টাঙ্গাইলের মির্জাপুরে বাঁশতৈল পুলিশ ফাঁড়ি হাজতে লেবু মিয়া নামে এক আসামি গলায় ফাঁস দিয়ে আত্মহত্যা করেছেন বলে জানিয়েছেন মির্জাপুর থানার অফিসার ইনচার্জ শেখ আবু সালেহ মাসুদ করিম। মৃতের বাবার নাম বাহার উদ্দিন। গ্রামের বাড়ি বাঁশতৈল গ্রামে।
এদিকে লেবুর পরিবার অভিযোগ করেছে, তাকে বাঁশতৈল পুলিশ ফাঁড়ির ইনচার্জ সাকাওয়াত হোসেনসহ পুলিশ সদস্যরা নির্যাতন করে মেরে ফেলেছেন। বিষয়টি ধামাচাপা দেওয়ার জন্য লাশ আত্মহত্যা বলে চালিয়ে দেওয়ার চেষ্টা করছেন। তারা ঘটনার সুষ্ঠু তদন্ত করে দোষীদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়ার জোর দাবি জানিয়েছেন।
পুলিশ সূত্রে জানা গেছে, সোমবার (২৬ সেপ্টেম্বর) টাঙ্গাইলের মির্জাপুর উপজেলার ১৩ নম্বর বাঁশতৈল ইউনিয়নের বাঁশতৈল পশ্চিমপাড়া গ্রাম থেকে এক নারীর লাশ উদ্ধার করা হয়। মৃতের নাম সখিনা বেগম। তিনি স্বামী পরিত্যক্তা ছিলেন। তার সাবেক স্বামীর নাম মফিজ উদ্দিন। ৮-১০ বছর আগে স্বামীর সঙ্গে ছাড়াছাড়ি হলে বাঁশতৈল পশ্চিমপাড়া গ্রামে এক ছেলে ও দুই মেয়ে নিয়ে সখিনা বসবাস করতেন। ছেলে মালেশিয়া প্রবাসী। তার দুই মেয়ে বিয়ে হয়ে যাওয়ায় ছেলের বৌ নিয়ে বাড়িতে থাকতেন। গত দুই-তিন দিন আগে ছেলের বৌ তার বাবার বাড়ি যান। এই সুযোগে রোববার (২৫ সেপ্টেম্বর) রাতে অজ্ঞাতরা তার ঘরে ঢুকে পরিকল্পিতভাবে হত্যা করে বাহিরে তালা ঝুলিয়ে চলে যায়।
এদিকে, সোমবার দুপুর পর্যন্ত সখিনা বেগমের সন্ধান না পেয়ে আশেপাশের লোকজনের সন্দেহ হয়। পুলিশকে খবর দিলে বাড়িতে গিয়ে তার লাশ উদ্ধার করা হয়। এঘটনায় পুলিশ সাবেক স্বামী মফিজ উদ্দিন এবং প্রতিবেশী লেবু মিয়াকে জিজ্ঞাসাবাদের জন্য আটক করে বাঁশতৈল পুলিশ ফাঁড়িতে নিয়ে আসে। এদিকে মঙ্গলবার ভোর ৫টার দিকে পুলিশ ফাঁড়ি হাজতে লেবু মিয়া গলায় ফাঁস দিয়ে আত্মহত্যা করে বলে পুলিশ জানায়।
লেবু মিয়ার ভাই বজলুর রশিদ বলেন, ‘আমার ভাই লেবুকে বাঁশতৈল পুলিশ ফাঁড়ি ইনচার্জ মো. সাকাওয়াত হোসেন এবং পুলিশ উপ-পরিদর্শক নেছার উদ্দিন থানায় নির্যাতন করেছে। আমার ভাইকে তারা পরিকল্পিতভাবে হত্যা করে আত্মহত্যা বলে চালিয়ে দিয়েছে। এর বিচার চাই।’
এ ব্যাপারে বাঁশতৈল পুলিশ ফাঁড়ির ইনচার্জ মো. সাকাওয়াত হোসেন বলেন, ‘ফাঁড়ি হাজতে লেবু মিয়া গলায় ফাঁস দিয়ে আত্মহত্যা করেছেন। বিস্তারিত পরে জানানো হবে।’