টেকনাফে নাফ নদীতে টানা ৯ ঘণ্টা অভিযান চালিয়ে বিপুল পরিমাণ আগ্নেয়াস্ত্র ও গোলাবারুদসহ ডাকাতদলের ৬ সদস্যকে আটক করেছে বাংলাদেশ কোস্টগার্ড।
মঙ্গলবার (৩ ডিসেম্বার) দুপুরে বিষয়টি নিশ্চিত করেন টেকনাফে কোস্টগার্ডের মিডিয়া কর্মকর্তা লে. কমান্ডার বি এন আব্দুর রহমান।
তিনি জানান, গোপন সংবাদের ভিত্তিতে গত ২ জানুয়ারি শাহপরী দ্বীপ সংলগ্ন নাফ নদীর মোহনায় একটি সক্রিয় অস্ত্রধারী ডাকাতদল ফিশিং বোটে ডাকাতির প্রস্তুতি নিচ্ছে। এমন তথ্যের ভিত্তিতে আনুমানিক রাত ১টার দিকে কোস্টগার্ড স্টেশন সেন্টমার্টিন কর্তৃক নাফ নদীর মোহনায় একটি বিশেষ অভিযান পরিচালনা করে।
অভিযান চলাকালীন কোস্টগার্ডের উপস্থিতি টের পেয়ে ডাকাতদল তাদের বোট নিয়ে নাফ নদীর মোহনা হতে টেকনাফের দিকে দ্রুত সরে যাওয়ার চেষ্টা করে। এসময় কোস্টগার্ডের সদস্যরা ডাকাত দলকে ধরতে ধাওয়া অব্যাহত রেখে টেকনাফ স্টেশনকে বিষয়টি অবগত করে।
স্টেশন টেকনাফ হতে চৌকস আরেকটি আভিযানিক দল বোটটির পিছু নেয় এবং ধাওয়া করলে এক পর্যায়ে স্পিড বোটটি টেকনাফ থানাধীন রঙ্গিখালীর নিকটবর্তী খড়ের দ্বীপে ডাকাত সদস্যদেরকে নামিয়ে দ্রুত মিয়ানমারের অভ্যন্তরে প্রবেশ করে। এসময় ডাকাত সদস্যরা দ্বীপের বনের মধ্যে লুকিয়ে যায়।
পরবর্তীতে কোস্টগার্ড স্টেশন টেকনাফ ও সেন্টমার্টিনের আভিযানিক দল দুটি যৌথভাবে দ্বীপটি চারদিক থেকে ডাকাত দলের মূল আস্তানা ঘেরাও করে ৬ জন সশস্ত্র ডাকাত সদস্যকে আটক করতে সক্ষম হয়।
ডাকাত সদস্যদের দেয়া তথ্যমতে খড়ের দ্বীপের বনের মধ্যে চিরুনি অভিযান পরিচালনা করে বিদেশি পিস্তল ২টি, একনলা বন্দুক ৩টি, এলজি ২টি, শর্টগান ১টি, দেশি পিস্তল ৬টি, ম্যাগাজিন ৪টি, তাজা গোলা ৪৫০ রাউন্ড, ফাঁকা গোলা ৩৬ রাউন্ড, রামদা ৪টি, ২০ হাজার পিস ইয়াবা, বিদেশি মদ ২১ বোতল, বিয়ার ৫৫১ ক্যান, ডাকাতি কাজে ব্যবহৃত পোশাক ৭ সেট , হ্যান্ডকাফ ১টি, ল্যান্ড ফোন ১টি, বাটন মোবাইল ৪টি জব্দ করা হয়।
তিনি আরও জানান, খড়ের দ্বীপটি টেকনাফ হতে দূরবর্তী বিচ্ছিন্ন এবং জনশূন্য হওয়ায় এই সুযোগটি কাজে লাগিয়ে একটি সংঘবদ্ধ চক্র দীর্ঘদিন ধরে ডাকাতি, মাদকদ্রব্য ও মানবপাচারসহ বিভিন্ন ধরনের অপকর্ম চালিয়ে আসছিল বলে কোস্ট গার্ডের কাছে গোয়েন্দা তথ্য ছিল।
সেই তথ্যের ভিত্তিতে দীর্ঘ ৯ ঘণ্টা শ্বাসরুদ্ধ অভিযান চালিয়ে বিপুল পরিমাণ গোলাবারুদ, অস্ত্র ও মাদকসহ ৬ জনকে আটক করতে সক্ষম হয় কোস্টগার্ড সদস্যরা।
আটকদের বিরুদ্ধে আইনানুগ ব্যবস্থা গ্রহণ প্রক্রিয়াধীন রয়েছে বলেও কোস্টগার্ডের ওই কর্মকর্তা জানান।