বিভিন্ন অংশীজন বিশেষ করে সরকার তার আন্তরিক প্রচেষ্টায় চলতি বছরের জানুয়ারি থেকে ২ নভেম্বর পর্যন্ত বাংলাদেশ থেকে ৯ লাখ ৩০ হাজার কর্মীকে চাকরি দিয়ে বিদেশে পাঠিয়েছে।
জনশক্তি কর্মসংস্থান ও প্রশিক্ষণ ব্যুরোর (বিএমইটি) পরিচালক মামুন সরদার আজ বাসসকে বলেন, ‘এখন পর্যন্ত বৈদেশিক কর্মসংস্থানের প্রবণতা সন্তোষজনক এবং আমরা আশা করছি এ বছর আরও বেশি রেমিট্যান্স যোদ্ধাকে চাকরি দিয়ে বিদেশে পাঠাতে সক্ষম হবো।
বাংলাদেশ থেকে সামগ্রিক জনশক্তি রপ্তানি ধীরে ধীরে বাড়বে বলে আশা করা হচ্ছে উল্লেখ করে তিনি বলেন, চলতি বছরের জানুয়ারি থেকে এ পর্যন্ত ৯ লাখ ৩০ হাজার ৩ জন কর্মী বিদেশে চাকরি পেয়েছে।
বিএমইটির উপ-পরিচালক (চলমান দায়িত্ব) মোহাম্মদ জহিরুল আলম মজুমদার বলেন, টানা নয় মাসে প্রবাসীদের আয় বেড়ে যাওয়ায় রেমিট্যান্সের প্রবাহ ব্যাপকভাবে বেড়েছে।
তিনি বলেন, ‘গত নয় মাসে বিদেশ যাওয়া মোট ৯ লাখ ৩০ হাজার ৩ জন শ্রমিকের মধ্যে ৮ লাখ ৫৮ হাজার ২২৫ জন পুরুষ এবং ৭১ হাজার ৭৭৮ জন মহিলা।
পাশাপাশি চলতি বছরে বাংলাদেশে রেকর্ড পরিমান রেমিট্যান্স এসেছে। প্রবাসী বাংলাদেশীরা গত অক্টোবর মাসে ২ দশমিক ৪০ বিলিয়ন মার্কিন ডলার দেশে পাঠিয়েছে, যা আগের বছরের একই মাসের তুলনায় ২১ দশমিক ৮৩ শতাংশ বেশি।
কেন্দ্রীয় ব্যাংকের তথ্য অনুসারে, ২০২৩ সালের অক্টোবরে বিদেশে যাওয়া কর্মীরা ১ দশমিক ৯৭ বিলিয়ন ডলার দেশে পাঠিয়েছে।
চলতি ২০২৪-২৫ অর্থবছরের জুলাই থেকে অক্টোবর পর্যন্ত প্রবাসী বাংলাদেশিরা আগের অর্থবছরের একই সময়ে পাঠানো ৬ দশমিক ৮৭ বিলিয়ন ডলারের বিপরীতে ৮ দশমিক ৯৩ বিলিয়ন ডলার রেমিট্যান্স পাঠিয়েছে।
এরআগে, ২০২৪ সালের সেপ্টেম্বওে রেমিট্যান্স এসেছে ২ দশমিক ৪ বিলিয়ন ডলার।
বিএমইটি কর্মকর্তা বলেন, ‘আমরা বিদেশে পাঠানো কর্মী সংখ্যা বৃদ্ধির পাশাপাশি তাদের অধিকার এবং সুরক্ষা নিশ্চিত করার জন্য কাজ করছি’।
অনেক দেশে নার্স, ডাক্তার এবং অন্যান্য স্বাস্থ্যসেবা কর্মীদের চাহিদা বাড়ছে। তাই এসব ক্ষেত্রে দক্ষ জনশক্তি সংখ্যা বাড়ানোর মাধ্যমে বিদেশী চাকরির বাজার দখলে পরামর্শ দিয়েছেন বিশেষজ্ঞরা। অর্থাৎ তাদেও চাহিদা ভিত্তিক দক্ষ জনশক্তি বিকাশে বিনিয়োগেরও পরামর্শ বিশেষজ্ঞদের।
দক্ষ চাকরিপ্রার্থী তৈরির জন্য সরকার দক্ষতা উন্নয়ন কর্মসূচির পাশাপাশি বিভিন্ন জেলায় অনেক প্রশিক্ষণ কেন্দ্র স্থাপন করেছে।
সরকার বৈদেশিক মুদ্রা অর্জনের একটি গুরুত্বপূর্ণ উপাদান হিসেবে নথিভুক্ত বৈদেশিক কর্মসংস্থানকেও উৎসাহিত করেছে।
সরকার ডিপ্লোমা ইন শিপ বিল্ডিং ইঞ্জিনিয়ারিং, রেফ্রিজারেশন এবং এয়ার-কন্ডিশনিং, জেনারেল মেকানিক্স, ইলেকট্রিক্যাল মেশিন মেইনটেন্যান্স, অটো ক্যাড ২ডি এবং ৩ডি, ওয়েল্ডিং (৬জি), ক্যাটারিং, মেসন, কোরিয়ান, আরবি, ক্যান্টন, জাপানিজ ভাষা শিক্ষা সহ অন্যান্য প্রশিক্ষণ দিচ্ছে।
এরআগে, সরকার বিদেশে বাংলাদেশি চাকরিপ্রার্থীদের জন্য চাকরির বাজার আরও সম্প্রসারণের উপর সর্বাধিক গুরুত্বারোপ করে বৈদেশিক কর্মসংস্থান খাতকে ‘থ্রাস্ট সেক্টর’ হিসেবে ঘোষণা করেছিল।