করোনায় শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান বন্ধ থাকার পরও টিউশন ফির বিষয়ে ছাড় পাননি অভিভাবকরা। তবে টিউশন ফি ছাড়া অন্য কোনো খাতে টাকা নিতে পারবে না শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান কর্তৃপক্ষ। যেমন—পুনঃভর্তি, গ্রন্থাগার, বিজ্ঞানাগার, ম্যাগাজিন ফির মতো আনুষঙ্গিক ফি আদায় করতে পারবে না। এরই মধ্যে শিক্ষার্থীদের কাছ থেকে কোনো প্রতিষ্ঠান এসব ফি আদায় করে থাকলে তা ফেরত দিতে হবে বা টিউশন ফির সঙ্গে তা সমন্বয় করতে হবে। আর করোনা পরিস্থিতিতে কোনো অভিভাবক চরম আর্থিক সংকটে থাকলে তাঁর সন্তানের টিউশন ফির ব্যাপারে শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান কর্তৃপক্ষকে বিশেষ বিবেচনা করতে হবে।
গতকাল বুধবার মাউশি অধিদপ্তর থেকে করোনাকালে শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানগুলোর টিউশন ফি নিয়ে এক নির্দেশনা জারি করা হয়। অধিদপ্তরের মহাপরিচালক অধ্যাপক ড. সৈয়দ মো. গোলাম ফারুক এই নির্দেশনায় স্বাক্ষর করেন।
নির্দেশনায় বলা হয়, মাধ্যমিক ও উচ্চশিক্ষা অধিদপ্তরের এমপিওভুক্ত ও নন-এমপিওভুক্ত শিক্ষা-প্রতিষ্ঠানগুলো শিক্ষার্থীদের কাছ থেকে টিউশন ফি গ্রহণ করবে। কিন্তু অ্যাসাইনমেন্ট, টিফিন, পুনঃভর্তি, গ্রন্থাগার, বিজ্ঞানাগার, ম্যাগাজিন ও উন্নয়ন বাবদ কোনো ফি গ্রহণ করতে পারবে না। এরই মধ্যে গ্রহণ করা হলে তা ফেরত দেবে অথবা তা টিউশন ফির সঙ্গে সমন্বয় করবে। এ ছাড়া অন্য কোনো ফি যদি অব্যয়িত থাকে তা একইভাবে ফেরত দিতে হবে বা টিউশন ফির সঙ্গে সমন্বয় করতে হবে। আর যদি কোনো অভিভাবক চরম আর্থিক সংকটে পড়েন, তাহলে তাঁর সন্তানের টিউশন ফির বিষয়টি শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান কর্তৃপক্ষ বিশেষ বিবেচনায় নেবে। কোনো শিক্ষার্থীর শিক্ষাজীবন যেন ব্যাহত না হয় সে বিষয়ে যত্নশীল হতে হবে।
নির্দেশনায় আরো বলা হয়, ২০২১ সালের শুরুতে যদি করোনা পরিস্থিতি স্বাভাবিক না হয়, তাহলে শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানগুলো শিক্ষার্থীদের কাছ থেকে এমন কোনো ফি যেমন—টিফিন, পুনঃভর্তি, গ্রন্থাগার, বিজ্ঞানাগার, ম্যাগাজিন, উন্নয়ন খাতে কোনো টাকা নিতে পারবে না। তবে পরিস্থিতি স্বাভাবিক হলে ফের আগের মতো সব ধরনের যৌক্তিক ফি নেওয়া যাবে।
করোনাকালে টিউশন ফি কমানোর দাবিতে সোচ্চার ছিলেন অভিভাবকরা। এ নিয়ে অভিভাবকরা মানববন্ধন, সংবাদ সম্মেলনও করেছেন। তাঁদের দাবি ছিল, পুরো বছরে অর্ধেক টিউশন ফি নেওয়া। মাউশি অধিদপ্তরের এই নির্দেশনায় খুশি হতে পারেননি অভিভাবকরা। তাঁরা বলছেন, একদিকে স্কুল বন্ধ ছিল, অন্যদিকে করোনার এই সময়ে তাঁরা আর্থিক ক্ষতির সম্মুখীন হয়েছেন। এ কারণে তাঁদের পক্ষে পুরো টিউশন ফি দেওয়া সম্ভব নয়।
অন্যদিকে শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান কর্তৃপক্ষ বলছে, প্রতিষ্ঠান বন্ধ থাকলেও শিক্ষক-কর্মচারীদের বেতন এবং স্কুল রক্ষণাবেক্ষণ খাতে প্রতি মাসে তাদের নির্দিষ্ট পরিমাণ অর্থ ব্যয় করতে হচ্ছে। অনেক স্কুল নিয়মিতভাবে অনলাইনে ক্লাসও গ্রহণ করেছে।