ঢাকা-চট্টগ্রাম মহাসড়ক ও সিলেট মহাসড়কের সোনারগাঁ উপজেলার কাঁচপুর বাসস্ট্যান্ড এলাকায় পুলিশের সঙ্গে বিএনপির নেতাকর্মীদের সংঘর্ষের ঘটনায় থানায় একটি মামলা দায়ের করা হয়েছে। রবিবার মধ্যরাতে সোনারগাঁ থানার উপপরিদর্শক (এসআই) ফিরোজ আহমেদ বাদী হয়ে থানায় মামলাটি দায়ের করেন।
মামলায় বিএনপি ও এর অঙ্গ সংগঠনের ৭১৩ জন নেতাকর্মীর নাম উল্লেখ করাসহ অজ্ঞাতনামা ৬০০ জনকে আসামি করা হয়েছে। সোমবার (২১ আগস্ট) দুপুরে সোনারগাঁ থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মাহাবুব আলম সুমন মামলার ঘটনাটির সত্যতা নিশ্চিত করেছেন।
পুলিশ ও এলাকাবাসী সূত্র জানায়, গত শনিবার বিকেলে ঢাকা-চট্টগ্রাম মহাসড়কের সোনারগাঁ উপজেলার কাঁচপুরে বিএনপির পদযাত্রায় নেতাকর্মীদের সঙ্গে পুলিশের ব্যাপক সংঘর্ষ, ধাওয়া-পাল্টা ধাওয়া ও ইট-পাটকেল নিক্ষেপের ঘটনা ঘটে। এসময় বিক্ষুব্ধ বিএনপির নেতা-কর্মীরা কয়েকটি গাড়ী ভাঙচুর করে। পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনতে পুলিশ এসময় লাঠিচার্জ, রাবার বুলেট ও টিয়ারসেল নিক্ষেপ করে। সংঘর্ষে ১৭ জন গুলিবিদ্ধসহ অন্তত ৪০ জন আহত হয়।
এসময় ঢাকা-সিলেট মহাসড়ক ও ঢাকা-চট্টগ্রাম মহাসড়কে প্রায় ঘণ্টাব্যাপী যান চলাচল সম্পূর্ণরূপে বন্ধ হয়ে যায়। ঘটনার পর পুরো কাঁচপুর এলাকা জুড়ে থমথমে অবস্থা বিরাজ করে। এই ঘটনায় গত রবিবার মধ্যরাতে পুলিশ বাদী হয়ে সোনারগাঁ থানায় বিএনপি ও এর অঙ্গ সংগঠনের ৭১৩ জনকে আসামী করে একটি মামলা দায়ের করে।
মামলায় প্রধান আসামি করা হয়েছে নারায়ণগঞ্জ জেলা বিএনপির সভাপতি মুহাম্মদ গিয়াসউদ্দিনকে। এছাড়া, মামলায় আসামি করা হয়েছে নারায়ণগঞ্জ বিএনপির সাধারণ সম্পাদক গোলাম ফারুক খোকন, কেন্দ্রীয় নির্বাহী কমিটির সদস্য ও সোনারগাঁ থানা বিএনপির সভাপতি আজহারুল ইসলাম মান্নান, সাধারণ সম্পাদক মোশারফ হোসেনসহ ৭১৩ জনকে। এদিকে, থানায় মামলা দায়েরের পর পুলিশ সোনারগাঁ উপজেলার বিভিন্ন এলাকায় অভিযান চালিয়ে বিএনপির দুই নেতাকর্মীকে গ্রেপ্তার করেছে।
গ্রেপ্তারকৃতরা হলেন- জামপুর ইউনিয়ন বিএনপির ধর্ম বিষয়ক সম্পাদক মো. ইব্রাহিম(৬২) ও বিএনপি কর্মী সুরুজ মিয়া(৫৫)। গ্রেপ্তারকৃত মো. ইব্রাহিম মিয়ার বাড়ি সোনারগাঁ উপজেলার জামপুর ইউনিয়নের পাকুন্দা গ্রামে। গ্রেপ্তারকৃত সুরুজ মিয়ার বাড়ি মোগরাপাড়া ইউনিয়নের কাফুরদী গ্রামে।
নারায়ণগঞ্জ জেলা বিএনপির একটি সূত্র জানায়, কাঁচপুরে বিএনপির নেতা-কর্মীদের সাথে পুলিশের সংঘর্ষের ঘটনায় থানায় মামলা দায়েরের পর থেকে নারায়ণগঞ্জ জেলার পাঁচটি উপজেলার অধিকাংশ বিএনপি ও এর অঙ্গ সংগঠনের নেতাকর্মীরা গ্রেপ্তার আতঙ্কে এলাকা ছেড়ে অন্যত্র পালিয়ে বেড়াচ্ছে।
সোনারগাঁ থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মাহাবুব আলম জানান, পুলিশের সঙ্গে বিএনপি ও এর অঙ্গ সংগঠনের নেতাকর্মীদের সংঘর্ষের ঘটনায় থানায় একটি মামলা দায়ের করা হয়েছে। এতে ৭১৩ জনের নাম উল্লেখ করাসহ অজ্ঞাত ৬০০ জনকে আসামি করা হয়েছে।