গোয়েন্দা সংস্থার রিপোর্টের ভিত্তিতে দেশের ৫০টি অনলাইন গণমাধ্যমকে প্রথমে নিবন্ধন দেয়া হবে বলে জানিয়েছেন তথ্যমন্ত্রী ড. হাছান মাহমুদ। ঈদের পর এসব অনলাইন গণমাধ্যম নিবন্ধন ফি জমা দেয়াসহ প্রক্রিয়া অনুসরণ করে নিবন্ধন নিতে পারবে। গতকাল বৃহস্পতিবার সচিবালয়ে এ কথা জানান তিনি। এছাড়া যেসব অনলাইন গণমাধ্যমের ব্যাপারে নেতিবাচক রিপোর্ট পাওয়া গেছে তাদের নিবন্ধন না দেয়ার সিদ্ধান্ত হয়েছে বলেও জানান তথ্যমন্ত্রী। তথ্যমন্ত্রী বলেন, আমরা দীর্ঘদিন ধরে বলে আসছিলাম যে অনলাইনগুলোর রেজিস্ট্রেশন দেয়া হবে। নিবন্ধন দেয়ার জন্য আমরা দেশের গোয়েন্দা সংস্থাগুলোকে সবগুলো অনলাইনের ব্যাপারে তদন্তের দায়িত্ব দিয়েছিলাম। তারা অনেকগুলো অনলাইনের ব্যাপারে রিপোর্ট দিয়েছে। আমরা বলেছিলাম ঈদের আগে অনলাইনগুলো রেজিস্ট্রেশনের ব্যাপারে ঘোষণা দেব। তিনি বলেন, ইতোমধ্যে অনেকগুলো অনলাইনের ব্যাপারে রিপোর্ট পেয়েছি। আপাতত ৫০টি অনলাইনের ব্যাপারে পজিটিভ রিপোর্ট পেয়েছি। সেগুলো আজ রাতে ওয়েবসাইটে আপলোড হবে। তারা নির্দিষ্ট ফি জমা দিয়ে ঈদের পর রেজিস্ট্রেশন করে নেবে বলে জানান তিনি। ড. হাছান মাহমুদ বলেন, আরও অনেক অনলাইনের ব্যাপারে নেগেটিভ রিপোর্ট এসেছে, যাদের ব্যাপারে নেগেটিভ রিপোর্ট এসেছে তাদের জানিয়ে দেয়া হবে। আজকে অবাধ তথ্য প্রবাহের যুগে যখন দেশ ডিজিটাল হয়েছে, তখন ইন্টারনেট ব্যবহারকারীর সংখ্যা সাড়ে ১০ কোটি ছাড়িয়ে গেছে। মানুষ ব্যাপকভাবে ইন্টারনেটের মাধ্যমে অনলাইন পত্রিকাগুলো পড়ে। তিনি বলেন, প্রায়ই দেখতে পাই, কারো কারো, সবার ক্ষেত্রে নয়; সবার আগে সর্বশেষ সংবাদ পরিবেশন করার যে প্রতিযোগিতা সেটি করতে গিয়ে অনেক সময় ভুল সংবাদ পরিবেশিত হয়, অনেক সময় অসত্য সংবাদ পরিবেশিত হয়। একই সাথে আমরা দেখেছি বিভিন্ন সময়ে কিছু অনলাইন পোর্টাল উদ্দেশ্যপ্রণোদিতভাবে গুজব সন্ত্রাসী কাজে লিপ্ত হয়। অনেকের চরিত্র হনন এবং সাম্প্রদায়িক উসকানি দেয়ার কাজে লিপ্ত হয়। এ বিষয়গুলো মাথায় রেখেই তদন্ত করা হয়েছে জানিয়ে মন্ত্রী বলেন, যারা এগুলো করেছেন তাদের ব্যাপারে সেই ধরনের রিপোর্টই এসেছে। সেই রিপোর্টের ভিত্তিতেই আমরা রেজিস্ট্রেশনের কাজ করছি। তথ্যমন্ত্রী আরও বলেন, ওয়েবসাইটে অনেকগুলো প্রতিষ্ঠিত অনলাইনের নাম হয়তো দেখা যাবে না, তাদের ব্যাপারে রিপোর্ট নেগেটিভ তা নয়, কিন্তু এটি চলমান প্রক্রিয়া, যেহেতু তাদের ব্যাপারে আমরা এখনও রিপোর্ট পাইনি সেজন্য তাদের নামগুলো হয়তো আজকে আপলোড হবে না। প্রতিষ্ঠিত অনলাইনগুলোর ব্যাপারে রিপোর্ট এলে তারা সবাই রেজিস্ট্রেশন করতে পারবেন। তিনি বলেন, এজন্য কারো কারো নাম বাদ পড়লে হতাশ হওয়ার কোনো কারণ নেই। কারণ, সাড়ে তিন হাজারের মধ্যে মাত্র ৫০টির আজকে নাম আপলোড হবে। আরো অনেকগুলো ধীরে ধীরে আপলোড হবে, এটি একটি চলমান প্রক্রিয়া। এগুলো করতে আমাদের কয়েক মাস সময় লাগবে। অবাধ তথ্যপ্রবাহের যুগে অনলাইনগুলো গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করছে এবং মানুষের হাতে হাতে সংবাদ পরিবেশনে বিরাট ভূমিকা পালন করছে। এটি একটি বড় ইতিবাচক দিক। সব অনলাইনকে দেশ গঠনে কাজ করার আহ্বান জানান তথ্যমন্ত্রী। অন্যদের সংশোধন করে নিতে বলেন তথ্যমন্ত্রী। তিনি বলেন, যদি সবাই চায় তাহলে নেগেটিভ নামগুলো প্রকাশ করা হবে। যাদের নেগেটিভ রিপোর্ট এসেছে তাদের ব্যাপারে ব্যবস্থা নেয়া হবে এবং বন্ধ করাও একটা ব্যবস্থা, তাদের বন্ধ করাটাও শুরু হবে। বাছাইয়ের ক্ষেত্রে কোনো রাজনৈতিক প্রভাব কাজ করেনি দাবি করে তথ্যমন্ত্রী বলেন, কোনো বিবেচনা, কোনো সুপারিশ কাজ করেনি।