রংপুরে নবনিযুক্ত অধ্যক্ষ ডা.মাহফুজারকে আওয়ামী লীগ দোসর সাব্যস্ত করে অপসারণ চক্রান্ত ও ড্যাব নেতাদের মনোনীতকে পদায়ন করতে বিক্ষোভ মিছিল,মানববন্ধন চলে। সেই সাথে সকল ধরনের প্রশাসনিক কাজ স্থগিত করার ঘোষনাও দিয়েছে রংপুর মেডিকেল কলেজের বৈষম্য বিরোধী চিকিৎসক,কর্মচারী ও ছাত্র-জনতা। লক্ষ্য করাগেছে, রংপুর মেডিকেল কলেজ বৈষম্য বিরোধী চিকিৎসক, কর্মচারী ও ছাত্র জনতার বিক্ষোভকালে ব্যবহৃত ব্যানারে লেখা দেখা যায় যে,স্পর্শকাতর ইস্যু এনে রংপুরের শহীদ আবু সাঈদের ময়না তদন্ত প্রতিবেদনে বিকৃতির অপচেষ্টাকারী, স্বৈরাচারের দোসর,ছাত্রলীগের পৃষ্ঠপোষক হিসেবে ডা. মাহফুজার রহমানকে আখ্যায়িত করা হয়। সেই সাথে অধ্যক্ষ ডা.অধ্যাপক সারোয়ার জাহানকে উপযুক্ত এবং গ্রহনযোগ্যও বলা হয়। এও বলা হয় ডা.মাহফুজার রহমান বিগত ফ্যাসিস্ট আওয়ামীলীগের দোসর বলেই বিগত ৫বছর যাবৎ টানা উপাধ্যক্ষ পদে আসীন ছিল। তাকে স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয় পদোন্নতি দিয়ে রংপুর মেডিকেল কলেজ এর অধ্যক্ষ পদে পদায়ন করায় হতাশা ব্যক্ত করেছে আন্দোলনকারীরা। ডা.শরিফুল ইসলাম মন্ডল বলেন,ডা.মাহফুজার রহমান আওয়ামী লীগ রাজনীতি করতেন। জুলাই আগস্ট বিপ্লবী আন্দোলনে তিনি সাধারণ ছাত্রদের পাশে ছিলেন না। তিনি আরও বলেন, তাকে অপসারণ করা না হলে ধারাবাহিক আন্দোলন চালিয়ে যাবো। সংবাদ সম্মেলনে রংপুর মেডিকেল কলেজ এর নবনিযুক্ত অধ্যক্ষ ডা.মাহফুজার রহমান বলেন, অন্তর্র্বতীকালীন সরকার আমার যাবতীয় যাচাই করে আমাকে উপযুক্ত বিবেচিত করে স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয় কর্তৃক পদোন্নতি ও পদায়ন করেছেন। বিগত সরকারের আজ্ঞাবহ হলে আমাকে অনেক আগেই অধ্যক্ষ হিসেবে পদায়ন করতো। প্রকৃতপক্ষে আমি স্বাস্থ্য শিক্ষা ও সেবায় নিজেকে সব সময় ব্যস্ত রাখায় কোনোদলের তল্পিতল্পার তোয়াক্কা করার সময় সুযোগ নেয়নি। ডা.মাহফুজার রহমান আরও বলেন, আমি যোগদান করার পর কলেজের অনেকেই ফুলেল শুভেচ্ছা জানিয়ে আসছিলো। তারা বিগত ফ্যাসিস্ট সরকারের রাজনৈতিক দোষর হিসেবে আমাকে মিথ্যা অভিযোগ দিয়ে মানববন্ধন ও মিছিল করেছে। তাদের অভিযোগ যে, আমি বিগত সরকারের দোষর এবং তারা আরো অভিযোগ করে যে, বৈষম্য বিরোধী ছাত্র আন্দোলনে নিহত বেগম রোকেয়া বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থী শহীদ আবু সাঈদের পোস্টমর্টেম রিপোর্ট বদলাতে চাপ প্রয়োগ করি। এগুলো সম্পূর্ণ বানোয়াট অভিযোগ যা ইতোমধ্যে প্রমাণিত হয়েছে। শহীদ আবু সাঈদের পোস্টমর্টেম করেছেন সহকারী অধ্যাপক ডাঃ মোঃ রাজিবুল ইসলাম এবং তিনি গণমাধ্যমে বক্তব্যে স্পষ্টভাবে বলেছেন যে, আমি সঠিক রিপোর্ট প্রদানে যে কোন চাপ মোকাবিলায় তাকে সহায়তার আশ্বাস দিয়ে পাশে থেকেছি। গত ৩০জুলাই,২০২৪ ইং তারিখে দেশ যখন উত্তপ্ত, বৈষম্যবিরোধী ছাত্রদের উপর যখন নিপীড়ন চলছিল, তখন বিগত আওয়ামী লীগ সরকার আমাকে তাদের বিরোধীপক্ষ বিবেচনায় নিয়ে রংপুর মেডিকেল কলেজের ভাইস প্রিন্সিপাল পদ থেকে সরিয়ে দিনাজপুর মেডিকেল কলেজে মেডিসিন বিভাগের অধ্যাপক হিসেবে বদলির আদেশ জারি করে। গত ৫ই আগস্ট,২০২৪ পরিবর্তিত প্রেক্ষাপটে বর্তমান সরকার দায়িত্ব গ্রহণের পর আমার বদলি আদেশ বাতিল করে পূনঃপদায়ন করেন এবং সম্প্রতি অধ্যক্ষ হিসেবে আমার পদোন্নতির আদেশ জারি হয়। উল্লেখ্য যে একটি রাজনৈতিক পক্ষ চাইছে তাদের সিন্ডিকেটের লোক অধ্যক্ষ হোক। বর্তমান সরকার আমার একাডেমিক ও প্রফেশনাল ক্যারিয়ারের যোগ্যতা বিবেচনায় গোয়েন্দা রিপোর্টের ভিত্তিতেই আমাকে অধ্যক্ষ হিসেবে পদায়ন করেছেন। যদি আমি সত্যিই বিগত সরকারের রাজনীতির সাথে যুক্ত থাকতাম তবে ৫বছর আগেই অধ্যক্ষ হতে পারতাম। বৈষম্য বিরোধী সরকারের সিদ্ধান্তকে বৃদ্ধাঙ্গুলি দেখিয়ে কতিপয় বহিরাগতদের সাথে নিয়ে নিজেদের স্বার্থ বাস্তবায়নের কৌশল হিসেবে আমার নামে মিথ্যা-বানোয়াট অভিযোগ দিয়ে ছাত্র-কর্মচারীদের ভয়ভীতি প্রদর্শন করে আমার পদায়নের বিরুদ্ধে আন্দোলনে যুক্ত করা হয়েছে। গতকাল যারা আমাকে ফুল দিয়ে বরণ করেছিল তাদের হুমকি প্রদান করা হচ্ছে। আমাকে প্রশ্নবিদ্ধ ও শহীদ আবু সাঈদের ময়না তদন্ত নিয়ে বিভ্রান্তি ছড়িয়ে সরকারের সিদ্ধান্তকে অসম্মান করছে। আমি এর তীব্র নিন্দা ও প্রতিবাদ করছি। সেই সাথে আমাকে সরকারের সকল পর্যায়ের গোয়েন্দাসহ সংশ্লিষ্টদের সঠিকতা যাচাইয়ের জন্য অনুরোধ করছি।