সিরাজগঞ্জের কামারখন্দে পুরো ফসলের মাঠ এখন হলুদের চাদরে ঢাকা। যেদিকে চোখ যায় চারিদিকে হলুদের সমারোহ। প্রকৃতিপ্রেমীরাও এই হলুদের সমারোহে প্রিয়জনদের সঙ্গে নিয়ে ছবি ফ্রেমবন্দি করে রাখছেন। প্রকৃতিপ্রেমীদের পাশাপাশি দেশের বিভিন্ন প্রান্ত থেকে আসা মৌ চাষিরা কামারখন্দ উপজেলার বিভিন্ন স্থান থেকে সরিষার ফুল থেকে মধু সংগ্রহে ব্যস্ত হয়ে পড়েছেন। উপজেলার রসুলপুর, চৌবাড়ি, গাড়াবাড়ী, দশসিকাসহ কয়েকটি গ্রামের সরিষার মাঠ ঘুরে দেখা গেছে, সরিষা খেতের পাশে শত শত মধু সংগ্রহের বাক্স বসিয়েছেন মৌ চাষিরা। ওই সব বাক্স থেকে অসংখ্য মৌমাছি উড়ে গিয়ে মধু সংগ্রহে ঘুরে বেড়াচ্ছে সরিষা ফুলের মাঠ। কিন্তু মধু সংগ্রহের পর দাম ও মান নিয়ে নানা বিড়ম্বনায় পড়তে হচ্ছে মৌ চাষিদের। সংগৃহীত মধু স্থানীয় বাজার অথবা অন্য কোথাও নিয়ে বিক্রি করতে গেলে সেই মধুতে ভেজাল আছে বলে মনে করেন ক্রেতারা। আর এতে করে মধু বিক্রি করতে চরম বিপাকে পড়তে হচ্ছে মৌ চাষিদের। গোপালগঞ্জ থেকে আসা মৌ চাষি ইয়াছিন, সিয়াম ও মারুফ জানান, ২০০৯ সাল থেকে আমরা প্রতি বছর কামারখন্দের বিভিন্ন জায়গায় মধু সংগ্রহ করতে আসি। এবছর আমাদের মধু সংগ্রহের চাহিদা প্রায় ৫০০ কেজি। আবহাওয়া অনুকূলে থাকলে চাহিদার তুলনায় বেশি মধু সংগ্রহ করতে পারবো। তারা আরও জানান, মধু সংগ্রহ করে বিড়ম্বনায় পড়তে হয় বিক্রির সময়। সংগৃহীত মধু বাজারে নিয়ে গেলে আমাদের মধু যে শতভাগ খাঁটি এই বিষয়টিই ক্রেতাদের বোঝাতে আমাদের অনেকটা বেগ পেতে হয়। তখন অনেক কম দামে মধু বিক্রি করতে হয়। এজন্য অবশ্য কিছু অসাধু ব্যবসায়ীই দায়ী। তবে আমরা খাঁটি মধু ক্রেতার হাতে তুলে দিয়ে বিশ্বাস ফিরিয়ে আনার চেষ্টা করছি। এসব মধু ভ্রাম্যমাণ এই খামারে ২৮০ থেকে ৩০০ টাকা কেজি দরে বিক্রি করছি এবং বাজারে নিয়ে ৩২০ টাকা থেকে ৩৫০ টাকা কেজি দরে বিক্রি করছি। উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা কৃষিবিদ জেরিন আহমেদ জানান, উপজেলায় এবছর ২হাজার ৬০৭ হেক্টর জমিতে সরিষা আবাদের লক্ষ্যমাত্রা নির্ধারণ করা হয়েছে। ইতিমধ্যে নির্ধারিত লক্ষ্যমাত্রার চেয়ে বেশি অর্জিত হয়েছে। কামারখন্দে যেসব মৌ চাষিরা সরিষা ফুল থেকে মধু সংগ্রহ করতে এসেছেন তাদের এ বিষয়ে উন্নত প্রশিক্ষণের পাশাপাশি ন্যায্য মূল্যে উৎপাদিত মধু বিক্রির লক্ষ্যে সঠিক বাজারজাতকরণে পরামর্শ ও সহযোগিতা করা হবে।