মানুষের উপহাস-বিদ্রুপ আর সমালোচনাকে পাত্তাই দেননি। বয়সও বাধা হয়নি মোমিন মেম্বারের। অনেক ঘাত-প্রতিঘাত আর কষ্টকে তাড়িয়ে পাস করেছেন স্বপ্নের মেট্রিক। ৪৫ বছর বয়স হলেও ছেলের বয়সীদের সঙ্গে বসে পরীক্ষা দিয়েছিলেন তিনি। এবারের এসএসসি পরীক্ষায় অংশ নিয়ে শুধু পাসই নয়, পেয়েছেন জিপিএ-৫।
বলছিলাম সিরাজগঞ্জের কাজিপুর উপজেলার শুভগাছা ইউনিয়ন পরিষদের সদস্য মো. আব্দুল মোমিনের কথা।
সোমবার (২৮ নভেম্বর) এসএসসি পরীক্ষার ফল প্রকাশের পর এক প্রতিক্রিয়ায় ঢাকা মেইলকে মোমিন মেম্বার বলেন, আমি এসএসসি পাস করেছি, আলহামদুলিল্লাহ। এখন এইচএসসিতে ভর্তি হবো। এরপর ডিগ্রি পাস করব।
রায়গঞ্জের একটি কারিগরি শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান থেকে জিপিএ-৫ পেয়ে পাস করেছেন মোমিন। তবে কোন শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান থেকে পাস করেছেন বিষয়টি জানাতে অস্বীকৃতি জানিয়ে আব্দুল মোমিন বলেন, ১৯৯১ সালে যমুনা নদীতে আমাদের গ্রাম ভেঙে যাওয়ার পর আর স্কুলে যাওয়া হয়নি। এরপর আমি টানা তৃতীয়বার ইউপি সদস্য নির্বাচিত হয়েছি। গ্রামের মানুষ আমাকে ভালোবেসে বারবার নির্বাচত করছে। কিন্তু আমি পড়ালেখা করতে পারিনি বলে কিছু মানুষ আমাকে নিয়ে উপহাস করে। যে কারণেই এই বয়সে আবার লেখাপড়া শুরু করি। আমি পাস করেছি এটাই বড় কথা।’
তিনি এইচএসসিতে ভর্তি হবেন এবং ডিগ্রি পাস করার ইচ্ছা তার আছে জানিয়ে বলেন, বয়স কোনো বিষয় না। আমি এই বয়সে নিজেও লেখাপড়া করছি, পড়াশোনা করতে অন্যদেরও উৎসাহিত করি। আমার ইচ্ছা আছে আরও এগিয়ে যাওয়ার।
এ বিষয়ে শুভগাছা ইউনিয়ন পরিষদ চেয়ারম্যান মো. গিয়াস উদ্দিন জানান, টানা তিনবার ইউপি সদস্য বিজয়ী হয়ে এখন পরিষদে দায়িত্ব পালন করছেন আব্দুল মোমিন। তিনি এসএসসি পরীক্ষা দিয়েছেন, বিষয়টি আমার জানা ছিল না। আজকে শুনলাম তিনি জিপিএ-৫ পেয়ে পাস করেছেন। আমরা পরিষদের পক্ষ থেকে তাকে অভিনন্দন।
প্রসঙ্গত, আব্দুল মোমিন টানা তৃতীয়বারের মতো বিপুল ভোটে ইউনিয়ন পরিষদ সদস্য নির্বাচিত হন ২০২০ সালের ৬ জানুয়ারি।