কর্মক্ষেত্রে গণতান্ত্রিক পরিবেশ ও ভয়-ভীতিমুক্ত সাংবাদিকতা নিশ্চিতসহ ১৩ দফা দাবি জানিয়েছেন বিভিন্ন সংবাদমাধ্যমে কর্মরত সংবাদকর্মীরা।
শনিবার (১৭ আগস্ট) কর্মক্ষেত্রে গণতান্ত্রিক পরিবেশ, ভয়-ভীতিমুক্ত সাংবাদিকতা নিশ্চিত করা, সাগর-রুনি এবং গণ-অভ্যুত্থানে পুলিশের গুলিতে সাংবাদিক হত্যার বিচারসহ ১৩ দফা দাবিতে সর্বস্তরের সংবাদকর্মীদের মতবিনিময় সভায় এসব দাবি জানানো হয়।
ঢাকা রিপোর্টার্স ইউনিটির (ডিআরইউ) সাগর-রুনি হলে গণমাধ্যম সংস্কার উদ্যোগের ব্যানারে এ মতবিনিময় সভার আয়োজন করা হয়।
সভায় মঞ্চ থাকলেও সেখানে আলাদা করে কেউ বসেননি। বিভিন্ন গণমাধ্যমের সাংবাদিকরা ডায়াসে এসে তাদের মতামত জানান।
বক্তারা বলেন, গণমাধ্যম যেভাবে চলার কথা, সেভাবে এতদিন চলেনি। আগামীতে যাতে সঠিক পথে চলতে পারে সেজন্য আমরা ১৩ দফা দাবি জানাচ্ছি। গণমাধ্যমের চরিত্র অনুযায়ী চলবে। অন্য দলীয় বা ব্যবসায়িক ভিত্তিতে চলবে না।
তারা আরও বলেন, ছাত্র-জনতার আন্দোলনের সঠিক সংবাদ প্রকাশ না করে গণমাধ্যমও স্বৈরাচারের সহযোগী হিসেবে কাজ করেছে। এটা যেন আগামীতে না হয়। অনেক গণমাধ্যম ওয়েজ বোর্ডসহ অন্যান্য নিয়ম মানে না। তাদের সেই নিয়ম মানতে বাধ্য করতে হবে।
তাদের দাবিগুলো হলো-
১. ছাত্র-জনতার আন্দোলনের সময় নিহত সাংবাদিকদের হত্যার বিচার নিশ্চিত করা।
২. ছাত্র-জনতার আন্দোলনকে ঘিরে আহত গণমাধ্যমকর্মী ও আক্রান্ত গণমাধ্যমকে ক্ষতিপূরণ দেওয়া।
৩. গণমাধ্যমের যে-সব মালিক ও নির্বাহীরা গণমাধ্যমকে রাজনৈতিক হাতিয়ার হিসেবে তৈরি করেছে তদন্ত সাপেক্ষ তাদের বিচারের আওতায় আনা।
৪. গণমাধ্যমকর্মীদের জন্য অভিন্ন ওয়েজ বোর্ড প্রণয়ন করা। অনতিবিলম্বে নবম ওয়েজ বোর্ড বাস্তবায়ন করা।
৫. শ্রম আইন অনুযায়ী লভ্যাংশ বণ্টন করা।
৬. অগণতান্ত্রিক উপায়ে গণমাধ্যম প্রতিষ্ঠানের দখলদারত্বের যে প্রবণতা দেখা যাচ্ছে অনতিবিলম্বে তা বন্ধ করা।
৭. গণমাধ্যমকর্মীদের সর্বস্তরের ভয়-ভীতি বন্ধ করা।
৮. গণমাধ্যম পরিচালনার ধরনসহ সার্বিক বিষয়ে সংস্কারের জন্য একটি উচ্চ পর্যায়ের কমিশন গঠন করা।
৯. গণমাধ্যম ও স্বাধীন মত প্রকাশ বিরোধী নিবর্তনমূলক আইনের সব ধারা বাতিল করা।
১০. আইসিটি, ডিজিটাল নিরাপত্তা আইন ও সাইবার সিকিউরিটি আইনের অধীনে গণমাধ্যমকর্মীদের বিরুদ্ধে দায়েরকৃত সব মামলা প্রত্যাহার করা।
১১. সাংবাদিক দম্পতি সাগর-রুনি হত্যাসহ সব হত্যাকাণ্ড ও নির্যাতনের বিচার নিশ্চিত করা।
১২. বিভিন্ন সময়ে সাংবাদিকদের গুম, নির্যাতন ও হয়রানির সঙ্গে জড়িতদের বিচার করা।
১৩. সব গণমাধ্যম যেন গণমানুষের মুখপাত্র হিসেবে কাজ করতে পারে সেই নিশ্চয়তার বিধান করা।