদের সংগঠনের সভাপতি মো. সেলিম খান বলেছেন, আমি ওমেরা গ্যাসের ডিস্ট্রিবিউটর। আমাকে কিনতে হচ্ছে ১১৩০ টাকা দিয়ে। অথচ দাম ১১০০ টাকার কম হওয়ার কথা। আমার মনে হয় বিইআরসির কোম্পানিগুলোকে চাপ দেয়া উচিত। বাংলাদেশ এনার্জি রেগুলেটরি কমিশনের চেয়ারম্যান মো. নুরুল আমিন জানান, আমরা এলপিজি আমদানিকারকদের সঙ্গে বৈঠকে বসেছিলাম। সেখানে বসুন্ধরা ও বেক্সিমকোর পক্ষ থেকে এলসি জটিলতার কথা জানানো হয়। আমরা তাদের বলেছি, লিখিত আবেদন দিতে। লিখিত আবেদন এখনো পাইনি, লিখিত পেলে সংশ্লিষ্টদের সঙ্গে কথা বলে নিরসনের ব্যবস্থা নেওয়া হবে। তিনি আরও বলেন, অন্যান্য আমদানিকারকদের কাছে এলপি গ্যাসের মজুদ রয়েছে। যে কারণে সংকটের শঙ্কা দেখছি না। আমদানি জটিলতা দীর্ঘ হলে সংকটের শঙ্কা থেকেই যায়।