রচনামূলক প্রশ্নের পরিবর্তে সরকারি মাধ্যমিক বিদ্যালয়ে এবারে ভর্তি পরীক্ষা নেয়া হবে নৈর্ব্যক্তিক প্রশ্নে (এমসিকিউ)। রাজধানী ৪১টি বিদ্যালয়ে তিন ভাগে তিনটি পরীক্ষার পরিবর্তে নেয়া হবে নয়টি পরীক্ষা।
সময় কমিয়ে আয়োজন করা হবে এ ভর্তি পরীক্ষা। আর সফটওয়্যারের মাধ্যমে অনলাইনে এ পরীক্ষা নেয়া যেতে পারে।
ভর্তি পরীক্ষা সামনে রেখে সোমবার মাধ্যমিক ও উচ্চশিক্ষা অধিদফতর (মাউশি) থেকে এসব প্রস্তাব শিক্ষা মন্ত্রণালয়ে পাঠানো হয়েছে। সাধারণত ডিসেম্বরের প্রথম সপ্তাহে এসব বিদ্যালয়ে ভর্তির ফরম বিতরণ শুরু হয়।
আর পরীক্ষা নেয়া হয় ডিসেম্বরের শেষ সপ্তাহে। মাউশির মহাপরিচালক অধ্যাপক ড. এসএম গোলাম ফারুক বলেন, এসব স্কুলে ভর্তির নীতিমালা ইতঃপূর্বে জারি করা হয়েছে।
এখন করোনা পরিস্থিতি সামনে রেখে নতুন কিছু প্রস্তাব রাখা হয়েছে। এগুলোর মধ্যে মন্ত্রণালয় যা অনুমোদন করবে তা প্রয়োগ করা হবে।
করোনা পরিস্থিতিতে কোন পদ্ধতিতে ভর্তি পরীক্ষা নেয়া হবে সে বিষয়টি নির্ধারণ করতে ২৭ অক্টোবর মাউশির মহাপরিচালক অধ্যাপক সৈয়দ গোলাম ফারুকের সভাপতিত্বে রাজধানীর মাধ্যমিক বিদ্যালয়ের প্রধানদের নিয়ে এক ভার্চুয়াল সভা হয়।
সেখানে বেশ কিছু পরামর্শ উঠে আসে। তার ভিত্তিতে নতুন করে চারটি প্রস্তাব পাঠিয়েছে মাউশি। এতে দেখা গেছে, করোনা পরিস্থিতির মধ্যে পরীক্ষা আয়োজনে স্বাস্থ্যঝুঁকি থাকায় সেটিকে গুরুত্ব দিয়ে রাজধানীর সব মাধ্যমিক বিদ্যালয়গুলোকে তিনটি ক্লাস্টারে (ক, খ, গ) বিভক্ত করে প্রতিটিতে ৩ দিন করে মোট ৯টি পরীক্ষা নেয়ার প্রস্তাব করা হয়েছে।
কোভিড-১৯ পরিস্থিতিতে সশরীরে শিক্ষার্থীদের ভর্তি পরীক্ষা না নিয়ে সময় কমিয়ে এমসিকিউ পদ্ধতিতে পরীক্ষা নেয়া, সব শ্রেণিতে অনলাইনে ভর্তি পরীক্ষা, প্রথম শ্রেণিতে লটারির মাধ্যমে ভর্তি নেয়ার প্রস্তাব শিক্ষা মন্ত্রণালয়ে পাঠানো হয়েছে।
এদিকে অনলাইনে ভর্তি পরীক্ষা প্রস্তাব দেয়ায় সমালোচনা তৈরি হয়েছে। মন্ত্রণালয়ের দু’জন কর্মকর্তা বলেন, অনলাইনে বিশ্ববিদ্যালয়ে ভর্তি পরীক্ষার প্রস্তাব বিশেষজ্ঞ পর্যায়ের নাকচ হয়েছে কয়েকদিন আগে।
মাউশি থেকে এ ধরনের প্রস্তাব এরপরও পাঠানো রহস্যজনক। মূলত সফটওয়্যার বাণিজ্য করার জন্য এ ধরনের প্রস্তাব পাঠানো হতে পারে বলে ধারণা কর্মকর্তাদের।
ভর্তি নীতিমালা অনুযায়ী, সরকারি কর্মকর্তা-কর্মচারীর আন্তঃজেলা/উপজেলা বদলির কারণে নতুন কর্মস্থলের মাধ্যমিক ও উচ্চশিক্ষা উপপরিচালক অথবা যে জেলায় উপপরিচালক নেই সেখানে জেলা শিক্ষা কর্মকর্তার প্রত্যায়নক্রমে তাদের সন্তানের ভর্তির জন্য মোট আসনের ৫ শতাংশ অতিরিক্ত সংরক্ষিত থাকবে। এ ক্ষেত্রে আগে আবেদন করলে আগে ভর্তির সুযোগ পাবে। এটি কার্যকর করার প্রস্তাব করা হয়েছে।
মন্ত্রণালয় থেকে সর্বশেষ জারি করা সংশোধিত ভর্তি নীতিমালা অনুযায়ী, ২য় থেকে ৩য় শ্রেণির ভর্তির পরীক্ষায় বাংলা বিষয়ে ১৫, ইংরেজিতে ১৫ এবং গণিতে ২০ পূর্ণমান নম্বর নির্ধারণ করে এক ঘণ্টা এবং ৪র্থ থেকে ৮ম পূর্ণমান ১০০ নম্বরের মধ্যে বাংলায় ৩০, ইংরেজিতে ৩০ এবং গণিতে ৪০ নম্বর নির্ধারণ করা হয়েছে। তবে এমসিকিউ পদ্ধতিতে ভর্তি পরীক্ষা নেয়া হলে এ সময় কমিয়ে আনা হবে।
ভর্তি নীতিমালা-২০২০ অনুযায়ী, এবারও আগের মতো রাজধানীর ৪১টি সরকারি মাধ্যমিক বিদ্যালয়ে তিনটি ক্লাস্টারে শিক্ষার্থী ভর্তি করা হবে।
তবে আগে প্রতিটি ক্লাস্টারে একটি বিদ্যালয়ে আবেদন করার সুযোগ দেয়া হলেও এবার প্রতিটিতে পাঁচটি করে মোট ১৫টি বিদ্যালয়ে অনলাইনের মাধ্যমে ভর্তি আবেদন করার সুযোগ দেয়া হয়েছে।