রাজনৈতিক প্রতিবেদকঃ আওয়ামী লীগের শাষন আমল দীর্ঘ থেকে দীর্ঘতম হচ্ছে, এখন আন্দোলনের মাঠে বিএনপি প্রস্তুত হচ্ছে সরকার পতনের। গত তিন টার্ম ধরে বিএনপি কেন্দ্রীয় কমিটি থেকে ধরে মাঠ পর্যায়ের সকল কমিটি গঠন প্রক্রিয়ায় বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমানের নির্দেশনায় খুব সতর্ক নেতারা। একদিকে যাতে কমিটিতে সরকারের কোন এজেন্ট ঢুকতে না পারে তেমনি নিষ্ক্রিয় কেউ টাকা দিয়ে কমিটিতে পদ বাগিয়ে নিতে না পারে তাই এই সতর্কতা।
এর পরেও কমিটি ঘোষণা নিয়ে বিভিন্ন সময় আর্থিক লেনদেনের অভিযোগ ওঠে। এ অভিযোগ মূলত নিচের সাড়ির নেতাদের বিরুদ্ধে উঠলেও উত্তরা পশ্চিম থানা বিএনিপিতে এর ব্যতিক্রম লক্ষ্য করা গেছে। উত্তরা পশ্চিম থানা বিএনপির সাবেক আহবায়ক আফাজ উদ্দিন আফাজের বিরুদ্ধে পদ কেনাবেচার অভিযোগ উঠছে।
অভিযোগ রয়েছে, তিনি টাকা দিয়ে পদ বিক্রির ব্যাপারটিতে আগের চেয়ে বেশি জোর দিয়েছেন। আর এই কাজ করতে আফাজ ব্যবহার করছেন বিএনপি মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীরের ইমেজ। কথায় কথায় আফাজ প্রচার করেন মহাসচিব তার পকেটে, সে যা বলবে তাই মহাসচিবের কথা এমন সব কথাও বলতে শুনা যায় তাকে।
এসব করতে গিয়ে আফাজ মহানগর বিএনপির নেতাদের এড়িয়ে কেন্দ্রিয় নেতাদের কাছে তদবির করে ও নানা ছলছাতুরি করে অযোগ্য ও আওয়ামী ঘরানার অনেককেও পাইয়ে দিয়েছেন পদ। তুরাগ থানা বিএনপির সদ্য বিদায়ি কমিটির সিনিয়র সহ সভাপতি ছিলেন আব্দুস সালাম। মহানগর নেতারা এবারের উত্তরা পশ্চিম থানা কমিটিতে তাকে রাখতে সুপারিশ করেছিলো আফাজকে, কিন্তু কথায় ও কাজে আফাজ স্পষ্টত তা ডিনাই করে সে নিজ এলাকা তুরাগ এলাকার নিজস্ব বলয়ের লোকদের দিয়ে কমিটি গঠনের প্রক্রিয়া চলমান রাখে। আব্দুস সালামকে কমিটিতে না রাখতে পশ্চিম থানা বিএনপি নেতাদের দিয়ে লিখিত অভিযোগ ও আমান উল্লাহ আমানের বাসায় গিয়েও তদবির করেন।
সেই আফাজ নতুন কমিটি হবার ৬/৭ মাস পর আবার সেই সালামের কাছ থেকেই মোটা অংকের টাকা খেয়ে চলতি কমিটি ভেঙ্গে সালামকে আহবায়ক করতে জোর তদবির শুরু করেছে। এমনকি মহানগর নেতাদের উপর চাপ প্রয়োগ করার ও চেষ্টা করছে আফাজ। সালামের সাথে সাথে তুরাগ থেকে লোক আমদানি করে উত্তরা পশ্চিম থানা বিএনপি সাজাতে তার অপচেষ্টা চোখে পড়ার মত।
নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক এক নেতা বলেন, আফাজ ভাই এক সময় আমার আইডল ছিলো, তাকে দেখেই বিএনপির রাজনীতি করা শুরু করেছি। সেই আফাজ ভাই-ই এখন নীতি হারিয়ে ফেলেছেন যা দুঃখজনক, তিনি আগের কমিটিতে ও সামনে যে কমিটি করতে চাচ্ছেন তাতে মাদক ব্যবসায়ি, রিকশা চালক, গ্যারেজ মালিক, মিস্ত্রি, কন্ট্রাক্টর থেকে নিয়ে অরাজনৈতিক ও অযোগ্য লোকদের নিয়ে করেছেন এবং পুনরায় করার অপচেষ্টা চালাচ্ছেন। তাতে যদি তিনি সফল হন তাহলে আর সামনের আন্দোলন সংগ্রামে পশ্চিম থানা বিএনপিকে রাজপথে দেখা যাবেনা।
নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক আরেক নেতা জানান, আফাজ উদ্দিন আফাজ এখন কাউকে তোয়াক্কা করেন না। তিনি উত্তরার বিএনপিকে তার পৈত্রিক সম্পদ মনে করছেন। মহাসচিবের নাম বেচে আফাজ হেন কোন আপকর্ম নেই যা তিনি করছেন না। পুলিশি হয়রানি ও হামলা মামলা থেকে বাচতে আওয়ামীলীগের নেতাদের সাথে যেমন লিয়াজো করে চলেন তেমনি নানা সুবিধা নিয়ে কারো সাথে পরামর্শ না করেই সাবেক পুলিশ প্রধান বেনজির আহমেদ এর উত্তরার সম্পদ দেখাশোনা ও ক্যাশিয়ার এর দায়িত্বে থাকা মোঃ আলিকে উত্তরা পশ্চিম থানা বিএনপির আহবায়ক কমিটির যুগ্ম আহবায়ক করেছেন। এই আলীর এর আগে ছিলোনা কোন রাজনৈতিক পরিচয়।
এই নেতা সবশেষে বলেন, এখনি যদি আফাজের এসব অপকর্ম বন্ধ করা না যায় তাহলে ঢাকার প্রবেশপথ ও আন্দোলনের অন্যতম পয়েন্ট উত্তরায় বিএনপির রাজনীতি ধ্বংস হয়ে যাবে।