চট্টগ্রাম রাঙ্গুনিয়া উপজেলাধীন ৬নং পোমরা ইউনিয়নস্থ “খা মসজিদ” একটি ঐতিহ্যবাহী মসজিদ। এ মসজিদের ব্যবস্থাপনায় মোতোয়াল্লী পরিবারকে অবজ্ঞা, অবহেলা, লাঞ্চিত করে চর দখলের মতো মসজিদ দখল করে নেয় আওয়ামী ফ্যাসিবাদের দোসর ভোটবিহীন চেয়ারম্যান জহির আহমদ চৌধুরী, তার ছেলে জাহেদুল ইসলাম চৌধুরী আইয়ুব, আবদুস সাত্তারসহ আরো ৯/১০ জন অসাধু স্বার্থান্বেষী ব্যক্তি। তাদের অবৈধ দখলদারিত্বের অবসান ঘটিয়ে মোতোয়াল্লী পরিবারের নিকট মসজিদ পরিচালনার দায়িত্ব হস্তান্তরে প্রশাসনের হস্তক্ষেপ কামনা করে সংবাদ সম্মেলন করেছে আজল উদ্দীন ওয়াকফ এস্টেট মোতোয়াল্লী পরিবার। গতকাল বুধবার সকাল ১১টায় দৈনিক আজাদীর হলরুমে খাঁ মসজিদ মোতোয়ালী দ্বারা পরিচালনার দাবিতে এই সংবাদ সম্মেলন অনুষ্ঠিত হয়। সংবাদ সম্মেলনে লিখিত বক্তব্য পাঠ করেন মোতোয়াল্লী পরিবারের পক্ষে মোহাম্মদ মাহামুদুর রহমান খতিব, হাফেজ আবদুল করিম, মোহাম্মদ আবদুল ছবুর, মোহাম্মদ হারুন, হামিদুর রহমান, মোহাম্মদ খোরশেদ আলম ও আবদুল মান্নান। সংবাদ সম্মেলনে জানানো হয়, মরহুম আজল উদ্দিন খতিবেন মৃত্যুর পর তার পুত্র আব্দুর শুক্কুর খতিব মোতোয়াল্লী নিযুক্ত হন। তাঁর মৃত্যুর পর স্বীয় ০২ পুত্র যথাক্রমে হাফেজ মাওলানা মমতাজুর রহমান খতি ও আলহাজ্ব আবদুল ছোবহান খতিব আইনগতভাবে যুগ্ম মোতোয়াল্লী নিযুক্ত হয়ে মসজিদ পরিচালনা করে আসছিলেন। এ দুই মোতোয়াল্লী দায়িত্বে থাকাকালীন পাকা মসজিদ নির্মাণের প্রক্রিয়া শুরু করলে প্রতিপক্ষগণ ক্ষমতার অপব্যবহার ও লোভের বশবর্তী হয়ে মোতোয়াল্লীদ্বয়কে মসজিদ নির্মাণ কাজে বাধা প্রদান করে। এ বিষয়ে বিজ্ঞ ওয়াকফ প্রশাসককে অবহিত করলে বিগত ২৯ মার্চ ১৯৮৬ সালে ৪৮৬ নং মেমো মূলে প্রতিপক্ষ মসজিদ দখলদারদের বিরুদ্ধে আইনের আশ্রয় নেয়ার লিখিত আদেশ প্রদান করে। এ নির্দেশের প্রেক্ষিতে মাননীয় ১ম সিনিয়র সহকারী জজ আদালত চট্টগ্রামে ঘোষণা ও নিষেধাজ্ঞা মোকদ্দমা দায়ের করিলে আদালত বিবাদী গংদের বিরুদ্ধে অন্তর্বর্তীকালীণ নিষেধাজ্ঞার আদেশ জারি করেন। নিষেধাজ্ঞার পেক্ষিতে বিগত ৩১ জানুয়ারি ১৯৯৩ ইং ইসি নং ১৩৮৪ মূলে আজল উদ্দিন ওয়াকফ এস্টেটে দুই জন মোতোয়াল্লী নিযুক্ত থাকাসত্বেও বেআইনীভাবে কমিটি গঠনের নির্দেশ দেন। এ নির্দেশের বিরুদ্ধে যুগ্ম মোতোয়াল্লীগণ জেলা জজ আদালতে মিস আপিল ৫৫/৯৩ইং মূলে শুনানি শেষে অতিরিক্ত জো জজ আদালতের ১নং কোর্ট বিগত ১৯ জুন ২০০৪ সালে উক্ত আদেশ বেআইনী ঘোষণা করে রায় প্রদান করে। এ রায়ের বিরুদ্ধে প্রতিপক্ষগণ আপিল নং ৮/০৪ মূলে খারিজ হয়। পরবর্তীতে কমিটি পক্ষে আবারো আপিল করলে উভয়পক্ষের শুনানি শেষে আপিল নং ০৭/২০০৭ মূলে বিবাদি গংদের বিরুদ্ধে বিগত ০৭ জুলাই ২০১৩ খারিজ করে দেন। উল্লেখ থাকে যে, আদালত কর্তৃক বিভিন্ন সময়ে ঘোষিত রায়সমূহ মোতোয়াল্লী পরিবারের পক্ষে গেলেও প্রতিপক্ষ গং পেশিশক্তি ব্যবহার করে জোরপূর্বক উক্ত ওয়াকফ এস্টেটের কার্যক্রম পরিচালনায় বাধা প্রদান করেন। মোতোয়াল্লী পরিবারের সদস্যরা ওয়াকফ এস্টেট পরিচালনা ও মসজিদে নামায আদায় করতে এসে অবৈধ দখলদারদের কাছে লাঞ্ছিত হচ্ছে প্রতিনিয়ত। এ অবৈধ দখলদ্বাররা মসজিদ উন্নয়নের নামে হাট বাজারে দোকানে দোকানে দান বাক্স বসিয়ে লক্ষ লক্ষ টাকা তুলে আত্মসাৎ করে আসছে। গত ৫ আগস্ট ২০২৪ সন্ধ্যা আনুমানিক ৬.৩০ টায় আমিসহ মোতোয়াল্লী পরিবারের সদস্যরা সম্মিলিতভাবে ওয়াকফ এস্টেট পরিচালনায় আদালত কর্তৃক বিভিন্ন মোকদ্দমার রায় আমাদের পক্ষে আসার কথা প্রতিপক্ষের লোকজনদের অবহিত করে মজসিজদের দায়িত্ব বুঝিয়ে দিতে বললে তারা আমাদের প্রাণনাশের হুমকি প্রদান করে। তারা উদ্যত হয়ে আমার মরহুম পিতা হাফেজ মাওলানা মমতাজুর রহমান খতিবের কবরের সমাধিফলকে মোতোয়াল্লী ও নামটি কালো রঙ দিয়ে মুছে দেয়। মোতোয়াল্লী পরিবারের সদস্যদের জীবন ও জানমালের নিরাপত্তা সুষ্ঠ তদন্তসাপেক্ষে অবৈধ দখলদারদের বিরুদ্ধে আইনানুগ ব্যবস্থা গ্রহণ করে তাদের হাত থেকে ঐতিহাসিক খাঁ মসজিদকে রক্ষার জোর দাবি জানানো হয় সংবাদ সম্মেলনে।