সিরাজগঞ্জ সদর উপজেলায় মালচিং পদ্ধতিতে নিরাপদ সবজি চাষ করে সাফল্যের গল্প তৈরি করলেন আমিনুল ইসলাম। তিনি উপজেলার শিয়ালকোল ইউনিয়নের ব্রহ্মকোলা এলাকার মোশারফ হেসেন শেখের ছোট ছেলে আমিনুল। গত ২-৩ বছর হলো কৃষির সঙ্গে জড়িত আমিনুল। মূলত: গতানুগতিক কৃষি কার্যক্রমে অভ্যস্ত তিনি। কৃষির নতুন প্রযুক্তি তার একদম অজানা। যার কারণে প্রতিবছর সবজি চাষ করে খুব একটা লাভের মুখ দেখতে পাননি। এরই মধ্যে পিকেএসএফ এর সহায়তায় পরিচালিত এনডিপির সমন্বিত কৃষি ইউনিটের আর্থিক ও কারিগরি সহযোতিায় নতুন করে মালচিং পদ্ধতিতে নিরাপদ সবজি হিসেবে বেগুন চাষ শুরু করেন। জানতে পারেন নিরাপদ ফসল উৎপাদন এর বিভিন্ন প্রযুক্তি যেমন, মালচিং পেপার, ফেরোমন ফাঁদ, রঙিন আঠালো ফাঁদ সম্পর্কে। কৃষি কাজের বিভিন্ন পরামর্শ নেন তিনি। এতে তিন মাসের মধ্য ভালো ফলন হওয়ায় সবজি চাষে আরও আগ্রহ বাড়ে তার। কৃষক ৬ মাসের অধিক সময় বেগুন উত্তোলন করে। ৩৩ শতাংশ জমিতে তার মোট খরচ হয় ৫৬ হাজার ৫৭০ টাকা। তিনি বেগুন মোট বিক্রি করে ২ লাখ ৭৭ হাজার ৮৮০ টাকা। খরচ বাদে তার নীট লাভ হয় ২ লাখ ২১ হাজার ৩১০ টাকা। তিনি বিভিন্ন ধরনের সবজি চাষ করলেও ৩৩ শতাংশ জমি থেকে এতো লাভের মুখ দেখবে সেটা কখনো ভাবেনি। মালচিং পদ্ধতিতে বেগুন চাষের ফলে পোকামাকড়ের আক্রমণ কম হয়, যার কারণে কৃষকের কীটণাশক প্রয়োগ তেমন প্রয়োজন হয়না। কৃষক আমিনুলের সাফল্য দেখে এ গ্রামের অন্যান্য কৃষক মালচিং পেপার দিয়ে বেগুন, ধুন্দল, মরিচ, টমেটোর আবাদ করে লাভবান হয়েছেন। আগামীতে তিনি বেশিরভাগ সবজি চাষ মালচিং পেপার দিয়ে করবেন বলে উল্লেখ করেন। কৃষক আমিনুল জানান, আমি পড়ালেখা চালিয়ে যেতে আগ্রহী ছিলাম। কিন্ত নানা জটিলতার কারণে সেটা আর সম্ভব হয়নি। আধুনিক কৃষি ব্যবস্থা আমার জানা ছিলো না। এনডিপির অফিসার আমার সঙ্গে যোগাযোগ করলে আমি তাদের মতামত গ্রহণ করি। মালচিং পেপার দিয়ে বেগুন চাষ করে অভাবনীয় সাফল্য পাই। আগামীতে কৃষির সকল সবজি চাষ মালচিং পেপার দিয়ে করব। সদর উপজেলায় সমন্বিত কৃষি ইউনিটের কৃষি কর্মকর্তা জানান, নিরাপদ ফসল উৎপাদন ও বাজারজাতকরণের জন্য সমন্বিত কৃষি ইউনিট (পিকেএসএফ) এর মাধ্যমে উদ্যোক্তাদের প্রশিক্ষণ ও আর্থিক সহায়তা দিয়ে থাকি। যাতে উদ্যোক্তারাও স্বাবলম্বী হতে পারে। অন্যদিকে, ভোক্তাগণের কাছে নিরাপদ সবজি পৌঁছায়। এটাই আমাদের মূল লক্ষ্য। উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা মো. আনোয়ার সাদাত জানান, সমন্বিত কৃষি ইউনিট এর কার্যক্রম সম্পর্কে আমরা অবগত। এ বছর সদর উপজেলায় মালচিং পেপারের ব্যবহার অনেক বৃদ্ধি পেয়েছে। কৃষকদের আমরাও প্রশিক্ষণ ও পরামর্শ দিয়ে সহযোগিতা করে থাকি।