রাজধানীর সঙ্গে উত্তরাঞ্চলে যোগাযোগ বৃদ্ধির লক্ষ্যে সিরাজগঞ্জ-বগুড়া রেলপথ নির্মাণের উদ্যোগ নেয় বাংলাদেশ রেলওয়ে। এই প্রকল্পটি সম্প্রন্ন হলে বছরে সাশ্রয় হবে কয়েক কোটি টাকার জ্বালানি। সেই সঙ্গে উত্তরাঞ্চল থেকে ঢাকাগামী যাত্রীদের ভোগান্তিও কমবে। কিন্তু এই জনগুরুত্বপূর্ণ প্রকল্পটি কবে নাগাদ শুরু হবে, এর সঠিক কোনো তথ্য দিতে পারেননি প্রকল্প সংশ্লিষ্টরা।
বাংলাদেশ রেলওয়ের ব্যবস্থাপক (পাকশী) শাহ সুফি নুর মোহাম্মদ জানান, আমার জানা মতে, বর্তমানে এই প্রকল্পে কোনো অগ্রগতি নেই। আপনি প্রকল্প পরিচালকের সঙ্গে যোগাযোগ করুন।
এ বিষয়ে বগুড়া-সিরাজগঞ্জ রেলওয়ের প্রকল্প পরিচালক মো: মনিরুল ইসলাম ফিরোজী জানান, ভূমি অধিগ্রহণ প্রক্রিয়া প্রায় শেষ পর্যায়ে। ভূমির মালিকদের টাকা দেয়ার সময় এসেছে।
ভূমির মালিকদের টাকা দেয়ার এবং কাজ শুরু বিষয়ে জানতে চাইলে, তিনি আরও জানান, টাকা সরকার দিলেই দিতে পারব জমির মালিকদের। এছাড়া নির্মাণ কাজ করবে ভারতীয়রা।
এছাড়া এই প্রকল্প নিয়ে বর্তমানে রেল মন্ত্রণালয় ও ইন্ডিয়ার নির্মাণ প্রকল্পের সঙ্গে যোগাযোগ অগ্রগতি হয়েছে কিনা প্রশ্ন করা হলে জানান, গত মাস থেকে এখন পর্যন্ত যোগাযোগ করা সম্ভব হয়নি। প্রকল্পটি বাংলাদেশ রেলওয়ের সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ। আশা করছি, প্রকল্পটি বিষয়ে মন্ত্রণালয় থেকে অতিদ্রুত সিদ্ধান্ত আসবে।
তথ্যানুসন্ধানে জানা যায়, বগুড়া ও সিরাজগঞ্জের দূরত্ব মাত্র ৭২ কিলোমিটার। অথচ জেলা দুটির মধ্যে সরাসরি রেলপথ নেই। এ কারণে ঢাকা থেকে বগুড়া যেতে ১১২ কিলোমিটার পথ বেশি ঘুরে যেতে হয়। প্রকল্পে সিরাজগঞ্জের শহীদ এম মনসুর আলী স্টেশন থেকে বগুড়ার শাজাহানপুর উপজেলার রানীরহাট পর্যন্ত ৮৫ কিলোমিটার রেলপথ নির্মাণ হবে। এর মধ্যে বগুড়া স্টেশন থেকে শহীদ এম মনসুর আলী স্টেশনের দৈর্ঘ্য হবে প্রায় ৭৫ কিলোমিটার। রানীরহাট স্টেশন থেকে কাহালু স্টেশনের দূরত্ব ১১ দশমিক ৫ কিলোমিটার।
রেলওয়ে বলছে, রেললাইন ছাড়াও ১৬ কিলোমিটার লুপ লাইন এবং বগুড়া থেকে সিরাজগঞ্জ পর্যন্ত নতুন আটটি রেলস্টেশন নির্মাণ করা হবে। এগুলো হলো সদানন্দপুর, কৃষাণদিয়া, রায়গঞ্জ, চান্দাইকোনা, শেরপুর, আড়িয়াবাজার, রানীরহাট ও কাহালু। এর মধ্যে রানীরহাট ও কাহালুতে জংশন হবে। এই রেলপথ হলে বছরে কয়েক কোটি টাকার জ্বালানি সাশ্রয় হবে।
প্রকল্প সূত্রে আরও জানা যায়, প্রকল্পে এখন পর্যন্ত নকশা ও পরামর্শককাজ সম্পন্ন হয়েছে। এ কাজে গত ছয় বছরে প্রকল্পের কর্মকর্তা-কর্মচারীদের বেতন-ভাতা বাবদ প্রায় ২৮ কোটি টাকা ব্যয় হয়েছে। রেলপথের জন্য মোট ৯৬০ একর জমি অধিগ্রহণ করতে হবে। এ জন্য প্রকল্পে ১ হাজার ৯২১ কোটি টাকার সংস্থান রাখা হয়েছে।
সিরাজগঞ্জে ৪৬৭ একর ভূমি এবং বগুড়া অংশে ৪৭৯ দশমিক ১৫ একর ভূমি অধিগ্রহণের জন্য নোটিশ প্রদান করা হয়েছে।
ভূমি অধিগ্রহণ বিষয়ে সিরাজগঞ্জ জেলা ভূমি অধিগ্রহণ কর্মকর্তা নুসরাত জাহান জানান, এই প্রকল্পের কাজ অনেক দূর আগানো হয়েছে। এই প্রকল্পের ফাইল ভূমি মন্ত্রণালয়ে পাঠানো হয়েছে। ওখান থেকে পাস হয়ে আসলেই আমরা ভূমি মালিকদের ৭ ধারা দিতে পারব। এছাড়া আমার কাছে আর বেশি তথ্য নেই।