অধিকাংশ বাংলাদেশি নিরাপদ স্থানে চলে গেলেও লেবাননে বিমান হামলার ঝুঁকিপূর্ণ এলাকায় এখনও প্রায় ১০ হাজার প্রবাসী নাগরিক অবস্থান করছেন। যেকোনো সময় এসব এলাকায় বিমান হামলা হতে পারে।
সেখানকার প্রবাসী নাগরিকদের সঙ্গে কথা বলে জানা গেছে, লেবাননের লাইলাকি, দ্বাহি, সিয়াহ ও আল রিহাব শহরে প্রায় ১০ হাজার বাংলাদেশি অবস্থান করছেন। তবে এসব এলাকায় প্রায়ই ইসরায়েলের বিমান হামলা হয়ে থাকে।
লেবাননে ইসরায়েলের বিমান হামলায় গত ২ নভেম্বর প্রবাসী বাংলাদেশি মোহাম্মদ নিজাম উদ্দিন মারা গেছেন। বৈরুতের হাজমিয়ে এলাকায় কর্মস্থলে যাওয়ার পথে বিমান হামলায় ঘটনাস্থলে মৃত্যু হয় তার। নিজাম উদ্দিন মারা যাওয়ার পরে প্রবাসীদের মধ্যে আতঙ্ক দেখা দিয়েছে।
লেবানন প্রবাসী শেখ মামুন বাংলানিউজকে জানিয়েছেন, প্রায় ১০ হাজার প্রবাসী বাংলাদেশি নাগরিক এখনও ঝুঁকিপূর্ণ এলাকায় অবস্থান করছেন। অনেক প্রবাসীর মালিকরা তাদের বলছেন, হামলা হবে না। তাই তারা এলাকা ছাড়ছেন না। আবার অনেকেই বলছেন, অন্য জায়গায় গিয়ে কোথায় থাকবেন, কী করবেন। সে কারণেই তারা এসব এলাকায় রয়ে গেছেন।
শেখ মামুন লেবাননে গোল্ডেন স্টার ফাউন্ডেশন নামে স্বেচ্ছাসেবী সংগঠনের সাধারণ সম্পাদক হিসেবে দায়িত্ব পালন করছেন। তিনি জানান, যুদ্ধের শুরু থেকেই সংগঠনের পক্ষ থেকে প্রবাসী নাগরিকদের নিরাপদে আশ্রয় দেওয়া ও খাবার সরবরাহ করা হচ্ছে।
নিরাপদ স্থানে যেতে বলেছে দূতাবাস-
লেবাননে ইসরায়েলের হামলা শুরুর পর থেকেই প্রবাসী নাগরিকদের দ্রুত নিরাপদ স্থানে আশ্রয় নেওয়ার আহ্বান জানিয়েছে বৈরুতের বাংলাদেশ দূতাবাস। এছাড়া প্রবাসী নাগরিক যারা, দেশে ফিরতে আগ্রহী, তাদের তালিকা করে, দেশে ফেরত পাঠানোও শুরু করেছে।
দেশে ফিরেছেন ৩৩৮ জন
লেবানন থেকে এখন পর্যন্ত ৩৩৮ জনকে দেশে ফেরত এনেছে সরকার। এর মধ্যে গত ২১ অক্টোবর প্রথম দফায় ফেরত এসেছেন ৫৪ জন, ২৩ অক্টোবর দুটি ফ্লাইটে ৯৬ জন দেশে ফিরে এসেছেন। চতুর্থ দফায় ফিরেছেন ৩০ জন। পঞ্চম দফায় ফিরেছেন ৩৬ জন। ষষ্ঠ দফায় ৫২ জন দেশে ফিরেছেন। সর্বশেষ ৩ নভেম্বর সপ্তম দফায় ৭০ জন বাংলাদেশি ফেরত এসেছেন। ৫ নভেম্বর অষ্টম দফায় আরও ৩২ জন প্রবাসী ফিরবেন বলে জানানো হয়েছে।
দেশে ফিরতে আগ্রহী নন
লেবাননে বর্তমানে ৭০ হাজারের মতো প্রবাসী বাংলাদেশি রয়েছেন। এই সংখ্যা আরও বেশি হতে পারেও কেউ কেউ ধারণা করছেন। তবে বৈরুতের বাংলাদেশ দূতাবাস প্রবাসীদের দেশে ফেরতের জন্য আবেদন আহ্বান করলে মাত্র ১৮০০ প্রবাসী দেশে ফেরার জন্য আবেদন করেছেন। সে অনুযায়ী আইওএমের সহযোগিতায় তাদেরকে দেশে ফেরত আনা হচ্ছে।
পররাষ্ট্র উপদেষ্টা যা বলছেন
পররাষ্ট্র উপদেষ্টা মো. তৌহিদ হোসেন জানিয়েছেন, যুদ্ধ পরিস্থিতির কারণে লেবানন থেকে যারা ফিরতে ইচ্ছুক, তাদের ফেরত আনার চেষ্টা চলছে। তবে সেখানের অনেকেই ফেরত আসতে চান না, কারণ অনেক টাকা খরচ করে গেছেন। দেশে ফিরে কী করবেন, সেজন্য বিপদ জেনেও তারা সে দেশে থেকে যেতে চান।