বর্ষা মৌসুম শেষ হয়েছে অনেক আগেই। তিন সপ্তাহের বেশি সময় ধরে সিরাজগঞ্জে কমছে যমুনার পানি। পানি কমার সঙ্গে সঙ্গে জেলার শাহজাদপুরে নদীর পশ্চিম তীরে ভাঙন চলছে। গত কয়েক সপ্তাহ ধরে কখনো মৃদু কখনো বা তীব্র ভাঙনে একের পর এক বিলীন হয়েছে বসতবাড়ি ও ফসলি জমি। এবার ৫২ বছর বয়সী একটি শিক্ষা প্রতিষ্ঠান ভাঙনের মুখে সরিয়ে নিতে হচ্ছে। ফলে এ অঞ্চলের শিশুদের প্রাথমিক শিক্ষা নিয়ে অনিশ্চয়তা দেখা দিয়েছে। খোঁজ নিয়ে জানা যায়- শাহজাদপুর উপজেলার জালালপুর ইউনিয়নের সৈয়দপুর, পাকড়তলা, কৈজুরী ইউনিয়নের হাটপাচিল এলাকায় যমুনার ভাঙন চলছে। গত এক মাসে ধারাবাহিক ভাঙনে ৭শ’র বেশি বসতবাড়ি, কয়েকশ বিঘা কৃষিজমি, রাস্তাঘাট ও ব্যক্তিগত স্থাপনা নদীগর্ভে বিলীন হয়ে গেছে। দফায় দফায় ভাঙনে বার বার স্থান পরিবর্তন করতে করতে ভেকা-গোপালগঞ্জ সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়টি আবারও ভাঙন ঝুঁকির মুখে পড়েছে। ১৯৭২ সালে প্রতিষ্ঠিত এ শিক্ষা প্রতিষ্ঠানটি যমুনা নদী থেকে মাত্র ৭-৮ মিটার দূরে রয়েছে। ইতোমধ্যে বিদ্যালয়টি সরিয়ে নেওয়ার নির্দেশ দিয়েছে উপজেলা প্রাথমিক শিক্ষা অফিস। ফলে শিশু সন্তানদের লেখাপড়া নিয়ে চরম দুশ্চিন্তায় পড়েছেন অভিভাবকরা। ওসমান শেখ, আজমত আলী, জিয়াউল হক, চায়না খাতুন ও রহিমা বেগমসহ বেশ কয়েক অভিভাবক জানান, স্কুল থেকে সামান্য দূরে যমুনা। ছেলে-মেয়েদের স্কুলে পড়ানো ঝুঁকিপূর্ণ হয়ে গেছে। তাই ওদের সঙ্গে করে নিয়ে স্কুলে আসি। আবার সঙ্গে নিয়েই চলে যাই। ওই বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক মোনায়েম সরকার বলেন, স্কুল ভবনটি নদী থেকে সামান্য দূরে আছে। স্কুলটি সরিয়ে নেওয়ার নির্দেশনা দিয়েছে শিক্ষা অফিস। কিন্তু কোথাও সরানোর জায়গা নেই। সামনে বাচ্চাদের পরীক্ষা। বাধ্য হয়ে ঝুঁকির মধ্যেই পরীক্ষা নিতে হবে। শাহজাদপুর উপজেলা প্রাথমিক শিক্ষা অফিসার মো. আব্দুস সালেক বলেন, ভেকা-গোপালগঞ্জ বিদ্যালয়টি ভাঙন ঝুঁকির মুখে থাকায় সেটা সরিয়ে নেওয়ার নির্দেশ দেওয়া হয়েছে। অবিলম্বে কোনো একটি নিরাপদ স্থানে স্কুল সরিয়ে শিক্ষা কার্যক্রম চালানো হবে। সিরাজগঞ্জ পানি উন্নয়ন বোর্ডের নির্বাহী প্রকৌশলী মো. মোখলেসুর রহমান বলেন, ওই এলাকায় নদী তীর সংরক্ষণ বাঁধ নির্মাণ প্রকল্পের কাজ চলমান রয়েছে। যমুনায় পানির স্রোত বেশি থাকায় কাজ বন্ধ আছে। এক মাসের মধ্যে কাজ শুরু হবে। ভাঙনরোধে আমরা আপাতত সেখানে কিছু জিওব্যাগ ডাম্পিং করেছি। এখন ভাঙনের তীব্রতা কিছুটা কমে এসেছে।