মানিকগঞ্জের ঘিওর উপজেলায় মুক্তিযুদ্ধের বিজয় মেলাকে কলঙ্কিত করে সার্কাসের নামে চলছে জমজমাট অশ্লীল নৃত্য। মেলায় সার্কাস ও পুতুল নাচের নামে প্যান্ডেলগুলোতে চলছে নৃত্য শিল্পীদের অশ্লীল নৃত্য প্রদর্শন। এতে করে উঠতি বয়সের ছাত্র ও যুবকরা হুমড়ি খেয়ে পড়ছে ওই সব প্যান্ডেলগুলোতে। চরম দুশ্চিন্তায় পড়েছেন ওই এলাকার অভিভাবক মহল। তবে প্রশাসনকে ম্যানেজ করেই এরকম অশ্লীল নৃত্য চালাচ্ছে বলে অভিযোগ স্থানীয় সচেতন মহলের।
জানা যায়, ১৫ ডিসেম্বর সন্ধ্যায় ঘিওরের তেরশ্রী কালী নারায়ণ হাই স্কুল মাঠে ১৬ দিনব্যাপী মুক্তিযুদ্ধের বিজয় মেলার শুভ উদ্বোধন করা হয়।মেলার উদ্বোধক জে.পি গ্রুপ ইন্টারন্যাশনালের চেয়ারম্যান আলী মুরতুজা পলাশ বক্তব্যে বলেছিলেন,নতুন প্রজন্ম যাতে মুক্তিযুদ্ধের ইতিহাস জানতে পারে ও মণেপ্রাণে মুক্তিযুদ্ধের চেতনাকে ধারণ করতে পারে সে উদ্দেশ্যেই এ মেলার আয়োজন করা হয়েছে। এ মেলার মাধ্যমে মুক্তিযুদ্ধের চেতনায় উজ্জীবিত হবে নতুন প্রজন্ম।
সরেজমিনে গত রবিবার রাত ৯ টার পর উপজেলার তেরশ্রী কালী নারায়ণ হাই স্কুল মাঠে বিজয় মেলায় গিয়ে দেখা যায়, সার্কাসের প্যান্ডেলে ১ঘন্টার জন্য ১২০ টাকা মূল্যে টিকিট কেটে যাদু বা সার্কাস না দেখিয়ে চলছে নৃত্য শিল্পীদের অশ্লীল নৃত্য প্রদর্শন। আর সব অশ্লীল নৃত্যে শিল্পীদের শরীরের স্পর্শকাতর স্থান দেখার প্রলোভনে টাকা ছিটিয়ে সর্বশান্ত হচ্ছেন উঠতি বয়সের ছাত্রসহ যুব সমাজ। তাদের অশ্লীল নৃত্য কেউ যাতে মোবাইলফোনে ভিডিও করতে না পারে সেজন্য কঠোর তদারকিতে রয়েছেন আয়োজক কমিটির লোকজন। কেউ ভিডিও করলে তাৎক্ষনিক কেড়ে নেওয়া হচ্ছে তার মোবাইল। অপর দিকে মধ্যরাত পর্যন্ত উচ্চশব্দে গান বাজার কারণে ওই এলাকার আশপাসের বিভিন্ন শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের শিক্ষার্থীসহ অভিভাবকদের মাঝে চরম ক্ষোভের সৃষ্টি হয়েছে।
নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক একাধিক অভিভাবক জানান,মহান মুক্তিযুদ্ধের বিজয় মেলা কে কলঙ্কিত করে সার্কাসের নামে যে অশ্লীল নৃত্য দেখানো হচ্ছে এতে করে আমাদের ছেলে মেয়েদের একটা ভুল ধারণা সৃষ্টি হচ্ছে। আর স্কুল কলেজর ছাত্রসহ যুব সমাজ এখানে হুমড়ি খেয়ে পড়ছে। এ ব্যপারে প্রশাসনের সুদৃষ্টি কামনা করছেন তারা।
ঘিওর মুক্তিযুদ্ধের বিজয় মেলার আয়োজক কমিটির সভাপতি সাবেক কমান্ডার বীর মুক্তিযোদ্ধা মো: আব্দুল আজিজ মিয়া বলেন, সার্কাস আমি বন্ধ করে দিয়েছিলাম। কিন্তু পুলিশকে টাকা দিয়ে ম্যানেজ করে আবার চালাচ্ছে। আমি মেলা আয়োজন কমিটির সভাপতি। সার্কাস আমার না সার্কাস পুলিশের।
ঘিওর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা মোঃ আমিনুর রহমান বলেন, বিষয়টি আমি অবগত ছিলাম না।বিজয় মেলায় যদি সার্কাসের নামে কোন অশালীনতা হয় অবশ্যই ব্যবস্থা নেয়া হবে।
অতিরিক্ত পুলিশ সুপার (শিবালয় সার্কেল) নুরজাহান লাবনী বলেন, সার্কাস আমারা গত কালকেও বন্ধ করে দিয়েছি। আর পুলিশ এর সাথে জড়িত না।