গরু, ছাগল, মহিষ, ভেড়া, উট, দুম্বা এসকল গৃহপালিত প্রাণী মানুষের ভোগের উপযোগী। মানুষের প্রয়োজনের তাগিদে পশুপালনে খামার তৈরী উদ্যাক্তার মাধ্যমে উৎপাদনের হাতিয়ার ও অর্থনৈতিক মুক্তির চালিকাশক্তি হিসেবে পরিগনিত হয়েছে। সেকারনেই বর্তমান সময়ে নতুন নতুন উদ্যোক্তার মাধ্যমে গ্রামগঞ্জের পাশাপাশি শহরেও বৃদ্ধি পেয়েছে গবাদী পশুর খামার বা খামারির সংখ্যা। সরকারীভাবে প্রাণী সম্পদ হাসপাতালের মাধ্যমে খামারীদের চিকিৎসা সেবা দিয়ে আসছে। কিš‘ খামারের সংখ্যা দিন দিন বৃদ্ধি পাওয়ায় এবং সরকারী প্রাণী সম্পদ হাসপাতালের জনবল সংকটের কারণে খামারীদের যথাসময়ে প্রয়োজনীয় চিকিৎসাসেবা দিতে হিমশিম খেতে হচ্ছে ভেটেরিনারি চিকিৎসকদের। এ কারনে প্রান্তিকপর্যায়ে ব্যক্তি ও ক্ষুদ্র খামারীরা সরকারী ভেটেরিনারি চিকিৎসকদের সেবা এবং পরামর্শ পেতে অনেকটাই বিলম্বিত হতো। প্রান্তিকপর্যায়ে ব্যক্তি ও ক্ষুদ্র খামারীদের কথা চিন্তা করে ২০২২ সাল থেকে সিরাজগঞ্জের সদর উপজেলায় ব্যক্তি উদ্যোগে গড়ে তোলা হয়েছে গোধুলি প্রাণীসেবা কেন্দ্র। গোধুলি প্রাণীসেবা কেন্দ্রের প্রতিষ্ঠাতা মানদুদ হক হাদী বলেন, এই সেবা কেন্দ্রের মাধ্যমে সুদক্ষ ভেটেরিয়ান দ্বারা বিনা মূল্যে চিকিৎসাসেবা প্রদান করা হয়। একজন ভেটেরিনারি চিকিৎসক নিয়মিতভাবে সাপ্তাহিক খামার পরিদর্শন করেন। নিজিস্ব ল্যাবটেস্টের মাধ্যমে গবাদি প্রাণীর রোগ নির্নয় ও প্রয়োজনীয় চিকিৎসা সেবা দেওয়া হয়। ভ্যাক্সিনেশন ক্যাম্প পরিচালনা করে গ্রামভিত্তিক সামগ্রীকভাবে রোগ প্রতিরোধের ব্যব¯’া করা হয়। বাজার মূল্যের চাইতে কম মুল্যে ঔষুধ প্রদান করা হয়। রোগ প্রতিরোধ ও জনসচেতনতা সৃষ্টির লক্ষে খামারীদের মাঝে মাসিক সভা ও সেমিনারের আয়োজন করা হয়। বর্তমানে গোধুলি প্রাণীসেবা কেন্দ্রের আওতায় ব্যক্তি পর্যায় ও ৫০টির অধিক খামারে ১শতটি দুগ্ধগাভী, ৫০টি প্রসূতিগাভী, ২শতটি এড়ে গরু ও ৫০টি গরুর শাবকের চিকিৎসা সেবা চলমান রয়েছে। গোধুলি প্রাণীসেবা কেন্দ্রের সেবা গ্রহিতা সিরাজগঞ্জ পৌর শহরের উত্তর সয়াধানগড়া গ্রামের গো খামারী মো. শাহজাহান আলী বলেন, আমার খামারে ২টি দুধেলগাভী ও ২টি বাছুর আছে। সরকারী পশু হাসপাতাল থেকে আগে চিকিৎসা নিয়েছি। সরকারী সেবা পেতে হাসপাতালে গরু নিয়ে যেতে হয়। ডাকলে সহজে সময়মত বাড়িতে চিকিৎসক আসেন না। গোধুলি প্রাণীসেবা কেন্দ্র প্রতিষ্ঠার পর থেকে আমি তাদের সেবা নিচ্ছি। সপ্তাহের ৬দিন যেকোন সময় তাদের মোবাইল নম্বরে ফোন দিলেই তাৎক্ষনিক ডাক্তার ছুটে আসেন। আরেক খামারি সুলতান মাহমুদ বলেন আমার খামারে ৪টা দুধেলগাভী ও ৩টা শাবক আছে। আমি গোধুলি প্রাণীসেবা কেন্দ্রের সেবা পেয়ে খুশী। সরকারী পশু হাসপাতালে জনবল কম, মাঠ পর্যায়ে সেবা পেতে সময় লাগে, অথবা গরু নিয়ে হাসপাতালে গিয়ে চিকিৎসা নিতে হয়। এটা ব্যয়বহুল ও কষ্টকর। গোধুলি প্রাণীসেবা কেন্দ্রে ফোন করা মাত্রই ডাক্তার বাড়িতে হাজির। সহজেইসেবা পাওয়া যায়। শিয়ালকোল ইউনিয়নের ফুলবাড়ি গ্রামের খামারী মো. মাজেম হোসেন বলেন,আমার ৪টি গাভী সরকারী প্রাণীসম্পদ হাসপাতালের চিকিৎসা সেবা পেতে একটু সময় লাগে এনিস্ট্যান্ড সেবা পেতে গোধুলি প্রাণীসেবা কেন্দ্রের সেবা কেই প্রাধান্যদেই। কারণ ফোন করা মাত্রই সপ্তাহের ৬দিন ঝড় নাই, বৃষ্টি নাই সকল প্রতিকুল পরিবেশ উপেক্ষা করে গোধুলি প্রাণীসেবা কেন্দ্রের ভেটেরিনারি ডাক্তারদের সেবা পাওয়া যায়। এবং আমরা খামারিরা গোধুলি প্রাণীসেবা কেন্দ্রের সেবা পেয়ে অর্থনৈতিক ভাবে লাভবান হচ্ছি।