গত বছরের ৩১ ডিসেম্বর পর্যন্ত ১ হাজার ৬০০ এর বেশি গুমের অভিযোগ পেয়েছে গুম সংক্রান্ত কমিশন অফ ইনকোয়ারি। এর মধ্যে ৩৮৩টি ঘটনা তদন্তে সর্বাধিক ১৭২টি গুমের অভিযোগ পাওয়া গেছে এলিট ফোর্স র্যাবের বিরুদ্ধে।
আজ মঙ্গলবার গুলশানে গুমসংক্রান্ত কমিশন অফ ইনকোয়ারি কার্যালয়ে আয়োজিত সংবাদ সম্মেলনে এ তথ্য জানান হাইকোর্টের অবসরপ্রাপ্ত বিচারপতি মইনুল ইসলাম চৌধুরী। তিনি অনুসন্ধান কমিশনের সভাপতি। এ সময় কমিশনের অপর সদস্যরা উপস্থিত ছিলেন।
সংবাদ সম্মেলনে জানানো হয়, ৩৮৩টি ঘটনার মধ্যে পুলিশের বিরুদ্ধে ২৫ টি, সিটিটিসির বিরুদ্ধে ৩৭ টি, ডিবির বিরুদ্ধে ৫৫ টি, ডিজিএফআই’র বিরুদ্ধে ২৬টি এবং অন্যান্য ক্ষেত্রে ৬৮টি অভিযোগ পাওয়া গেছে। তবে বিজিবির বিরুদ্ধে এখন পর্যন্ত কোন অভিযোগ পাওয়া যায়নি। তদন্তের জন্য অভিযুক্তদের বিরুদ্ধে সমন জারি করা হচ্ছে।
২০০৯ সালের ৬ জানুয়ারি থেকে ২০২৪ সালের ৫ আগস্ট পর্যন্ত সময়ে জোরপূর্বক ঘুমের ঘটনায় এসব অভিযোগ জমা পড়েছে।
মইনুল ইসলাম চৌধুরী বলেন, ‘আমরা ১৪০ জন অভিযোগকারীর সাক্ষাৎকার নিয়েছি। ব্যক্তি, গোষ্ঠী, দলীয় স্বার্থে ও রাজনৈতিক উদ্দেশ্যে আইনশৃঙ্খলা বাহিনীকে ব্যবহার করায় এসব আয়না ঘরের সৃষ্টি হয়েছে। গুমের ঘটনাগুলো ঘটেছে।
আইন অনুযায়ী কাউকে গ্রেফতার করার ২৪ ঘণ্টার মধ্যে আদালতে হাজির করতে হয়। এক মামলায় ১৫ দিনের বেশি রিমান্ড দেওয়া যায় না। অথচ কোন রকম বিচার ছাড়া আট বছর আয়না ঘরে আটকে রাখার ঘটনা ঘটেছে। কাউকে গ্রেফতারের ক্ষেত্রে আপিল বিভাগের দেওয়া দশটি গাইডলাইন মানা হয়নি।’
সংবাদ সম্মেলনে জানানো হয়, গুমের ঘটনাগুলোর পেছনে মূলত চারটি কারণ পাওয়া গেছে। প্রথমত রাজনৈতিক কারণ, দ্বিতীয়ত জঙ্গি সন্দেহে, দ্বিতীয়টা ব্যবসায়িক কারণ ও পারিবারিক কারণ। এখন পর্যন্ত আটটি গোপন বন্দিশালা উদঘাটন করতে পেরেছে কমিশন। এমন বন্দিশালা পাওয়া গেছে যেখানে মাত্র সাড়ে তিন বাই চার ফিট কক্ষের মধ্যে বছরের পর বছর আটকে রাখা হয়েছে। ওই স্থানেই মলমূত্র, গোসল সবকিছু করতে হয়েছে।
অভিযুক্তদের বর্ণনা অনুযায়ী বন্দিশালায় গিয়ে অনেক আলামত ধ্বংসের নজির পাওয়া গেছে। পুরো দেয়াল ভেঙে ফেলা হয়েছে। এটা করতে গিয়ে আগের অভিযুক্ত কমান্ডিং অফিসারদের অপরাধের দায় বর্তমান কমান্ডিং অফিসারদের ঘাড়ে এসে পড়বে। তাদেরকে আলামত ধ্বংস না করার জন্য বলা হয়েছে।