কক্সবাজার টেকনাফ শাহপরীরদ্বীপে ছোট ছেলেদের খেলাকে কেন্দ্র করে নুরুল হক, হত্যাকাণ্ডের শিকার হন ৮ নভেম্বর২০২১। এ ঘটনায় ১৪ মাস পেরিয়ে গেছে। এখন পর্যন্ত ধরা ছোঁয়ার বাইরে ঘাতকেরা।
নিহত নুরুল হকের বাড়ি সাবরাং ইউনিয়নের শাহপরীরদ্বীপ কোনার পাড়া ৮ নং ওয়ার্ড। তিনি কোনার পাড়ার পুতন আলীর ছেলে। পরিবার তাকে হারিয়ে দিশেহারা হয়ে পড়েছে।
এদিকে নুরুল হকের স্ত্রী নুর হাবা জানিয়েছেন মামলার আসামিরা প্রকাশ্য ঘোরাফেরা করলেও পুলিশ তাঁদের ধরছে না। আসামিরা প্রকৃত সন্ত্রাসী আমার বাড়িতে গিয়ে প্রতিদিন হুমকি দিয়ে চলে যায়। আমার বাড়িতে ইট পাটকেল মারে রাত গভীর হলে।এ বিষয়ে আমি থানায় অভিযোগ করছি, অভিযোগ করলে ও কোন সুরাহা পাইনি আজ ও, আমার এক ছেলে বাহিরে থাকে আরেকজন লেখাপড়া করে ,বড় ছেলে চাকরি করে এ সুবাদে তারা প্রতিদিন ঘেরা বেড়া ভাংচুর করে চলে যায়। এ ব্যাপারে আমি আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর হস্তক্ষেপ কামনা করছি।
পুলিশের দাবি, মামলার আসামিরা পলাতক ছিল এবং এখন জামিনে রয়েছে। যখন জামিনে ছিল না তখন আটক করেন নাই কেন? পুলিশ এজবাবে উত্তর দেন তখন আমরা প্রতিদিন তাদের খুঁজেছি পাইনি। তার পরিবার কেউ আমাদের সহযোগিতা করে নাই।
নুরুল হকের ছেলে সৌদি প্রবাসী জাহাঙ্গীর আলম বলেন, আমার বাবাকে অন্যায়ভাবে হত্যা করা হয়েছে। তারা আমার বাবাকে হত্যা ও করবে আবার বাড়ি ঘর ভাঙচুর করে এটা কেমন আইন।আমরা দেশে নাই বলে তারা যা ইচ্ছা তাই করতে পারবে না। সেখানে কি কোন বিচার নেই আমাদের পরিবারের জন্য। আজ ও মনকে বুঝাতে পারছি না! আমার বাবা কি অন্যায় করছিল এমন। তারা আমার সহজ সরল বাবাকে হত্যা করে আমাদের এতিম করে ফেলছে। আমার বাবাকে যখন হত্যা করা হয়েছিল তখন কেন পুলিশ তাদের গ্রেপ্তার করে নাই এটা আমার কষ্ট। এ হত্যাকান্ডের প্রায় দুই মাস পার হয়ে গেলেও পুলিশ একজন আসামীকেও গ্রেফতার করতে পারেনি। মামলার তদন্তে কোন অগ্রগতি নেই। আমি এ হত্যার বিচার চাই। আসামীদের গ্রেফতার ও ফাঁসি চাই। তিনি আসামীদের গ্রেফতার করতে পুলিশ সুপারের হস্তক্ষেপ কামনা করেন।
মামলা ও স্থানীয় সূত্রে জানা গেছে,জমির মালিকানা নিয়ে তার পরিবারের সঙ্গে স্থানীয় একটি পরিবারের মধ্যে দীর্ঘদিন ধরে বিরোধ চলছিল। এ নিয়ে প্রতিপক্ষের লোকজন তাদের নানাভাবে হুমকি-ধমকি দিয়ে আসছিল। নুরুল হকের পরিবারের দেওয়া অভিযোগ থেকে জানা যায়, ছোট ছোট ছেলেদের খেলাকে কেন্দ্র করে এ ঘটনা ঘটে।৮ নভেম্বর সোমবার সন্ধ্যায় নুরুল হক স্থানীয় মসজিদে মাগরিব নামাজ আদায়ের পর বাড়ি ফিরছিলেন। ফেরার পথে এক যুবক নুরুল হককে পিছন থেকে ছুরিকাঘাত করেন।
এ সময় শোর-চিৎকার শুনে স্থানীয়রা এগিয়ে এলে হামলাকারী পালিয়ে যায়। পরে উদ্ধার করে টেকনাফ উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে নিয়ে গেলে চিকিৎসক মৃত ঘোষণা করেন।
আসামীরা হলেন মোঃ ইয়াছিন (মুইচ্ছা ইয়াছিন) (৪০) পিতা – মোহাম্মদ হোসন, ইয়াছিনের ছোট ভাই কেফায়েত উল্লাহ (২৭), সৈয়দ হোসেন ( মুইন্না বাইট্টা) (৩০) পিতা- মৃত সৈয়দ আকবর, সিরাজ মিয়া(৪২) পিতা পেশকার আলী, নুরুল আলম (বুশু) (২৭) পিতা আব্দুর রহিম মিস্ত্রী এবং হকুম দাতা সৈয়দ হোসেনের বড় ভাই আলী হোসন (৫০)।
নুরুল হকের ছেলে কলেজ পড়ুয়া বেলাল উদ্দিন বলেন, মামলার পর থেকে তিনি ও তাঁর পরিবারের সদস্যদের নিয়ে নিরাপত্তাহীনতায় বাস করছেন। তাঁদের নানাভাবে হুমকি দেওয়া হচ্ছে। আসামিরা প্রকাশ্যে ঘুরে বেড়ালেও তাঁদের গ্রেপ্তার করা হচ্ছে না বলে অভিযোগ করেন তিনি। এ বিষয়ে সবার হস্তক্ষেপ কামনা করেন।
এ বিষয়ে টেকনাফ মডেল থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) আব্দুল হালিম জানান, মামলার এজাহারভুক্ত আসামিদের গ্রেপ্তারের জন্য অভিযান অব্যাহত রাখা হয়েছে। হয়তো তারা জামিনে আছে কিনা এটা ও খতিয়ে দেখা হচ্ছে।